দেগঙ্গা, 26 নভেম্বর: ফের বোমা বিস্ফোরণ! এবার ঘটনাস্থল উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গা ৷ ফরাক্কার ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতেই এবার দেগঙ্গার দক্ষিণ কলসুর গ্রামে বোমাকে বল ভেবে খেলতে গিয়ে রক্তাক্ত হল 13 বছরের এক নাবালক। উড়ে গিয়েছে ওই নাবালকের হাতের আঙুল ৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার বাঁ-হাতের মাংসপেশিও। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই কিশোরকে উদ্ধার করে ভরতি করা হয়েছে দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনটি বোমা উদ্ধার করেছে। সেগুলো নিষ্ক্রিয় করতে বম্ব স্কোয়াডকে খবর দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল পার্টি অফিসের ঠিক পিছন থেকে এই বোমা উদ্ধার হওয়ায় রবিবার যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কলসুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে ৷ যদিও কে বা কারা কী উদ্দেশে বোমাগুলো শাসকদলের পার্টি অফিসের পিছনে মজুত করে রেখেছিল, তা খতিয়ে দেখছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে কলসুর পঞ্চায়েতের শেখের মোড় এলাকার তৃণমূল পার্টি অফিসের পিছনে থাকা আমবাগানে বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল 13 বছরের ওই নাবালক। খেলার মাঝেই আমবাগানের পাশে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে সে। কৌতূহলবশত সেদিকে এগিয়ে গিয়ে ব্যাগের ভিতর গোলাকার বস্তু দেখে সেগুলোকে বল ভেবে খেলতে গেলেই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়ে এলাকাবাসী তড়িঘড়ি এসে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে রয়েছে ওই কিশোর। এরপরই তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে। এদিকে, বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
এ বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সাহাবুল সর্দার বলেন," এটা বিরোধীদের চক্রান্ত। পুলিশকে বলা হয়েছে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।" বিষয়টি নিয়ে আইএসএফ-এর জেলা সম্পাদক মহম্মদ কুতুবউদ্দিন বলেন, "বোমা-গুলির রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না আইএসএফ। তৃণমূল পার্টি অফিসের পিছন থেকে বোমা উদ্ধার হচ্ছে, নিশ্চয় এর মধ্যে কোনও রহস্য রয়েছে।"
চলতি বছরের 5 জুলাই দেগঙ্গার সোহাই শ্বেতপুর অঞ্চলে বোমা বিস্ফোরণে বছর সতেরোর এক নাবালকের মৃত্যু হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, বাবার সঙ্গে তৃণমূলের রাজনৈতিক সভায় যোগ দেওয়ার পর বাড়ি ফেরার পথে ওই কিশোরকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। সেই বোমার আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই নাবালকের। তারপরও দেগঙ্গার বোমাবাজি কিংবা বোমা উদ্ধারের ঘটনা এতটুকু কমেনি। দিনদিন তা বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ।সম্প্রতি ফরাক্কায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে খিচুড়ি আনতে যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে বল ভেবে বোমা তুলতে গিয়ে বিস্ফোরণে এক শিশু-সহ দুই নাবালক গুরুতর জখম হয়। দু'দিন আগের সেই ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। তারইমধ্যে দেগঙ্গার দক্ষিণ কলসুর গ্রামে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল।
আরও পড়ুন: