দত্তপুকুর, 18 ডিসেম্বর: মাসখানেক পরই অযোধ্যায় উদ্বোধন হতে চলেছে রামমন্দিরের ৷ সেই মন্দির নির্মাণের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দেশের বিভিন্ন অংশের নাম ৷ তার মধ্যে অন্যতম পশ্চিমবঙ্গের দত্তপুকুর ৷ উত্তর 24 পরগনার এই এলাকায় একটি কারখানায় তৈরি হয়েছে রামচন্দ্রের ফাইবারের দু’টি মূর্তি ৷ এই মূর্তি দু’টি শোভা পাবে রামমন্দিরে ৷
এই মূর্তি দু’টি তৈরি হয়েছে দত্তপুকুরের ফালদি এলাকার বিট্টু ফাইবার গ্লাস নামে একটি কারখানায় ৷ কারখানার মালিক জামালউদ্দিন ও তাঁর ছেলে বিটুটর হাতেই গড়ে উঠেছে এই দু’টি মূর্তি ৷ 16-17 ফুটের ওই মূর্তি দু’টির একটি আট মাস আগে ও আরেকটি মাসতিনেক আগে অযোধ্যার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে দত্তপুকুর থেকে ৷
সুপ্রিম কোর্টে রামমন্দির মামলার রায় বের হওয়ার প্রায় চার বছর পর এই মন্দিরের দরজা সাধারণের জন্য খুলতে চলেছে আগামী বছরের 22 জানুয়ারি ৷ উদ্বোধন করবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তাছাড়া উপস্থিত থাকবেন দেশ-বিদেশের অনেক সাধু-সন্ত, বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি ৷ দু’টি ফাইবারের মূর্তি বানিয়ে সেই রাজসূয় যজ্ঞের শরিক হতে পেরে খুশি জামালউদ্দিন ৷
তিনি জানান, রামমন্দিরে তাঁর ও তাঁর ছেলের তৈরি দু’টি রামচন্দ্রের মূর্তি গিয়েছে, এটা তাঁর কাছে চরম সৌভাগ্যের ৷ মূর্তি দু’টির দাম কত, সেটাও জানিয়েছেন জামালউদ্দিন ৷ তাঁর কথায়, প্রথম যে মূর্তিটি অযোধ্যায় যায়, সেটার দাম 2 লক্ষ 80 হাজার টাকা ৷ আর দ্বিতীয় মূর্তিটির দাম আড়াই লক্ষ টাকা ৷
জামালউদ্দিন আরও জানান, উত্তরপ্রদেশে তাঁর এক বন্ধু রামচন্দ্রের মূর্তি তৈরির প্রস্তাব দেন ৷ তার পর তাঁর সঙ্গে রামমন্দির নির্মাণ সংক্রান্ত ট্রাস্টের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় ৷ শুরু হয় মূর্তি তৈরির কাজ ৷ মূর্তি নিয়ে যাওয়ার আগে অযোধ্যা থেকে বেশ কয়েকজন এসে বারাসতের একটি হোটেলে এসে প্রায় 20-25 দিন ছিলেন ৷ সেখান থেকেই তাঁরা কারখানায় এসে তদারকি করতেন কাজের ৷
জামালউদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ৷ তিনি হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে মূর্তির তৈরির প্রশিক্ষণ নেন ৷ তার পর দত্তপুকুরে ফিরে কারখানা তৈরি করেন ৷ তাঁর হাত ধরেই ছেলে বিট্টু এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ৷ দেশে তাঁর শিল্পের প্রশংসা আগেও পেয়েছেন জামালউদ্দিন ৷ তাঁর আশা, রামচন্দ্রের মূর্তির মাধ্যমে তাঁর কাজের সুনাম ছড়িয়ে পড়বে বিদেশেও ৷ শ্রীবৃদ্ধি হবে তাঁর ব্যবসার ৷
স্থানীয় বাসিন্দারাও খুশি তাঁদের এলাকায় কারখানা থেকে রামচন্দ্রের দু’টি অযোধ্যায় যাওয়ার জন্য ৷ অধিকাংশেরই মতে, শিল্পীরা সবসময় ধর্মীয় বেড়ার ঊর্ধ্বে ৷ সেটাই আবার প্রমাণ করলেন দত্তপুকুরের জামালউদ্দিন ও তাঁর ছেলে বিট্টু ৷
তবে শুধু এই বাবা-ছেলে নয়, দত্তপুকুরের বাসিন্দা আরও একজনের নাম জড়িয়ে গিয়েছে রামমন্দির নির্মাণের সঙ্গে ৷ তিনি সৌরভ রায় ৷ দত্তপুকুরের দিঘিরপাড় পালপাড়ার বাসিন্দা এই সৌরভও ফাইবারের কাজ করেন ৷ দত্তপুকুরের একটি কারখানায় কাজ করতেন ৷ সেখান থেকেই একটি দলের সঙ্গে তিনি উত্তরপ্রদেশে চলে যান ৷ সৌরভ জানিয়েছেন, মজুরি বেশি হওয়ার জন্য তিনি এসেছেন ৷ সৌরভের বাবা-মা অবশ্য জানেন না যে ছেলে কী কাজে ভিনরাজ্য়ে গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন: