বারাসত, 9 সেপ্টেম্বর: গুলি খেলাকে কেন্দ্র করে ঝামেলা দুই শিশুর মধ্যে ৷ সেই ঝামেলার জেরে নেশাগ্রস্ত যুবকের ঘুষিতে প্রাণ গেল বছর ষাটের এক প্রৌঢ়ের। নিহতের নাম পানু মণ্ডল । ঘটনা ঘিরে শনিবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসতে। অভিযুক্ত বাপি ও তাঁর স্ত্রী পূজা সরদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে । ঝামেলার জেরেই এই ঘটনা নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত প্রৌঢ় ও ধৃত যুবক একে অপরের প্রতিবেশী । দু'জনেরই বাড়ি পুঁইপুকুর ক্ষুদিরাম পল্লিতে । এদিন সকালে কাচের গুলি নিয়ে খেলছিল এলাকার কয়েকজন শিশু ৷ ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে তাদের মধ্যে দুই শিশু। ঝামেলার মাঝে নেশাগ্রস্ত ওই যুবক হাজির হন সেখানে। ঘটনাস্থলে এসেই হম্বিতম্বি শুরু করেন তিনি। এরপরই নেশাগ্রস্ত যুবক এক শিশুকে মারধরও করে বলে অভিযোগ । তাতে আরও পরিস্থিতি ঘোরালো হয়। সেই ঝামেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান শিশুটির দাদু । দু-এক কথায় তাঁর সঙ্গে বচসা বেঁধে যায় নেশাগ্রস্ত ওই যুবকের ।
অভিযোগ, বচসার মধ্যেই প্রৌঢ়ের বুকে-পিঠে ঘুষি মারতে শুরু করেন যুবক । অনবরত ঘুষির আঘাতে ওই প্রৌঢ় একসময় লুটিয়ে পড়েন মাটিতে । তাঁকে বাঁচাতে এসে আক্রান্ত হন প্রতিবেশী কয়েকজন মহিলাও। সেই পরিস্থিতিতেও ক্ষান্ত হননি নেশাগ্রস্ত যুবক। ইট দিয়েও প্রৌঢ়কে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। এরপরই পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এলাকা থেকে সরে পড়েন অভিযুক্ত যুবক। ঘটনার জেরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। পরে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ।
এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা পূর্ণিমা মণ্ডল বলেন, "ওই যুবক নেশা করে ছিলেন। নেশাগ্রস্ত অবস্থাতেই সে অনবরত ঘুষি মারে প্রৌঢ়ের বুকে ও পিঠে । মারধর করে তাঁর নাতিকেও । এই ঘটনায় যারাই প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন তাঁদের সকলকেই গালিগালাজ করে নেশাগ্রস্ত যুবক। এই মর্মান্তিক ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি আমরা ৷" এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন স্থানীয় 15 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সমীর কুণ্ডু । তিনি বলেন,"ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক । অভিযুক্ত যুবক আগে 15 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিল । এখন সে পাশের 17 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা । আমরা চাই অপরাধীর শাস্তি হোক ৷"
আরও পড়ুন: পারিবারিক অশান্তি, নেশাগ্রস্ত দাদার লাঠির আঘাতে প্রাণ গেল ভাইয়ের
অন্যদিকে ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পলাতক অভিযুক্তের হদিশ পায় পুলিশ। তাঁকে ক্ষুদিরাম পল্লি এলাকা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় । পরে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত বাপি সরদার ও তাঁর স্ত্রী পূজাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।