বারাসত, 1 নভেম্বর : রাজ্যপালের কাজ ঘুরে ঘুরে সাংবাদিক সম্মেলন করা নয় । রাজনীতির অংশীদার না হয়ে সাংবিধানিক গণ্ডির মধ্যে কাজ করা উচিত রাজ্যপালের । রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন বাম পরিষদীয় দলনেতা তথা CPI(M) বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী ।
আজ সকালে বারাসতের নবপল্লিতে দলীয় এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে গেছিলেন সুজনবাবু । সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন," রাজ্যপালের কোনও কথা থাকলে তিনি দিল্লিকে জানাবেন । ঘনঘন সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘুরে বেড়ানো তাঁর কাজ নয় । রাজ্যপালের উচিত সরাসরি রাজনীতির অংশীদার না হওয়া । সাংবিধানিক সীমার মধ্যে কাজ করা উচিত রাজ্যপালের । কখনও কখনও তিনি সেই সীমা লঙ্ঘন করছেন ।" এই প্রসঙ্গে রাজ্যের শাসকদলকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি বাম পরিষদীয় নেতা । তাঁর কথায়, "একসময় এই তৃণমূলই যখন বিরোধী দলে ছিল, তখন তাঁদের ধরনা মঞ্চে হাজির করেছিল তৎকালীন রাজ্যপালকে । তারা চায় রাজ্যপাল রাজনীতির অংশীদার হোক । ফলে, যারা বিরোধী দলে থাকাকালীন দলীয় কর্মী হিসেবে তৎকালীন রাজ্যপালকে ধরনা মঞ্চে নিয়ে আসে, তারা কোন মুখে রাজ্যপালের সমালোচনা করে । সমালোচনা করতে হলে বিরোধীরা করবে । "
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যপালের সুরে সুর মিলিয়ে রাজ্য সরকারকে খোঁচাও দেন CPI(M)বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী । বলেন," রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার যে অবনতি ঘটেছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই । আমরা বারবার সেই অভিযোগই করছি ।" বিগত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে গেরুয়া শিবির । তা সত্ত্বেও রাজ্যে বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ জোটকেই বিকল্প হিসেবে এগিয়ে রাখছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী । তাঁর কথায়,"তৃণমূল ও BJP-কে রুখতে পারে একমাত্র বাম গণতান্ত্রিক জোট । এছাড়া আর কোনও বিকল্প শক্তি নেই ৷ " BJP-র বাড়বাড়ন্তের পিছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন সুজনবাবু । এই বিষয়ে তিনি বলেন,"যতদিন বামেরা রাজ্যের ক্ষমতায় ছিল, ততদিন পঞ্চায়েত কিংবা পৌরসভার একটি আসনও জিততে পারেনি গেরুয়া শিবির । ওদের (BJP) দ্বিতীয় শক্তিতে পরিণত করাটাই তৃণমূলের দায়িত্ব । সেই দায়িত্ব তৃণমূলকে দিয়েছে দিল্লির BJP নেতৃত্ব । ওদের (BJP) এক নম্বর কিংবা দু'নম্বরে রাখতে পারলেই CBI থেকে রেহাই মিলবে । সেই রেহাই দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা CBI ।"
সুজনবাবুর আরও অভিযোগ, "সারদা ও নারদা নিয়ে যদি সঠিক তদন্ত হত, তাহলে এতদিন তৃণমূল দলটাই উঠে যেত । কিন্তু সেটা হয়নি কেবলমাত্র তৃণমূল ও BJP-র গোপন সমঝোতার কারণে । তৃণমূল ও BJP-র মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই । দু'জনেই একে অপরের সমার্থক । " রাজ্যপালের পাহাড় সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন," দার্জিলিং ঠান্ডার জায়গা । পাহাড়ের মানুষ সৎ ও বিশ্বাসী । সেখানে উনি (জগদীপ ধনকড়) বিশ্রামের জন্য 15 দিন কিংবা একমাস থাকতেই পারেন । তাতে কোনও সমস্যা নেই । কিন্তু, রাজ্যপাল রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকলেই ভালো ।"
নবপল্লির দলীয় কর্মসূচি থেকে বারাসতের ভদ্র বাড়ির মোড়ে SFI-এর শ্রমজীবী ক্যান্টিন পরিদর্শনে যান CPI(M) বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী । সেখানে দলের ছাত্র নেতাদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ এই বিষয়ে কথা বলেন তিনি ।