বারাসত, 19 জুন : উত্তর 24 পরগনায় আজ নতুন করে কোরোনা আক্রান্ত হলেন আটজন । আক্রান্তরা দেগঙ্গা, বারাসত ও আমডাঙার বাসিন্দা । স্বাস্থ্যবিভাগের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, জেলায় মোট কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় 800-র কাছাকাছি । মোট মৃতের সংখ্যা 77 ।
আক্রান্তদের মধ্যে দেগঙ্গার বাসিন্দা চারজন । বাকি চারজন বারাসত 1 ও 2 নম্বর ব্লক এবং আমডাঙার বাসিন্দা । জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেগঙ্গায় কোরোনা আক্রান্ত চারজনের মধ্যে এক স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন । স্বাস্থ্যকর্মীর কোরোনা সংক্রমণের পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও ।
আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীকে 14দিন হোম কোয়ারানটিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা । আক্রান্তের বাড়ির এলাকা বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করা হয়েছে । স্যানিটাইজ় করা হয়েছে আক্রান্তের কর্মস্থান বিশ্বনাথপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রও ।
ভিন রাজ্য থেকে ফেরার পর শ্রমিকরা এবং অন্যান্য কোরোনা সন্দেহজনক ব্যক্তি নমুনা পরীক্ষার জন্য বিশ্বনাথপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়েছিলেন । তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন ওই স্বাস্থ্য কর্মীই । জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশিকা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষিত রাখতে প্রতিদিনই তাঁদের লালারসের নমুনাও সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় । আজ রিপোর্ট আসার পর জানা যায় ওই স্বাস্থ্যকর্মী কোরোনা সংক্রমিত । পরিযায়ী শ্রমিক সহ অন্যান্যদের নমুনা সংগ্রহের কাজ করেন তিনি । ফলে তাঁদের সংস্পর্শে আসায় ওই স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রমিত হয়েছেন বলেই মনে করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ।
ভিন রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা জেলায় ফিরতেই সংক্রমিতের তালিকা ঊর্ধ্বমুখী । ইতিমধ্যে দেগঙ্গা, বারাসত, আমডাঙা, অশোকনগর, হাবরা এবং বনগাঁয় কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন । তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগরই কোরোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসছে বলে জানাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ । আবার অনেকের উপসর্গ না থাকায় তাঁদের সোয়াব নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে না । ফলে বিপদ বাড়ছে প্রতিমুহূর্তে ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে আগেই জানানো হয়েছে, উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের কোরোনা পরীক্ষা করা হবে । যার জেরে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না । এই পরিস্থিতিতে সকল পরিযায়ী শ্রমিকের কোরোনা পরীক্ষা করার দাবিও জোরালো হচ্ছে বিভিন্ন মহলে । যদিও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে । প্রয়োজনে পরিযায়ী শ্রমিকদের সকলের কোরোনা পরীক্ষা করা হতে পারে ।
প্রসঙ্গত, লকডাউন শিথিল হলেও কোরোনা আক্রান্ত সংক্রমণ কিন্তু থেমে থাকেনি । প্রায় প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমিতের সংখ্যা । লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর তালিকাও । স্বাস্থ্য দপ্তরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী উত্তর ২৪ পরগনায় কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় 800 ছুঁইছুঁই । মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে 77 ।