কামারহাটি, 20 মার্চ: বাংলার শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করায় আড়িয়াদহের বেসরকারি স্কুলের গেটের বাইরে সোমবার প্রতিবাদ জানাল বাংলাপক্ষ ৷ আর ঘটনার প্রতিবাদ জানানোয় এবার ওই সংগঠনকে হুঁশিয়ারি দিলেন মদন মিত্র (Madan Mitra) ৷ বাংলাপক্ষের আন্দোলন সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন এদিন তিনি ৷
আড়িয়াদহের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বাংলা শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। বরখাস্ত করার চিঠিতে লেখা হয় বাংলা ভাষা অপ্রয়োজনীয় এবং স্কুলে বাংলা পড়ার ছাত্র না থাকায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে । বরখাস্ত হওয়া শিক্ষিকার নাম দেবস্মিতা । এরপর ওই শিক্ষিকা এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন । তারপর স্কুলের পক্ষ থেকে নিঃশর্তে ওই ভাষা ব্যবহার করার জন্য ক্ষমা চাওয়া হয়। এদিন এই ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাপক্ষ স্কুলের গেটে বিক্ষোভ দেখায় । তাদের দাবি, অবিলম্বে ওই স্কুলে বাংলা পড়ানোর ব্যবস্থা করা হোক । তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত স্কুলে যেন বাংলা পড়ানো হয় ।
অপরদিকে এলাকার বিধায়ক মদন মিত্র উলটে বাংলাপক্ষের লোকদের হুঁশিয়ারি দেন ৷ তিনি মন্তব্য করেন, যদি তারা আন্দোলন থেকে সরে না-দাঁড়ান ৷ তাহলে রাস্তায় তৃণমূলের তরফ থেকে লোকজন নেমে বাংলাপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবে । এরপর স্থানীয় কিছু যুবক ও মহিলা এসে বাংলাপক্ষের সদস্যদের অশালীন ভাষায় গালাগালি করে এলাকা থেকে বের করে দেয় বলে অভিযোগ।
মদন মিত্র বলেন, "বাংলাপক্ষের আন্দোলন সঠিক নয় ৷ পশ্চিমবঙ্গে অনেক স্কুল রয়েছে যেখানে বাংলা পড়ানো হয় না ৷ তারা সেখানে গিয়ে আন্দোলন করুক । তাদের ক্ষমতা নেই সেসব স্কুলে গিয়ে আন্দোলন করার ৷ তাই তারা এখানে এসেছেন আন্দোলন করতে ।" তাঁর কথায়, স্কুল কর্তৃপক্ষ ভুল করে একটি চিঠি লিখেছেন এবং তার জন্য তারা ক্ষমাও চেয়েছেন । ওই স্কুলে বাংলা ভাষাভাষী ছাত্র নেই । অধিকাংশই হিন্দি ভাষাভাষীর ছাত্র ৷ সেখানে বাংলা শিক্ষিকার প্রয়োজন নেই । তার জন্যই কর্তৃপক্ষ শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করেছেন ।
মদনের দাবি, স্কুল কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই ওই শিক্ষিকাকে আবার তাঁর কাজে পূনর্বহাল করেছেন । তবে মদনের এই হুঁশিয়ারি নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে । বাংলা ভাষা নিয়ে এরাজ্যে যেভাবে মানুষ বিভিন্নভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, সেখানে একজন বিধায়ক হিসাবে বিপক্ষে গিয়ে বাংলা ভাষাকে নিয়ে যারা আন্দোলন করছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবার কথা বলছেন তিনি । আর তাতেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি ৷
আরও পড়ুন: বাংলা পড়ুয়া কম, তাই আসতে মানা শিক্ষিকাকে, স্কুলের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে বিতর্ক