বসিরহাট, 4 জুন : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যশ পরবর্তী পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে বসিরহাটে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র । শুক্রবার দুপুরে বসিরহাট মহকুমা শাসকের দফতরে চলে এই প্রশাসনিক বৈঠক । বৈঠকে হাজির ছিলেন উত্তর 24 পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ও বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী, বসিরহাটের এসডিও মৌসম মুখোপাধ্যায়সহ ব্লক স্তরের আধিকারিকরা ।
যশের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধ মেরামতের কাজ কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, বাঁধ মেরামতের কাজ কতদূর এগিয়েছে তা এদিনের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে প্রশাসন সূত্রে খবর । বৈঠকে মন্ত্রী সুন্দরবনকে রক্ষা করতে ম্যানগ্রোভ লাগানোর উপর জোর দিতে বলেন প্রশাসনের আধিকারিকদের । বৈঠক শেষে নদীপথে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধও সরেজমিনে চাক্ষুষ করেন সেচমন্ত্রী ।
যশ ও ভরা কোটালে বিপর্যস্ত সুন্দরবন অঞ্চল । প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বসিরহাট মহকুমার প্রায় সবকটি কাচাঁ নদীবাঁধই ভেঙে গিয়েছে । জলে ভাসিয়েছে একের পর এক গ্রাম । ক্ষতি হয়েছে কৃষিজমি এবং বিঘার পর বিঘা মাছের ভেড়ি । ঘরবাড়ি হারিয়েছে শতাধিক পরিবার । সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবন লাগোয়া সন্দেশখালি 1 ও 2, হিঙ্গলগঞ্জ এবং মিনাখাঁ ব্লক । প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট মহকুমায় সবমিলিয়ে 276 কিলোমিটার নদীবাঁধ রয়েছে । এর বেশিরভাগই পরে সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জের মধ্যে । ঘূর্ণিঝড় আয়লার পর মাত্র 153 কিলোমিটার কংক্রিটের পাকা বাঁধ হয়েছে । বাকি 130 কিলোমিটার নদীবাঁধ এখনও কাঁচা রয়েছে । তার মধ্যে যশের তাণ্ডবে 40 থেকে 45 কিলোমিটার নদীবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ।
ক্ষতিগ্রস্ত নদীবাঁধ দ্রুত মেরামত করতে ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন । 28 মে হিঙ্গলগঞ্জ সফরে এসে এই নিয়ে জেলা প্রশাসনকে তৎপর হতে বলেছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান । সেই সঙ্গে ত্রাণ নিয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । এরপরই ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধ মেরামতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন ।
বৈঠক শেষে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, "ঘূর্ণিঝড় যশ চোখ খুলে দিয়েছে আমাদের । আগামী 12 ও 26 জুন পরপর দু‘টি ভরা কোটাল আছে । ফলে বিপদ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে । মানুষের যাতে কোনওরকম অসুবিধার মুখে না পড়তে হয় তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।"
আরও পড়ুন : ত্রাণ নয়, কংক্রিটের নদী বাঁধের দাবিতে বিক্ষোভ সুন্দরবনবাসীর
তিনি আরও বলেন, "এখনও পর্যন্ত যতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শন করেছি প্রায় সমস্ত জায়গাতেই কংক্রিটের বাঁধের দাবি তুলেছেন মানুষ । মুখ্যমন্ত্রী নিজেও এব্যাপারে স্থায়ী সমাধান চাইছেন । আজকের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে । সমস্ত দফতরকে একসঙ্গে কাজ করতে বলা হয়েছে ।"