ব্যারাকপুর, 14 জানুয়ারি: ফের দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য ব্যারাকপুরে ৷ 'তোলা' না পেয়ে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে চপার দিয়ে কুপিয়ে পালাল আততায়ীরা ৷ রক্তাক্ত অবস্থায় গৌরব রায় নামে ওই ব্যবসায়ীকে স্থানীয় জগদীশচন্দ্র বসু জেনারেল হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছে ৷ ঘটনার জেরে রবিবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ব্যারাকপুরের সদর বাজার এলাকায় ৷
সূত্রের খবর, দুষ্কৃতীদের হামলায় ব্যবসায়ীর মাথায় এবং পায়ে গুরুতর আঘাত লেগেছে ৷ তবে জখম হলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে ৷ খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামলেও এখনও অধরা দুষ্কৃতীরা ৷ তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে ৷
ব্যারাকপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার সদর বাজারে গৌরবের একটি ফার্নিচারের দোকান রয়েছে ৷ এছাড়াও ইদানিং তিনি প্রমোটিংয়ের ব্যবসা শুরু করেছিলেন ৷ এ দিন সকালে গৌরব তাঁর প্রোমোটিংয়ের কাজ দেখতে গিয়েছিলেন সদর বাজারের পাশে ৷ অভিযোগ সেই সময় এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী সোনু সাউ ও তাঁর দলবল সেখানে যায় টাকা চাইতে ৷ তা দিতে অস্বীকার করেন ওই ব্যবসায়ী ৷ এর পরেই শুরু হয়ে যায় দু'পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ৷
অভিযোগ, ধারাল অস্ত্র নিয়ে গৌরবের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সোনুর দলবল ৷ প্রথমে ব্যাপক মারধর করা হয় তাঁকে ৷ পরে ধারাল অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে ব্যবসায়ীর মাথায় আঘাত করে দুষ্কৃতীরা ৷ গৌরবকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর এক বন্ধুও ৷ রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন ওই ব্যবসায়ী ৷ এরপর চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হলে, বেগতিক বুঝে এলাকা থেকে চম্পট দেয় হামলাকারীরা ৷ ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায় ৷ খবর পেয়ে স্থানীয় থানার পুলিশ তড়িঘড়ি ব্যারাকপুরের জগদীশ চন্দ্র বসু জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছায় ৷ সেখানে গিয়ে আক্রান্ত ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা ৷ গোটা ঘটনাটির বিবরণ নেওয়া হয় ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৷
এই বিষয়ে আক্রান্ত ব্যবসায়ী গৌরর রায় অভিযোগ করেছেন, "গত দু-তিন দিন ধরে সোনু সাউ নামে এক দুষ্কৃতী ফোন করে অনবরত হুমকি দিচ্ছিল ৷ বলছিল টাকা দিতে হবে, নইলে প্রাণে মেরে দেবে ৷ রবিবার যখন সাইটে কাজ দেখতে ব্যস্ত ৷ তখন এসে ফের টাকা চাইতে শুরু করে ৷ দিতে অস্বীকার করায় সে শ্রমিকদের তাড়িয়ে দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় ৷ প্রতিবাদ করলে চপার এবং লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয় আমাকে ৷ খুনের উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিল সোনুর দলবল ৷ কপাল জোরে বেঁচে গিয়েছি ৷ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি, কখন কী হবে এই ভেবে ৷ তোলাবাজি করাই ওর কাজ ৷ তা না হলে কারণ ছাড়াই শুধু শুধু হামলা চালাতে যাবে কেন !"
নাতির আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে হাসপাতালের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন গৌরবের দাদু উদিত কুমার রায় ৷ তাঁর কথায়, "এই এলাকায় প্রায় 30 বছর ধরে কাউন্সিলর ছিলাম আমি ৷ আগে কখনও এই ধরণের ঘটনা দেখেনি ৷ এদিন তো ও(গৌরব) কপাল জোরে বেঁচে গিয়েছে ৷" তোলা না দেওয়াতেই এই ঘটনা বলে অভিযোগ করছেন তিনিও ৷ তবে, শুধু কি তোলা দিতে অস্বীকার করাতেই এই ঘটনা ? নাকি এর পিছনে ব্যবসা সংক্রান্ত পুরনো কোনও শত্রুতা লুকিয়ে রয়েছে ? তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ৷
আরও পড়ুন: