বারাসত, 16 সেপ্টেম্বর : রায় ঘোষণার আগেই "জাস্টিস ফর রজত" পোস্টারে ছেয়ে গেল বারাসত আদালত চত্বর । আদালতে প্রবেশের মূল গেট থেকে শুরু করে আইনজীবীদের সেরেস্তার দেওয়াল ছেয়ে গিয়েছে পোস্টারে । এছাড়া আদালত চত্বরে একটি সামাজিক সংগঠনের তরফে রজত খুনে দোষী অনিন্দিতা পাল(দে)-এর ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয় । চলে প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগানও । আন্দোলনকারীরা অনিন্দিতার সর্বোচ্চ সাজা চান ।
আইনজীবী রজত দে খুনে সোমবারই তাঁর আইনজীবী স্ত্রী অনিন্দিতা পাল(দে)-কে দোষী সাব্যস্ত করা হয় বারাসত আদালতে । আজ আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক থার্ড কোর্টের বিচারক সুজিত কুমার ঝা এই মামলায় সাজা ঘোষণা করবেন । তার আগেই পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভে উত্তাল হল আদালত চত্বর ।
2018 সালের 25 নভেম্বর নিউটাউনের DB ব্লকের ফ্ল্যাট থেকে নিথর দেহ উদ্ধার হয় কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী রজত দে-র । প্রথম থেকেই এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বাঁধে মৃতের পরিবার ও আইনজীবী বন্ধুদের মধ্যে । তাঁরা খুনের অভিযোগে সরব হন । যদিও দেহ উদ্ধারের পর রজতের আইনজীবী স্ত্রী দাবি করেন, এটি আত্মহত্যার ঘটনা । এরপর মৃতের বাবা সমীর দে-র অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অনিন্দিতাকে গ্রেপ্তার করে । পুলিশি জেরায় শেষ পর্যন্ত খুনের কথা কবুল করে সে ।
তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃত অনিন্দিতার হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল সার্চ করে বিয়ে নিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে আসে পুলিশের । তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পারেন, রজতের সঙ্গে দাম্পত্য কলহ চলছিল অনিন্দিতার । বিয়েতে অখুশি ছিল সে। রজতের কাছ থেকে ডিভোর্স চাইছিল অনিন্দিতা। কিন্তু ছেলের কথা ভেবে তাতে রাজি ছিলেন না রজত । বিয়ের বিষয়ে নিজের হোয়াটসঅ্যাপে বেশকিছু মন্তব্যও করেছিল অনিন্দিতা । সেসব তথ্য এই খুনের মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে জানা গেছে আদালত সূত্রে ।
এছাড়া ইলেকট্রনিক্স এভিডেন্স, পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণও গুরুত্বপূর্ণ দিক এই মামলার ক্ষেত্রে । এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উপর ভিত্তি করেই অনিন্দিতাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে বারাসত আদালত। গ্রেপ্তার হওয়ার একবছর নয় মাস ষোলো দিনের মাথায় খুনের মামলায় সাজা ঘোষণা হতে চলেছে। এখন কী সাজা হয় সেদিকেই তাকিয়ে সকলে ।