ঠাকুরনগর , 12 ডিসেম্বর : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের 72 ঘণ্টার মধ্যে মতুয়া গড়ে হাজির বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় । বুধবার বনগাঁর গোপালনগরের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, "আমার রাজ্যের সব মতুয়া দেশের নাগরিক।" এবার মতুয়া পীঠস্থান ঠাকুরবাড়িতে পা রেখে কৈলাসও বার্তা দিলেন , বিজেপিই তাঁদের পাশে । ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে মতুয়া ভোটকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপি দুই পক্ষই ময়দানে নেমে পড়েছে ।
গত এক দশক ধরে মতুয়া ভোটের একচ্ছত্র দখল রেখেছে তৃণমূল । বিনিময়ে মতুয়া বাড়ি থেকে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর ও তাঁর স্ত্রী মমতাবালাকে লোকসভাতেও পাঠিয়েছেন মমতা । বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের আর এক ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণকেও রাজ্যের মন্ত্রী করেছিলেন । তিনি অবশ্য পরে পদত্যাগ করেন । 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে ঠাকুর পরিবারের সদস্য শান্তনুকে প্রার্থী করে বিজেপি মাস্টারস্ট্রোক দেয় । শান্তনু জেঠিমা মমতাবালাকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন । হারানো মতুয়া ভোট কোলে টানতে গত বুধবার গোপালনগরে সভা করেন মমতা । মতুয়াদের জন্য একগুচ্ছ ঘোষণা করেন । ঢালাও আশ্বাসও দেন । সভার মঞ্চে অতিথি ও নেতারা সবাই গলায় গামছা পরে মতুয়া সাজে সেজেছিলেন । মমতা সেদিন ওই মঞ্চে ঘোষণা করেন , "মতুয়ারা সবাই নাগরিক । কেউ নতুন করে আবেদন করবেন না । আমি আপনাদের নাগরিকত্ব দিলাম ।"
আরও পড়ুন , মতুয়ারা দেশের নাগরিক , তাদের আলাদা সার্টিফিকেটের দরকার নেই : মমতা
মমতা ফিরে যাওয়ার 72 ঘণ্টার মধ্যে ঠাকুরবাড়িতে যান বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় । শান্তনুর সঙ্গে বৈঠকও করেন । রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মতুয়া ভোটের দখল অব্যাহত রাখতেই মমতার সফরের তিন দিনের মধ্যে কৈলাস ঠাকুরবাড়িতে ঢুঁ মারলেন । যদিও অন্য অংশের মতে, নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে সম্প্রতি শান্তনু বেসুরো কথা বলেছেন । আর তাতে হাওয়া দিতে তৃণমূল নেতা তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শান্তনুকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন । তাই, শান্তনুর মান ভাঙাতেই কৈলাস ঠাকুরবাড়িতে ছুটেছেন । যদিও কৈলাস ঠাকুরবাড়িতে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের বলেছেন, কোনও রাজনৈতিক কারণে নয় । শান্তনুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন ।