বিধাননগর, 17 নভেম্বর: টেক সাপোর্টের নাম করে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণার ফাঁদ বিধাননগরে । এই ঘটনায় গ্রেফতার 14 জন মহিলা-সহ 27 জন (Arrested) । ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিয়ে প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস করল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ ৷
জানা গিয়েছে, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের এরগো টাওয়ারের 18 তলায় কিছুদিন ধরেই একটি ভুয়ো কল সেন্টার (Fake Call Centre) চলছিল বলে পুলিশের কাছে খবর আসে । তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷ তারা জানতে পারে জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের কম্পিউটারে সুপ্রিমো নামের একটি সফটওয়ার দিয়ে অ্যাকসেস নিত এই প্রতারকরা । এরপরই সেই ভুয়ো কল সেন্টার থেকে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল ব্যবহার করে অভিযুক্তরা ফোন করত জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের । সেখানে তাদের মাইক্রোসফট সংস্থার কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে টেকনিক্যাল সাপোর্টের জন্যে আবেদন জানাত ।
এই আবেদনে সাড়া দিলেই তাদের জানান হত, টেকনিক্যাল সাপোর্ট নিতে গেলে তাদের ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন নামের একটি অনলাইন মানি ট্রান্সফার অ্যাপের ওয়ালেটে রিচার্জ করতে হবে । সেই ওয়ালেটে বিদেশি নাগরিকরা নিজেদের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের নম্বর দিয়ে রিচার্জ করলে, সব তথ্য এসে পৌঁছত প্রতারকদের হাতে । এরপরই সেই তথ্য ব্যবহার করে বিদেশি অ্যাপের থেকে নাগরিকদের টাকা ট্রান্সফার করা হত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে । এরপরই সেই টাকা অভিযুক্তরা সুইফ্ট ট্রান্সফার নামের একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকাউন্ট থেকে নিয়ে আসত ভারতীয় ব্যাংকে ।
বুধবার রাতে সেক্টর ফাইভের ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দেয় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ । সেখান থেকে 14 জন মহিলা-সহ মোট 27 জনকে গ্রেফতার করা হয় । তাদের কাছ থেকে 56টি কম্পিউটার, 10টি হার্ড ডিস্ক, 1টি ল্যাপটপ, 24টি স্মার্ট ফোন, 2টি রাউটার, 2টি ভুয়ো সার্টিফিকেট, 2টি অ্যাটেনডেন্স রেজিষ্টার, 10পেজের স্ক্রিপ্ট এবং কাস্টমার ডেটা, 2টি শিল এবং রাবার স্ট্যাম্প, 7টি ডেবিট কার্ড, 2টি চেক বই এবং 45পেজের নথি উদ্ধার করেছে পুলিশ ।
আরও পড়ুন: কাজের খোঁজে অনুপ্রবেশ, গাইঘাটায় গ্রেফতার মায়ানমারের পাঁচ নাগরিক-সহ ছয়
আজ অভিযুক্তদের বিধাননগর আদালতে তোলা হবে । তাদের মধ্যে থেকে অভিষেক বিশ্বাস, পলাশ সরকার, মহম্মদ আলাফ হুসেন, মহম্মদ আসিফ আখতার এবং টিংকু বাগচীকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ । এই চক্রের মূল পাণ্ডার খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ ।