বারাসত, 23 সেপ্টেম্বর: সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রসবের সময় সদ্যজাত চুরির অভিযোগ ৷ গোটা ঘটনায় নাম জড়িয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের একাংশের । শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে । ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত চেয়ে পুলিশ প্রশাসন এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছেন মহিলার পরিবারের সদস্যরা ।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে মহিলার প্রেগনেন্সি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । তাঁদের দাবি, "ওই মহিলার গর্ভে কোনও সন্তান ছিল না । এটা একেবারে ফলস প্রেগনেন্সি । বিষয়টি নিয়ে অযথা জলঘোলা করছেন মহিলার পরিবার।" তারপরও প্রশ্ন থেকেই যায়, গর্ভে যদি সন্তান না-থাকেই, তাহলে কিসের ভিত্তিতে মহিলাকে অন্তঃসত্ত্বা হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হল ৷ কেনই বা অস্ত্রোপচারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মহিলাকে ? সেই সমস্ত প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে ।
গত 17 সেপ্টেম্বর প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি হন রুথ মিত্র নামে ওই মহিলা । বারাসতের নবপল্লী এলাকার বাসিন্দা । পরের দিন গর্ভস্থ মহিলাকে প্রসবের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের অপারেশেন থিয়েটারে । পরিবারের দাবি, অস্ত্রোপচারের পর সেখানে থাকা চিকিৎসকরা জানায় ওই মহিলার গর্ভে কোনও সন্তান ছিল না । এমনকী এটা নিয়ে 'ফলস প্রেগনেন্সির' তত্ত্ব খাড়া করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । যা ঘিরেই শোরগোল পড়ে যায় । এসবই পরিকল্পিত বলেই দাবি করেছে মহিলার পরিবারের সদস্যদের । তাঁদের যুক্তি, 'ফলস প্রেগনেন্সি অবস্থায় ন'মাস কোনও মহিলার পক্ষে থাকা সম্ভব নয় । তাছাড়া ইসিজি এবং আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট দেখে তখন তো বলতেই পারত মহিলার গর্ভে কোনও সন্তান নেই । এক প্রকার সদ্যজাত শিশুকে চুরি করার অভিযোগ ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে ৷
এদিকে, হাসপাতাল থেকে সদ্যজাত শিশু নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ভুক্তভোগী মহিলা । এই প্রসঙ্গেই রুথ মিত্র বলেন, "ওটিতে নিয়ে যাওয়ার পর আমার সাথে আরেকজন মহিলাকেও নীচে বসিয়ে রাখা হয়েছিল । প্রসব যন্ত্রণায় আমি কাতরালেও ওই মহিলা কিন্তু দিব্যি সুস্থ অবস্থায় বসেছিল । যন্ত্রণা হওয়ায় সেখানে থাকা কর্তব্যরত নার্সরা এ কথাও বলেছিল প্রসবের সময় যন্ত্রণা একটু হয় । এরপর ইঞ্জেকশন দেওয়া হলে শরীরের নিচের অংশ অসার হয়ে যায় । তা সত্ত্বেও পেট কাটার পর কি চলছিল তা সবই অনুভব করতে পারছিলেন । আমার বাচ্চাকে নাকি ওরা চুরি করে নিয়ে গিয়েছে ।"
আরও পড়ুন: ফুটপাথ থেকে শিশু চুরি করে বিক্রি করত আনন্দপুরে কাণ্ডে ধৃত চার মহিলা
এনিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রকাশ্যে কিছুই বলতে চাননি বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল । তবে বিষয়টি নিয়ে ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "ভিত্তিহীন অভিযোগ ।"এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে । তাঁরাই গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে ৷