ডায়মন্ড হারবার, 19 জুলাই: সন্তান থাকতো স্ত্রীর কাছে । হঠাৎ এসে সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে চায় স্বামী । বিশ্বাস করে স্বামীর হাতে সন্তানকে তুলেও দিয়েছিলেন স্ত্রী । কিন্তু নিজের সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে । অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ(Father arrested on charges of child trafficking in North 24 Parganas) ।
ধৃতের নাম মোজাহার শেখ ৷ দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার মন্দিরবাজারের মুলদিয়ার বাসিন্দা সে । তার বিরুদ্ধে শিশু সুরক্ষা আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে মন্দিরবাজার থানার পুলিশ । ধৃতকে মঙ্গলবার ডায়মন্ড হারবার মহাকুমা আদালতে পেশ করা হয় ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রীর কাছে থাকত দশ মাসের ফুট ফুটে বাচ্চাটা । কিছুদিন আগেই মোজাহার তার স্ত্রীর কাছে এসে বলে সন্তানকে নিয়ে বাড়ি যাবে । স্বামীর হাতে সন্তানকে তুলে দেন স্ত্রী । তাতে আপত্তি জানাননি মোজাহারের শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাও। এরপরের ঘটনাই রহস্যজনক ।
সোমবার সকালে ডায়মন্ড হারবার চাইল্ডলাইনে ফোন করেন এক ব্যক্তি । তিনি জানান, একটি দশ মাসের শিশু চুরি গিয়েছে । কিছু তথ্য সংগ্রহ করে ওই চাইল্ড লাইন থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে । এরপর পুলিশ তদন্তে নামে । উঠে আসে মোজাহারের নাম । প্রাথমিকভাবে জানা যায়, মোজাহার যখন তার শ্বশুরবাড়ি থেকে শিশুকে আনতে গিয়েছিল, তখন তার সঙ্গে ছিলেন এক আশাকর্মী । ফেরার সময়ে ওই আশাকর্মীর কোলেই শিশুটি ছিল ।
মোজাহারের পরিবারের বক্তব্য, তাদের বাড়ির ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ । তাকে ভুল বুঝিয়ে ওই আশাকর্মী শিশুকে চিকিৎসক দেখানোর জন্য অন্যত্র নিয়ে যায় । তারপর শিশুটিকে বিক্রি করে দেন । মোজাহার শেখ পালটা থানার দারস্থ হন । তার বক্তব্যের ভিত্তিতে মন্দিরবাজার থানা তদন্তে নামে ।
পুলিশি তদন্তে উঠে আসে ফরিদা বিবি নামে ওই আশা কর্মীর সক্রিয় যোগ থাকার বিষয়টি । রাতে ওই আশাকর্মীকে থানায় ডেকে আনা হয় । আশাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এক দম্পতির নাম উঠে আসে । রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ ওই দম্পতির কাছ থেকে শিশুটি উদ্ধার করে পুলিশ । এরপর বিষয়টি আরও জটিল হয়, দম্পতি দাবি করতে থাকেন, শিশুটির বাবা মোজাহার শেখ টাকার বিনিময়ে সন্তানকে বিক্রি করেছে ।
আরও পড়ুন: স্কুলে গণধর্ষণের চেষ্টা ! রেহাই পেতে ছাদ থেকে ঝাঁপ নাবালিকার
এই ঘটনার নেপথ্যে তিনটি ভিন্ন ব্যাখ্যা উঠে আসছে । আপাতত মোজাহারকে হেফাজতে নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ । তার মানসিক অবস্থা ঠিক কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে । গোটা বিষয় নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ ।