ব্যারাকপুর , 19 মে : ব্যারাকপুরে বিরিয়ানির দোকানে গুলিকাণ্ডে প্রথম সাফল্য পেল পুলিশ (Barrackpore Shooting Incident)। ঘটনার তিনদিনের মাথায় গ্রেফতার করা হল অভিষেক ঝা নামে এক যুবককে । পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যারাকপুরের মোহনপুর থেকে আটক করা হয় ওই দুষ্কৃতীকে । এরপর তাকে দফায় দফায় জেরা করেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের অফিসাররা । পুলিশি জেরায় অসঙ্গতি মেলায় পর গ্রেফতার করা হয় অভিষেককে । প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত, ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে ওই দুষ্কৃতীর । তবে, তদন্তের স্বার্থে এবিষয়ে এখনও মুখ খোলেনি পুলিশ কর্তারা । তাঁদের আশা, শীঘ্রই বাকি সঙ্গীদেরও গ্রেফতার করা সম্ভব হবে ।
শুটারদের সন্ধান পেতে প্রথম থেকেই পুলিশের টিম বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ব্যারাকপুর, বারাসত, মধ্যমগ্রাম-সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছিল । সেই তল্লাশিতেই এই সাফল্য বলে দাবি পুলিশের । গুলিকাণ্ডের পর দুষ্কৃতীরা বাইকে চেপে ব্যারাকপুরের দিক থেকে বারাসতের দিকে পালায় বলে জানতে পেরেছিল তদন্তকারীরা । বিরিয়ানির দোকান এবং তার আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সেই বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল । সেই কারণে শুটারদের হদিস পেতে তল্লাশি অভিযানে কোনও খামতি রাখা হচ্ছিল না পুলিশের তরফ থেকে ।
আরও পড়ুন : ব্যারাকপুরে বিরিয়ানির দোকানে চলল গুলি, আহত 2
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন যে তিনজন বাইকে চেপে এসে বিরিয়ানির দোকান লক্ষ্য করে গুলি চালায় তাদের মধ্যে একজন অভিষেক । ঘটনায় বাকি যে দু'জন জড়িত তাদের মধ্যে রয়েছে অভিষেকের ভাই অনীশ ঝা । তৃতীয় ব্যক্তির নাম পরিচয় অবশ্য জানা সম্ভব হয়নি । ধৃতকে জেরা করে তার নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করছে তদন্তকারীরা । গুলিকাণ্ডের পরপরই হুমকি ফোন ও মোবাইলে অশ্লীল মেসেজ আসার কথা জানিয়েছিলেন বিরিয়ানির দোকানের মালিক বাপি দাস । এমনকি, হুমকি ফোন আসার আগে বাড়িতে হামলা এবং ভাঙচুরের অভিযোগও করা হয়েছিল ব্যবসায়ীর পরিবারের তরফে । সেই অভিযোগ পেয়ে ও ব্যবসায়ীর মোবাইলের সূত্র ধরে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল । তাই, হুমকি দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে বিরিয়ানির দোকানে গুলিকাণ্ডের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা । তবে, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, ব্যবসায়ীক কিংবা ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতার জেরেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে ।
আরও পড়ুন : চব্বিশ ঘণ্টা পরেও ব্যারাকপুরে বিরিয়ানির দোকানে গুলিকাণ্ডের কিনারা করতে পারল না পুলিশ
এই বিষয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা বলেন, "কী কারণে ওই বিরিয়ানির দোকানে গুলি চালানো হয়েছিল, কারা এরসঙ্গে জড়িত তা ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে । তবে, তদন্তের স্বার্থে এখনই তা আমরা প্রকাশ্যে আনছি না । একজনকে গ্রেফতার করে 12 দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে । তাকে জেরা করেই বাকিদের হদিস পাওয়ার চেষ্টা চলছে ৷" একের পর এক নতুন থানা গঠিত হওয়ার পরও ব্যারাকপুরে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য কেন ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না, সেই বিষয়ে পুলিশ কমিশনারকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর যুক্তি, "থানা বাড়লেও সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ কর্মীর অভাব রয়েছে । সেই অভাব মেটানোর চেষ্টা চলছে"। শীঘ্রই তা পূরণ হলে অপরাধ দমন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা ।