গাইঘাটা, 17 জানুয়ারি: মুখে আধো আধো কথা ৷ আর তাতেই ফুল-ফল, সবজি, পশুপাখি থেকে শুরু করে বারো মাসের নাম গড়গড়িয়ে বলে দিতে পারে 2 বছরের অঙ্কনা ভৌমিক ৷ তার এই প্রতিভাকেই স্বীকৃতি দিল ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস । 15টি স্তর পার করে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নিজের নাম তুলল উত্তর 24 পরগনার গাইঘাটা থানার রামপুর ভাটপাড়ার ছোট্ট মেয়েটি । ছোট অঙ্কনা কিছু বুঝুক আর না বুঝুক ! সে জানিয়েছে, "ভবিষ্যতে আইপিএস হতে চায়।" তেমনটা চায় তার পরিবারও।
অঙ্কনার বাবা অরিন্দম ভৌমিক ওয়েব ডেভলেপমেন্টের কাজ করেন । মা সুমনা ভৌমিক গৃহবধূ । সংসারের কাজ সামলে মা প্রতিদিন ছোট অঙ্কনাকে খেলার ছলে পড়াতেন এবং শেখাতেন । এভাবেই অনায়াসে অনেককিছু শিখে ফেলে অঙ্কনা । অগ্রগতি দেখে স্বামী-স্ত্রী ঠিক করেন মেয়ের প্রতিভাকে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে তুলে ধরবেন । সেই মতো মেয়ের বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো দিয়ে অনলাইনে আবেদন করেন তাঁরা । কয়েকদিনের মধ্যে তাতে সাড়া মেলে । ছোট অঙ্কনার প্রতিভা জায়গা করে নেয় ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে ।
সোমবার আঙ্কনার বাড়িতে এসে পৌঁছেছে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের মেডেল, পরিচয় পত্র ও সার্টিফিকেট-সহ অন্যান্য পুরস্কার । ছোট্ট মেয়ের এই সাফল্যে গর্বিত তাঁর বাবা মা-সহ পরিবারের লোকজন । অঙ্কনার মা সুমনার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াবেন । কিন্তু গরিব পরিবারে সেই স্বপ্নপূরণ সম্ভব হয়নি । উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরেই বিয়ে দিয়ে দেয় পরিবার । মেয়ের মাধ্যমে এখন নিজের স্বপ্নপূরণ করতে চান মা ৷
সুমনা ভৌমিক বলেন, "ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস কী আমি জানতাম না ৷ কিন্তু যবে থেকে অঙ্কনা একটু কথা বলতে শিখেছে তখন থেকে ভিন্ন কিছু বলতাম, ছড়া বলতাম, রাস্তা ঘাটে বিভিন্ন কিছু দেখিয়ে নাম বলতাম । দেখতাম খুব সহজেই মনে রাখতে পারছে ও সেগুলো । পরে সেইগুলো বলতেও পারছে । ট্রেন থেকে একটি বই কিনে পড়িয়েছিলাম । দেখলাম সেটাও মনে রাখতে পারছে । জিজ্ঞাসা করলে বলে দিচ্ছে ৷ এরপর একদিন সোশাল মিডিয়ায় ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের বিষয়টি দেখি এবং স্বামীকে বলি ।"
মেয়ের এই সাফ্যের কৃতিত্ব স্ত্রীর বলে জানিয়েছেন অঙ্কনার বাবা অরিন্দম । তিনি বলেন, "মেয়ে যখন সব কিছু বলতে পারছে তখন ওর মা বলে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের জন্য প্রস্তুতি নিতে । সেই মতো মেয়ের ভিডিয়ো করে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডে পাঠাই । কয়েক দিনের মধ্যে ইমেলে গ্রহণের কথা জানিয়ে মেল আসে । মেয়ে নিজে থেকেই বলছে আইপিএস হবে । আমার মূল উদ্দেশ্য ও যাতে মানুষের জন্য কিছু করতে পারে । মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে সেইটা হবে বড় সাফল্য ।" অঙ্কনার রেকর্ড গড়ার খবর চাউরে হতেই অনেকেই দেখতে আসছেন গাইঘাটার এই বিষ্ময়কর শিশুটিকে ।
আরও পড়ুন: