বনগাঁ, 8 অগস্ট : শনিবার সন্ধ্যায় হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইমেল মারফত জেলা সভাপতির কাছে বনগাঁ বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি খালেক বিশ্বাস পদত্যাগ পাঠান ৷ সাংগঠনিক পদে থাকলেও তাঁকে দলের কোনও কাজে লাগানো হচ্ছে না অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেন তিনি। যা নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
রাজ্যের সর্বত্র বিজেপির ফল খারাপ হলেও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টিতে জয় লাভ করেছে বিজেপি। বেড়েছে সংখ্যালঘু ভোটও ৷ ভোটের আগে খালেক বিশ্বাসকে সংখ্যালঘু মোর্চার সম্পাদক করে জেলা বিজেপি। সংখ্যালঘু ভোট বাড়ার ক্ষেত্রে খালেকের অনেকটাই অবদান রয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
2019 সালে তৃণমূল কংগ্রেসের ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন খালেক বিশ্বাস। পরবর্তীতে 2021 সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি করা হয়।
সাম্প্রতিক বিজেপির কাজে ক্ষুব্দ হয়ে সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সভাপতি পদ থেকে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন। এবং বিজেপি ছাড়ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি । পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরে খালেক বলেন, "নরেন্দ্র মোদির সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, বক্তব্য শুনে অনেক আশা নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলাম। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে আমাকে সংখ্যালঘু মোর্চার সম্পাদক করা হল, দলের কোনও কাজে লাগানো হয়নি। তারপরও দলের হয়ে ভোটে খেটেছি। যার ফলে এখানে বিজেপির 50 হাজারের উপরে সংখ্যালঘু ভোট পেয়েছে।"
আরও পড়ুন : পাঁচ বিধানসভায় কেন খারাপ ফল ? খুঁজে বের করতে 11 জনের কমিটি গঠনের নির্দেশ জ্যোতিপ্রিয়র
"আমি মনে করি সংখ্যালঘুরা এই বিরাট অঙ্কের ভোট না দিলে এখানে বিজেপি জয়ী হতে পারত না। এখন পার্টির যে চিন্তা ধারা তাতে আমি খুব একটা খুশি নই। তার জন্য সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং পদত্যাগ করেছি।"
অন্য কোনও দলে যোগ দিচ্ছেন কি না এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, "আমরা রাজনৈতিক লোক। রাজনীতি হয়ত বা করব। কোনও সম্মানীয় জায়গা পেলে ভেবে দেখব। এখনও কিছু ভাবিনি।"
এ বিষয়ে বিজেপি-র বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মনস্পতি দেব বলেন, "উনি পদত্যাগ করেছে বলে আমার জানা নেই। আমার কাছে অফিশিয়ালি কোনও পদত্যাগপত্র আসেনি। যদি আসে তখন আমরা সাংগঠনিকভাবে বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখব।"
পদত্যাগ প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ বলেন, "এটা নতুন কিছু নয়। রাজ্য জুড়ে বিজেপিতে আর কেউ থাকতে চাইছে না। কিছু লোক নিজেদের স্বার্থে বিজেপিতে গিয়েছিল। বিজেপি যে আর এরাজ্যে ক্ষমতায় আসবে না সেটা তারা বুঝে গিয়েছে। সেই কারণে তারা বিভিন্ন ভাবে বোঝাতে চাইছে আমরা আর নেই। আমাদের ধারণা আগামী দিনে বিজেপিতে আর কেউ থাকবে না।"
আরও পড়ুন : প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মাফিক বাংলাদেশকে অ্য়াম্বুল্যান্স উপহার ভারতের
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের পরে দলের কাজে ক্ষুব্ধ হয়ে দল ত্যাগ করেছিলেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক তপন সিনহা। পরবর্তীতে তিনি তৃণমূলে ফিরে যান। খালেক ও আগামী দিনে সেই পথে হাঁটতে পারেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের ৷