বারাসত, 17 মার্চ: পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালে পরিষেবার মান কার্যত তলানিতে এসে ঠেকেছে। যার জেরে দিনদিন রোগীর সংখ্যা কমছে হাসপাতালে। এমতাবস্থায় চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে হাসপাতাল সুপারের অপসারণ চেয়ে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক এবং পৌরসভার চেয়ারম্যান দু'জনেই। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে উত্তর 24 পরগনার বারাসতে। যদিও ঘটনাটি জেলার সদর শহর বারাসতের কোনও হাসপাতালের নয়! বারাসত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের অশোকনগর রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের। অর্থাৎ সরকারি হাসপাতালের (Hospital Treatment Controversy) ।
শুক্রবার এই হাসপাতালেরই পরিষেবার মানোন্নয়ন নিয়ে জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে যোগ দিতেই এদিন বারাসতে এসেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী এবং তৃণমূল পরিচালিত অশোকনগর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার। বৈঠকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল হাসপাতালের সুপার রামকৃষ্ণ হেমব্রমকেও। সেই বৈঠকেই হাসপাতালের পরিষেবার মান নিয়ে রীতিমতো তাঁকে কাঠগড়ায় তুলে সরব হন তৃণমূলের দুই জনপ্রতিনিধি। এমনকী, জেলাশাসকের সামনেই সুপারের অপসারণ চেয়ে বসেন বিধায়ক এবং পৌরসভার চেয়ারম্যান দু'জনেই। পরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে তার ব্যাখাও দেন তাঁরা। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক। এমনটাই দাবি অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী ও পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকারের।
সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল দশা অশোকনগর রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের। একদিকে পর্যাপ্ত চিকিৎসকের অভাব। অন্যদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি এবং সমন্বয়ের অভাব। এই দুয়ের জেরে বর্তমানে টালমাটাল অবস্থা এই হাসপাতালের। অভিযোগ, এর জেরে দিনদিন কমছে রোগীর সংখ্যা। এর অনুসন্ধানের চেষ্টাও করেন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি। তাতেই যাবতীয় দায় ঠেলে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে হাসপাতালের সুপার রামকৃষ্ণ হেমব্রমকে। যদিও, তাঁর দাবি পরিষেবা মিলছে সঠিকভাবেই।
আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালের শৌচালয়ে মিলল রোগীর ঝুলন্ত দেহ !
অন্যদিকে, পরিষেবার মানোন্নয়ন নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, "আমরা সবসময় চাই হাসপাতালের পরিষেবা সঠিকভাবে চলুক।মুখ্যমন্ত্রী নিজেও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ ও সতর্ক। অশোকনগরের মানুষের স্বার্থে এদিন আমরা সেই সমস্ত বিষয় জেলাশাসকের কাছে তুলে ধরেছি। উনি আশ্বস্ত করেছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার।" একই সুর শোনা গিয়েছে অশোকনগর পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা প্রবোধ সরকারের গলাতেও। তাঁর কথায়, হাসপাতাল সুপারের যে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা উচিত ছিল, তা তিনি সঠিকভাবে করতে পারছেন না।উনি যদি ওনার দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে উনি ছেড়ে দিন। পদে বসে থেকে তো কোনও লাভ নেই !"
যদিও,যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ এবং যার অপসারণের দাবিতে সরব হচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও পৌরসভার চেয়ারম্যান। সেই অশোকনগর রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের সুপার রামকৃষ্ণ হেমব্রম এই নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্যই করতে রাজি হননি সংবাদ মাধ্যমের সামনে।