বনগাঁ, 2 জুলাই: বিজেপির সভায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের । মৃতের নাম হারাধন বিশ্বাস । গাইঘাটা থানার সুটিয়া মধ্য বারাসতের বাসিন্দা তিনি। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটার পাঁচাপোতায় । সভাস্থলে অব্যবস্থার ফলে হারাধনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের । রাতেই বনগাঁ থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন হারাধনের মেয়ে কৃষ্ণা চৌধুরী । তবে হারাধনের মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রাজনীতি ৷ এ নিয়ে বিজেপিকে বিঁধছে শাসকদল। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে গেরুয়া শিবির, এমনকী তৃণমূল নেতৃত্বও।
জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে পাঁচপোতা ভাড়াডাঙা হাইস্কুল মাঠে বিজেপির সভা হচ্ছিল । সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । সেই সভায় এসেছিলেন হারাধন । বিজেপি সূত্রে খবর, সভাস্থলে শুভেন্দু অধিকারী আসার আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধ । তাঁকে বিজেপির কর্মীরা নিয়ে আসেন বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে । সেখানে ডাক্তার মৃত বলে ঘোষণা করেন হারাধনকে। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন হারাধনের মেয়ে ও নাতনি।
আরও পড়ুন: সভায় আসার পথে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা, আহতদের নিয়ে থানায় হাজির শুভেন্দু
নাতনি পিয়ালী চৌধুরী অভিযোগ করেন, স্থানীয় বিজেপির কেউ তাঁর দাদুকে হাসপাতালে নিয়ে আসল না । বিজেপির কাছে সভাটাই বড় । যা নিয়ে তাঁর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন হারাধনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা বিজেপি কর্মীরা । মৃতের পরিবারের সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করতে আসেন জেলা বিজেপির সভাপতি রামপদ দাস । তাঁর সামনেও একই ক্ষোভ উগরে দেয় পরিবারের সদস্যরা। তাঁকে প্রশ্ন করেন, কেন ওই বৃদ্ধর সঙ্গে কোনও বিজেপি নেতৃত্ব হাসপাতালে আসেনি ।
রামপদ দাস বলেন, "আমরা পরিবারের সদস্যদের পাশে আছি । সমবেদনা জানাতে রাজ্যের নির্দেশে আমি এসেছি । তাদের বাড়ির লোক মারা গিয়েছে তাদের ক্ষোভ-বেদনা আছে। এছাড়া এই বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে পারব না।" কিছু সময় পর হাসপাতালে আসেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস । কথা বলেন মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে । বিশ্বজিৎ বলেন, "বিজেপির সভায় গিয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হল ৷ কিন্তু তাঁর সঙ্গে কোন বিজেপি কর্মী হাসপাতালে এল না। স্বাভাবিকভাবেই পরিবারের ক্ষোভ রয়েছে । আমরা এই পরিবারের পাশে আছি । আমি ইতিমধ্যেই প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি ৷ এই পরিবারের পক্ষ থেকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আমরা তাদের পাশে থাকব ।"
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের সফরকালে উত্তপ্ত গিতালদহ ! বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে জখম 6
সভাস্থলের অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে রাতে বনগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃত হারাধনের মেয়ে কৃষ্ণা চৌধুরী । এ বিষয়ে কৃষ্ণার পেয়ে পিয়ালি চৌধুরী বলেন, "আমাদের ধারনা ওনারা আমার দাদুকে মেরে ফেলেছে ৷ সেই হিসেবেই অভিযোগ করেছি । ওই সভার লোকজনই মেরে ফেলে দিয়েছে কি না জানি না । সেই হিসেবে তদন্তের জন্য অভিযোগ দায়ের করেছি ।" অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।