বারাসত, 30 জুলাই : সাবওয়ে চালু হয়েছে মাত্র 13 দিন আগে । তার মধ্যেই একপশলা বৃষ্টিতে ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়তে শুরু করেছে জল । অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি হয়েছে এই সাবওয়ে ৷ তাই এই অবস্থা ৷ এরপর আরও বৃষ্টি বাড়লে কী হবে ? তা নিয়ে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা ৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করছে রেল কর্তৃপক্ষ ৷ তারা জানিয়েছে, কিছু সমস্যা থাকতে পারে ৷ দ্রুত ঠিক করে দেওয়া হবে ৷
দীর্ঘদিন ধরেই বারাসত 12 নম্বর রেলগেটের উপর সাবওয়ে তৈরির জন্য দাবি করে আসছিলেন এলাকার বাসিন্দারা ৷ চালু হওয়ার আগে সাবওয়ের শিলান্যাসও হয়েছিল দু-দু'বার । একবার রেলের তরফে । আর একবার সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এর উদ্বোধন করেন ৷ ঘটা করে পৃথক শিলান্যাস হলেও সাবওয়ে তৈরি হয়নি । ফলে, একপ্রকার প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই লাইন পার হতে হত এলাকাবাসীকে । তা ছাড়া, সাবওয়ে তৈরিতে রেলের বড় সমস্যা ছিল অবৈধ দখলদারদের হটানো । বেশ কয়েকবার চেষ্টাও করা হয়েছিল । কিন্তু, তা বাস্তবায়িত হয়নি । এরপর, নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে রেলের তরফে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, 12 নম্বর রেলগেটের কাছে রেলের দখল করা জমি থেকে সরে যেতে হবে দোকানদারদের । এজন্য,বারাসত পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতাও চাওয়া হয় । মাস পাঁচেক আগে রেল, পৌরসভা ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা মিলিতভাবে পরিদর্শন করে অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে বলে । সেইমতো সরে যেতে বাধ্য হয় অবৈধ দখলদাররা । শেষে বহু টালবাহানার পর সাবওয়ের ছাড়পত্র মেলে রেলের তরফে ৷ ঠিক হয়, রেলের ট্রাক সরিয়ে কাজ শুরু করা হবে । সেইমতো মাস চারেক আগে প্রায় ২৪ ঘণ্টা বারাসত থেকে মধ্যমগ্রাম পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে সাবওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হয় । বাকি কাজ শেষ হতে সময় লাগে প্রায় এক মাস । 16 জুলাই খুলে দেওয়া হয় ওই সাবওয়ে । আর 13 দিনের মধ্যে সাবওয়ে থেকে চুঁইয়ে পড়ছে জল ৷ সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সাবওয়ের একদিকের অ্যাপ্রোচ রোডের । একদিকে, টাইলস দিয়ে পাকা করা হলেও অন্যদিকে তা করা হয়নি ৷ ফলে, বৃষ্টির জল ও কাদা মাড়িয়েই সাবওয়ের ভিতরে ঢুকছেন নিত্য যাত্রীরা ৷
এই বিষয়ে রাজীব দাস নামে এক যাত্রী বলেন, "কয়েকদিন হল এই সাবওয়েটা উদ্বোধন করা হয়েছে ৷ এই তো বৃষ্টি হয়েছে ৷ দেখি চুঁইয়ে চুঁইয়ে জল পড়ছে ৷ যখন তখন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে ৷ এটা রেল কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত ৷ যদি ভালো মানের জিনিস দিয়ে তৈরি হত ,তাহলে এই অবস্থা হত না ৷ নতুন তৈরি হয়েছে আর তারমধ্যেই ফাটল ধরা পড়ল৷"
এবিষয়ে স্টেশন মাস্টার পঙ্কজ বিশ্বাস বলেন, "এই বিষয়ে বলত পারব না ৷ এটা হায়ার অথোরিটি জানেন এবং যাঁরা কাজ করেছেন তাঁরা জানেন ৷ কিছু কাজ বাকি আছে, দু-এক দিনের মধ্যে হয়ে যাবে ৷ লিকেজের সমস্যা কি হতে পারে না ? তবে গাফিলতি বা খামতি নয় ৷ হয়তো কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে, তবে তা ঠিক হয়ে যাবে ৷" এরপর আর কিছু বলতে চাননি তিনি ৷ বলেন, "এরপর যা জিজ্ঞাসা করার তা আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে করুন ৷ আমি এর বেশি কিছু বলতে পারব না৷"
অন্যদিকে, পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, "বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে ৷"