ETV Bharat / state

রাজারহাটে বিপ্লবীদের তৈরি স্কুল পরিচর্যার অভাবে ধুঁকছে - school in Rajarhat

স্বাধীনতার পর রাজারহাটে থাকতেন অনেক বিপ্লবী ৷ তৈরি করেছিলেন স্কুলও ৷ সেই স্কুল এখন পরিচর্যার অভাবে ধুঁকছে ৷

বিপ্লবীদের তৈরি স্কুল
author img

By

Published : Aug 15, 2019, 10:48 PM IST

রাজারহাট, 15 অগাস্ট : ভারতবর্ষ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক স্মৃতি৷ সেই তালিকা থেকে বাদ নেই রাজারহাট ৷ উঁকি মারলে রাজারহাটের আনাচে কানাচে মিলবে নীল বিদ্রোহ কিংবা ডান্ডি অভিযানের অনেক স্মৃতি । সেরকমই একটি স্মৃতির নাম পল্লি নিকেতন স্কুল ৷ স্বাধীনতার পর সমাজকে সমৃদ্ধ করতে বিপ্লবীরা এই স্কুল তৈরি করেছিলেন ৷ কিন্তু পরিচর্যার অভাবে সেই স্কুলের আজ বেহাল দশা ৷

স্বাধীনতা আন্দোলনে অনেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ৷ সমাজে তাঁদের পরিচিতি হয় বিপ্লবী হিসেবে ৷ স্বাধীনতার পর এই বিপ্লবীদের মধ্যে অনেকে রাজারহাটে থাকতে শুরু করেন ৷ এরা অনেকেই জেল খেটেছেন ৷ আবার মোহিনী রায়ের মতো বিপ্লবী শহিদও হয়েছেন ৷ এই বিপ্লবীরা কেউ আজাদ হিন্দের যোদ্ধা, কেউ গান্ধিপন্থী স্বাধীনতা সংগ্রামী ৷ এমন কী, বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের অনেক বিপ্লবীও রাজারহাটে থাকতে শুরু করেন । সরকারের দেওয়া তাম্রপত্র বা পেনশন কিছুই নেননি তাঁরা ৷ বরং রাজারহাটের বাগু এলাকায় একটি স্কুল তৈরি করেন । এই স্কুলেরই নাম পল্লি নিকেতন ৷ সমাজকে সমৃদ্ধ করতে শুরু করেন শিক্ষকতা । আজাদ হিন্দ বাহিনীর মেজর সত্যভূষণ গুপ্ত, রসময় বসু ও নিকুঞ্জ সেনের প্রতিষ্ঠা করা সেই স্কুল এখন পরিচর্যার অভাবে ধুঁকছে । স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যবহার করা জিনিসপত্র কোথায় ? উত্তর জানা নেই কারও ৷ তাঁদের লেখা চিঠি , বই ও পুঁথি এখন উইপোকায় খাচ্ছে ৷ স্কুলের কর্মীদের এখন একটাই আবেদন ৷ যেটুকু বেঁচে আছে অন্তত সেইটুকু সংরক্ষণ করা হোক ।


আজাদ হিন্দ বাহিনীর মেজর ছিলেন সত্যভূষণ গুপ্ত । নেতাজির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি । দেশ স্বাধীন হওয়ায় পর তিনি সরকার থেকে কোনও সুবিধা নেননি । বরং ব্রতী হয়েছিলেন দেশসেবায় । একইপথে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন গান্ধিবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী ও পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কুমুদ রঞ্জন সরকার । এলাকার স্বনামধন্য ব্যবসায়ী সর্বেশ্বর মণ্ডলের দান করা 9 বিঘে জমিতে তাঁরাই গড়ে তোলেন পল্লিনিকেতন স্কুল । এই স্কুলে পরবর্তীকালে শিক্ষকতার কাজে যুক্ত হয়েছিলেন নিকুঞ্জ সেন, রসময় বসু , উপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায় ও উজ্জ্বল রক্ষিত রায়ের মতো বিনয়-বাদল-দীনেশের তৈরি বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের সহযোগিরা । এরা কেউই সরকারের দেওয়া তাম্রপত্র নেননি ৷ এমন কী, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দেওয়া পেনশন নিতে অস্বীকার করেছিলেন ৷ দেশসেবার জন্য রাজারহাটের স্কুলে যোগদান করেন । এলাকার কেউ অসুস্থ হলে তাঁদের পাশে দাঁড়াতেন । কারও কোনও সমস্যা হলে যথাসাধ্য চেষ্টা করতেন । অসহায়দের স্কুলেরই বিভিন্ন ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দিতেন ।

শেষ বয়সে কালী সাধক হয়ে উঠেছিলেন মেজর সত্য ভুষণ গুপ্ত । স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এরকম অনেক কাহিনি জড়িয়ে আছে পল্লি নিকেতন স্কুলের সঙ্গে । এই স্কুলেই রয়েছে তাঁদের সমাধি । কিন্তু তাদের ব্যবহার করা জিনিসপত্র অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে । এখন যা কিছু আছে তাতে উইপোকার বাসা । এতে মন খারাপ স্কুলের মালি তপন বৈদ্যর ।

তপনবাবু বলেন, "আমরা খুব ছোটো ছিলাম যখন এই সমস্ত বিপ্লবীদের সংস্পর্শে এসেছি । অনেক চেষ্টা করেছি ওদের জিনিস রক্ষা করার । কিন্তু পারিনি । অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে । যা কিছু আছে তাও নষ্ট হতে বসেছে ৷ অনেক জায়গায় চিঠি লিখেছি কোনও লাভ হয়নি । স্কুল আছে স্কুলের মতো করে । সরকার যদি একটু চেষ্টা করে তাহলে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি রক্ষা করা সম্ভব হবে ।"

স্কুলের অদূরেই লবণ আন্দোলনের সময় ব্রিটিশদের গুলিতে শহিদ হন স্বাধীনতা সংগ্রামী মোহিনী রায় । স্কুলেই তাঁর স্মৃতিতে তৈরি করা হয়েছে একটি শহিদ বেদী ৷ পরিচর্যার অভাবে সেই বেদীতে ধরেছে ফাটল ৷ চিহ্ন নেই সংস্কারের ৷ কয়েকদিন আগে ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শহিদ বেদীর একাংশ । এক স্থানীয় বাসিন্দা উদ্যোগ নিয়ে সংস্কার করেন ওই বেদীর ৷

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি সংরক্ষণের বিষয়ে অনেক আশ্বাস দেন । কিন্তু নির্বাচন চলে গেলেই তাঁরা ভুলে যান সেসব । ভোট আসে ভোট যায় কিন্তু যাদের জন্য এই ভোটাধিকার পাওয়া তাঁরাই ম্লান হয়ে গেছে আজকের রাজনীতিবিদদের কাছে ৷ স্বাধীনতা দিবস এখন উৎসবের মতো উদযাপন করা হয় । গোটা ভারতবর্ষ যখন স্বাধীন হওয়ার আনন্দ উদযাপন করছে তখন বর্ষায় ভিজছে মনীষীদের এই স্মৃতিসৌধ ।

রাজারহাট, 15 অগাস্ট : ভারতবর্ষ জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক স্মৃতি৷ সেই তালিকা থেকে বাদ নেই রাজারহাট ৷ উঁকি মারলে রাজারহাটের আনাচে কানাচে মিলবে নীল বিদ্রোহ কিংবা ডান্ডি অভিযানের অনেক স্মৃতি । সেরকমই একটি স্মৃতির নাম পল্লি নিকেতন স্কুল ৷ স্বাধীনতার পর সমাজকে সমৃদ্ধ করতে বিপ্লবীরা এই স্কুল তৈরি করেছিলেন ৷ কিন্তু পরিচর্যার অভাবে সেই স্কুলের আজ বেহাল দশা ৷

স্বাধীনতা আন্দোলনে অনেকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ৷ সমাজে তাঁদের পরিচিতি হয় বিপ্লবী হিসেবে ৷ স্বাধীনতার পর এই বিপ্লবীদের মধ্যে অনেকে রাজারহাটে থাকতে শুরু করেন ৷ এরা অনেকেই জেল খেটেছেন ৷ আবার মোহিনী রায়ের মতো বিপ্লবী শহিদও হয়েছেন ৷ এই বিপ্লবীরা কেউ আজাদ হিন্দের যোদ্ধা, কেউ গান্ধিপন্থী স্বাধীনতা সংগ্রামী ৷ এমন কী, বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের অনেক বিপ্লবীও রাজারহাটে থাকতে শুরু করেন । সরকারের দেওয়া তাম্রপত্র বা পেনশন কিছুই নেননি তাঁরা ৷ বরং রাজারহাটের বাগু এলাকায় একটি স্কুল তৈরি করেন । এই স্কুলেরই নাম পল্লি নিকেতন ৷ সমাজকে সমৃদ্ধ করতে শুরু করেন শিক্ষকতা । আজাদ হিন্দ বাহিনীর মেজর সত্যভূষণ গুপ্ত, রসময় বসু ও নিকুঞ্জ সেনের প্রতিষ্ঠা করা সেই স্কুল এখন পরিচর্যার অভাবে ধুঁকছে । স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যবহার করা জিনিসপত্র কোথায় ? উত্তর জানা নেই কারও ৷ তাঁদের লেখা চিঠি , বই ও পুঁথি এখন উইপোকায় খাচ্ছে ৷ স্কুলের কর্মীদের এখন একটাই আবেদন ৷ যেটুকু বেঁচে আছে অন্তত সেইটুকু সংরক্ষণ করা হোক ।


আজাদ হিন্দ বাহিনীর মেজর ছিলেন সত্যভূষণ গুপ্ত । নেতাজির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি । দেশ স্বাধীন হওয়ায় পর তিনি সরকার থেকে কোনও সুবিধা নেননি । বরং ব্রতী হয়েছিলেন দেশসেবায় । একইপথে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন গান্ধিবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী ও পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কুমুদ রঞ্জন সরকার । এলাকার স্বনামধন্য ব্যবসায়ী সর্বেশ্বর মণ্ডলের দান করা 9 বিঘে জমিতে তাঁরাই গড়ে তোলেন পল্লিনিকেতন স্কুল । এই স্কুলে পরবর্তীকালে শিক্ষকতার কাজে যুক্ত হয়েছিলেন নিকুঞ্জ সেন, রসময় বসু , উপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায় ও উজ্জ্বল রক্ষিত রায়ের মতো বিনয়-বাদল-দীনেশের তৈরি বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের সহযোগিরা । এরা কেউই সরকারের দেওয়া তাম্রপত্র নেননি ৷ এমন কী, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দেওয়া পেনশন নিতে অস্বীকার করেছিলেন ৷ দেশসেবার জন্য রাজারহাটের স্কুলে যোগদান করেন । এলাকার কেউ অসুস্থ হলে তাঁদের পাশে দাঁড়াতেন । কারও কোনও সমস্যা হলে যথাসাধ্য চেষ্টা করতেন । অসহায়দের স্কুলেরই বিভিন্ন ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দিতেন ।

শেষ বয়সে কালী সাধক হয়ে উঠেছিলেন মেজর সত্য ভুষণ গুপ্ত । স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এরকম অনেক কাহিনি জড়িয়ে আছে পল্লি নিকেতন স্কুলের সঙ্গে । এই স্কুলেই রয়েছে তাঁদের সমাধি । কিন্তু তাদের ব্যবহার করা জিনিসপত্র অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে । এখন যা কিছু আছে তাতে উইপোকার বাসা । এতে মন খারাপ স্কুলের মালি তপন বৈদ্যর ।

তপনবাবু বলেন, "আমরা খুব ছোটো ছিলাম যখন এই সমস্ত বিপ্লবীদের সংস্পর্শে এসেছি । অনেক চেষ্টা করেছি ওদের জিনিস রক্ষা করার । কিন্তু পারিনি । অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে । যা কিছু আছে তাও নষ্ট হতে বসেছে ৷ অনেক জায়গায় চিঠি লিখেছি কোনও লাভ হয়নি । স্কুল আছে স্কুলের মতো করে । সরকার যদি একটু চেষ্টা করে তাহলে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি রক্ষা করা সম্ভব হবে ।"

স্কুলের অদূরেই লবণ আন্দোলনের সময় ব্রিটিশদের গুলিতে শহিদ হন স্বাধীনতা সংগ্রামী মোহিনী রায় । স্কুলেই তাঁর স্মৃতিতে তৈরি করা হয়েছে একটি শহিদ বেদী ৷ পরিচর্যার অভাবে সেই বেদীতে ধরেছে ফাটল ৷ চিহ্ন নেই সংস্কারের ৷ কয়েকদিন আগে ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শহিদ বেদীর একাংশ । এক স্থানীয় বাসিন্দা উদ্যোগ নিয়ে সংস্কার করেন ওই বেদীর ৷

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি সংরক্ষণের বিষয়ে অনেক আশ্বাস দেন । কিন্তু নির্বাচন চলে গেলেই তাঁরা ভুলে যান সেসব । ভোট আসে ভোট যায় কিন্তু যাদের জন্য এই ভোটাধিকার পাওয়া তাঁরাই ম্লান হয়ে গেছে আজকের রাজনীতিবিদদের কাছে ৷ স্বাধীনতা দিবস এখন উৎসবের মতো উদযাপন করা হয় । গোটা ভারতবর্ষ যখন স্বাধীন হওয়ার আনন্দ উদযাপন করছে তখন বর্ষায় ভিজছে মনীষীদের এই স্মৃতিসৌধ ।

Intro:স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক স্মৃতি ছড়িয়ে আছে রাজারহাটের আনাচে কানাচে। নীল বিদ্রোহ কিংবা লবন আন্দোলন। রাজারহাটে অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী ঝাঁপিয়ে পড়েছিযেন স্বাধীনতার আন্দোলনে। অনেকে জেল খেটেছেন। মোহিনী রায়ের মত কেউ কেউ শহীদ হয়েছেন। স্বাধীনতার পর আজাদ হিন্দের যোদ্ধা হোক কিংবা গান্ধীপন্থী স্বাধীনতা সংগ্রামী এমনকি বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের অনেক বিপ্লবী রাজারহাটে থাকতে শুরু করেন। তারা নেননি সরকারের দেওয়া তাম্র পত্র কিংবা পেনশন। তারা রাজারহাটের বাগু এলাকায় পল্লিনিকেতন নামে স্কুল তৈরি করেন। সমাজ গড়ার কারিগর হিসাবে শিক্ষকতা শুরু করেন। আজাদ হিন্দ বাহিনীর মেজর সত্যভূষণ গুপ্ত, বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের বিপ্লবী এবং বিনয় বাদল দীনেশের সংগীত রসময় বসু নিকুঞ্জ সেন এদের প্রতিষ্ঠা করা স্কুল এখন ধুঁকছে। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যবহার করা জিনিসপত্র কোথায় জানেনা কেউ। তাদের চিঠি , বই ও পুঁথি পত্রে এখন উইপোকার বাসা। স্কুলের কর্মীরা চাইছেন যা কিছু বেঁচে আছে তা অন্তত সংরক্ষণ করা হোক।


Body:আজাদ হিন্দ বাহিনীর মেজর ছিলেন সত্যভূষণ গুপ্ত। নেতাজীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ায় পর তিনি সরকার থেকে কোন সুবিধে নেন নি। বরং ব্রতী হয়েছিলেন দেশসেবায়। একপথে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন গান্ধীবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কুমুদ রঞ্জন সরকার। এলাকার স্বনামধন্য ব্যবসায়ী সর্বেশ্বর মন্ডলের দান করা ৯ বিঘে জমিতে তারা গড়ে তোলেন পল্লিনিকেতন স্কুল। এই স্কুলে পরবর্তী কালে শিক্ষকতার কাজে যুক্ত হয়েছিলেন নিকুঞ্জ সেন, রসময় বসু , উপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায় এবং উজ্জ্বল রক্ষিত রায় রায়ের মত বিনয় বাদল দীনেশের বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স এর সহযোগিরা। এরা কেউই সরকারের দেওয়া তাম্রপত্র নেন নি না এমনি স্বাধীনতা সংগ্রামী পেনশন তিরস্কার করে দেশ সেবার কাজে ব্রতী হয়ে তারা রাজারহাটের স্কুলে যোগদান করেন। এলাকার কেউ অসুস্থ হলে তাদের পাশে দাঁড়াতেন। কারো কোন সমস্যা হলে যথাসাধ্য চেষ্টা করতেন। তারা থাকতেন স্কুলেরই বিভিন্ন ঘরে। শেষ বয়সে কালী সাধক হয়ে উঠেছিলেন মেজর সত্য ভুষণ গুপ্ত। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নানান কাহিনী জড়িয়ে আছে এই স্কুল ঘিরে। স্কুলে রয়েছে তাদের সমাধি। কিন্তু তাদের ব্যবহার করা জিনিসপত্র অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে সময়ের অভিশাপে। এখন যা কিছু আছে তাতে উইপোকার বাসা। এতে মন খারাপ স্কুলের মালি তপন বৈদ্যর। তপন বাবু বলেন, "আমরা খুব ছোট ছিলাম যখন এই সমস্ত বিপ্লবীদের সম্পর্কে এসেছি। অনেক চেষ্টা করেছি ওদের জিনিস রক্ষা করার। কিন্তু পারিনি । অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে। যা কিছু আছে তাও নষ্ট হবার জোগাড়। অনেক জায়গায় চিঠি লিখেছি কোন লাভ হয়নি। স্কুল আছে স্কুলের মত করে। সরকার যদি একটু চেষ্টা করে তাহলে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি রক্ষা করা সম্ভব হবে"।


Conclusion:স্বাধীনতা দিবস এখন যেন উৎসব উদযাপন। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা একদিকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য তৈরি হচ্ছে তখন বর্ষায় ভিজছে মনীষীদের স্মৃতিসৌধ। স্কুলের অদূরেই লবণ আন্দোলনের সময় ব্রিটিশদের গুলিতে শহীদ হন গান্ধীবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী মোহিনী রায়। তার স্মৃতিতে একটি শহীদ বেদী করা আছে। শহীদ বেদীতে সময়ের ছাপ লেগেছে। ফাটল ধরা শহীদ বেদীতে সংস্কারের কোন চিহ্ন নেই । কয়েকদিন আগে ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শহীদ বেদীর একাংশ। এক স্থানীয় বাসিন্দা নিজে উদ্যোগী হয়ে শহীদ বেদী সারিয়ে তোলেন। স্থানীয়দের অভিযোগ নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি সংরক্ষণের বিষয়ে অনেক আশ্বাস দেয় । কিন্তু নির্বাচন চলে গেলেই তারা ভুলে যায়। ভোট আসে ভোট যায় কিন্তু যাদের জন্য এই স্বাধীনতা এসেছে তাদের কথা ভুলে যায় আজকের প্রজন্মের রাজনীতিবিদরা।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.