দেগঙ্গা, 28 ডিসেম্বর: মাস কয়েক পর শুরু হবে লোকসভা নির্বাচন ৷ তার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কড়াবার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ স্পষ্টভাষায় তিনি বললেন, ‘‘আমি কোনও ঝগড়া বরদাস্ত করব না ৷’’ বৃহস্পতিবার উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মিসভা হয় ৷ সেখান থেকেই তিনি এই বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন ভাষণের শুরুতে তৃণমূল কংগ্রেস তৈরিতে উত্তর 24 পরগনার মানুষের অবদানের কথা তুলে ধরেন ৷ সেই প্রসঙ্গ তুলেই তিনি উত্তর 24 পরগনাকে তৃণমূলের ‘হৃদয়’ বলে উল্লেখ করেন ৷ সেই কথা বলতে বলতেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ তোলেন তৃণমূল নেত্রী ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘...যদি কেউ এখনও দুঃখ করে ঘরে বসে থাকেন লোকাল ঝগড়ার জন্য, তাঁকে ডেকে নিয়ে আসুন ৷ আমি কোনও ঝগড়া বরদাস্ত করব না ৷ আমাকে 365 দিন কাজ করে যেতে হয় মানুষের জন্য ৷ আর কেউ যদি স্থানীয়স্তরে ভাবেন আমি বড় নেতা হয়ে গিয়েছি, দলকে ভালো না বেসে নিজেকে ভালোবাসব, সেটা হবে না ৷ সেটা করা যাবে না তৃণমূলে ৷’’
এর পর তাঁর সংযোজন, ‘‘তৃণমূলের কাজ হচ্ছে নিজেকে সেবা করা নয়, মানুষের সেবা করা ৷ তৃণমূল কংগ্রেস পরিবার হচ্ছে মানুষের পরিবার ৷ এটা মাথায় রাখতে হবে ৷ আমি বড়, তাই আর একজনকে পাত্তা দিলাম না, এটা সংগঠনের কাজ নয় ৷ মনে রাখবেন, ছোটবড় কেউ নিজে ঠিক করে না ৷’’ এর পর তিনি দলের নেতা-মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে আরও বেশি করে জনসংযোগ করার বার্তা দেন ৷ মমতা বলেন, ‘‘মানুষের সঙ্গে যে যত মিশবে, মানুষের প্রতি যার সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা থাকবে ৷ মানুষের দুর্দিনে যারা পাশে থাকবে... ৷’’ এখানে তিনি দুয়ারে সরকারের প্রসঙ্গ টানেন ৷ জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকার সাফল্যের সঙ্গে দুয়ারে সরকার আয়োজন করছে ৷
এর পর তিনি মনে করিয়ে দেন যে এখানেই থেমে গেলে চলবে না ৷ একেবারে গ্রাম পঞ্চায়েতস্তর পর্যন্ত মানুষের কাছে গিয়ে প্রয়োজনীয় সমস্যা সমাধানের কাজ করতে হবে ৷ এর পর তিনি রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের এলাকায় এলাকায় গিয়ে সমস্যার কথা শোনার পরামর্শও দেন ৷ মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, ‘‘মন্ত্রীরা যারা আছেন এলাকায় ঘুরুন ৷ মানুষের সঙ্গে ঘুরুন ৷ দরকার হলে চায়ের দোকানে বসে আড্ডা মারুন ৷ দরকার হলে হঠাৎ করে একটা গ্রামে চলে যান ৷ মানুষের কী সমস্যা দেখুন ৷’’
এ দিন ওই কর্মিসভা প্রায় আধঘণ্টা ভাষণ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই ভাষণে তিনি বিজেপি ও কেন্দ্রের মোদি সরকারকে আক্রমণ করেন ৷ ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে হেনস্তার অভিযোগও তিনি করেছেন ৷ তবে তার মধ্যেই বারবার দলের অন্দরের কোন্দল থামানোর বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী ৷ কখনও তিনি বলেছেন, ‘‘সিনিয়র লিডারদের যোগ্য সম্মান দিতে হবে ৷’’ আবার কখনও তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে, ’‘নতুনকেও দরকার, পুরনোকেও দরকার ৷’’
আরও পড়ুন: