বারাসত, 29 মাার্চ : লকডাউন দেশে । কোরোনা সংক্রমণ আটকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য রাজ্যের একাধিক জেলায় সরানো হয়েছে বাজার । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বন্ধ করতে হয়েছে বাজার । বদলে চালু হয়েছে হোম ডেলিভারি । এত সচেতনতার বার্তা প্রচার করা হলেও কী সচেতন হচ্ছে মানুষ ? বোধহয় না । বারাসত চাঁপাডালি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাজারের চিত্রটা আজ তেমনই বুঝিয়ে দিল ।
কথায় আছে মাছে ভাতে বাঙালি । রবিবার বাজার থেকে কাতলা বা চিংড়ি তুলে না আনলে বাজারটা ঠিক জমে না । তার উপর বাজারে গিয়ে একটু চা খাওয়া, রবিবাসরীয় আলোচনা, সেটা বাকি থাকলে রবিবারটা ছুটির দিনই মনে হয় না । কিন্তু এই ক'দিন বাইরে বেরলেই যে কোরোনার থাবা । মাইকে বলছে ভিড় এড়িয়ে যেতে । সে সবের ? থোরাই কেয়ার । রবিবার মাছের বাজারে পৌঁছে গেলেন কয়েকশো জন । দেদার গায়ে ঘেঁষাঘেষি করেই চলল দরদাম ।
পোস্টে বাজছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সতর্কতামূলক বার্তা । তার তলাতেই বসেছে মাছের বাজার । অবিরাম সেই বার্তা বেজে গেলেও বিন্দুমাত্র সতর্কতা লক্ষ্য করা যায়নি আমজনতার মধ্যে । সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, ভিড়ে ঠাসা ওই মাছের বাজারে আসা বেশিরভাগ মানুষেরই মুখে ছিল না মাস্ক । এই চিত্র দেখার পর অনেকেই বলছেন, নিজে সচেতন না হলে কোরোনাকে আটকানো সম্ভব নয় ।
এ বিষয়ে মৎস্য আড়তদার সমিতির সম্পাদক সুশান্ত চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিভিন্ন বাজারে মাছের আকালকেই এর পিছনে দায়ি করেন ।বলেন, "লকডাউনের কারনে গত তিনদিন আমরা মাছের আড়ত বন্ধ রেখেছিলাম । কিন্তু তারপরও কলকাতা ও বারাসতের বিভিন্ন বাজার খোলা থাকায় আমরা মাছের আড়ত খুলতে বাধ্য হয়েছি । তাছাড়া বারাসতের বিভিন্ন ছোটো-বড় মাছের বাজারগুলিতে মাছের আকাল দেখা দিয়েছিল । অনেকেই মাছের আড়ত খোলা হোক সেটা চাইছিলেন ।" আর কোরোনা ঠেকাতে নিয়ম? ভিড়ের কথা মেনে নিয়ে সুশান্তবাবুর সাফাই, "ভিড় এড়ানোর জন্য মাইকে ক্যাসেট বাজিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কোরোনা সতর্কতামূলক প্রচার করা হয়েছে । সকাল সাতটার মধ্যেই আমরা মাছের আড়ত বন্ধ করে দিয়েছি ।"
এহেন সাফাই হোক বা প্রচার, দিল্লির আনন্দবিহার থেকে বারসতের এমন বাজার, প্রশ্ন তুলছে তৃতীয় স্টেজে পা দিয়ে এমন অসচেতনাই আমাদের প্রিয়জনদের মৃত্যুর কারণ হবে না তো?