মধ্যমগ্রাম, 16 অগস্ট : 'দুয়ারে সরকার'-কর্মসূচির (Duare Sarkar) দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর প্রথম দিনই ভিড় উপচে পড়ল মধ্যমগ্রামে । করোনার বিধি কার্যত শিকেয় উঠল বলে অভিযোগ । ভিড় সামাল দিতে একসময় রাস্তায় নামতে দেখা যায় স্বয়ং বারাসতের এসডিপিও সত্যব্রত চক্রবর্তীকে । তাঁর সঙ্গে ছিলেন মধ্যমগ্রাম থানার আইসি পিনাকী রায়ও । ভিড় হলেও পুলিশ তৎপর এবং সক্রিয় থাকায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে ।
সূত্রের খবর,'দুয়ারে সরকার'-কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রত্যাশিতমতোই 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' (Lakshmir Bhandar Scheme) প্রকল্পের ফর্ম জমা দেওয়ার হিড়িক পড়ে । এ ছাড়া অন্যান্য প্রকল্পের সুবিধা নিতেও ভিড় জমিয়েছিলেন পৌরসভার বাসিন্দারা । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণামতো আজ থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে 'দুয়ারে সরকার'-কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায় । এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় 18টি প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে সাধারণ মানুষের কাছে । এ বার উপরি পাওনা 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' প্রকল্প । যে প্রকল্পের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা নির্বাচনের সময় করেছিলেন । ক্ষমতায় আসার পর 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগীও হন মুখ্যমন্ত্রী । প্রতিশ্রুতি মতো সোমবার অন্যান্য প্রকল্পের সঙ্গে 'লক্ষ্মীর ভান্ডার' প্রকল্পের ফর্ম জমা নেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির মাধ্যমে ।
আরও পড়ুন: West Bengal Corona Update : কমে পাঁচশোর ঘরে রাজ্যের সংক্রমণ, কমল মৃত্যুও
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা নিতে এ দিন সকাল থেকেই ভিড় উপচে পড়ে মধ্যমগ্রামের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠে । পৌরসভার 10, 21, 23 ও 24 - এই চারটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সুবিধা দিতে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির ক্যাম্প করা হয় ৷ চারটি ওয়ার্ড একসঙ্গে হওয়ায় ভিড়ও হয়েছিল যথেষ্ট । গা ঘেঁষাঘেঁষি করে লাইনে দাঁড়ানোয় কার্যত শিকেয় ওঠে করোনার বিধিনিষেধ । ঠেলাঠেলি এবং ভিড় সামাল দিতে রাস্তায় নামেন বারাসতের এসডিপিও সত্যব্রত চক্রবর্তী । ছিল মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশও । যার ফলে এড়ানো গিয়েছে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি । শেষ পর্যন্ত সেখানে সুষ্ঠুভাবেই দুয়ারে সরকার কর্মসূচির ক্যাম্প সম্পন্ন হয়েছে বলে খবর ।
আরও পড়ুন: TMC Reshuffle: তৃণমূলেও এক ব্যক্তি এক পদ, জেলা সভাপতির পদ খোয়ালেন একাধিক মন্ত্রী
এই বিষয়ে মামণি কর্মকার নামে 23 নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বললেন, "চারটি ওয়ার্ড একসঙ্গে হওয়ায় প্রচুর মানুষের ভিড় হয়েছিল ক্যাম্পে । তবে প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় অশান্তি ছাড়াই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের ফর্ম জমা দিতে পেরেছি । এই প্রকল্প চালু হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবর্তী পরিবারের মহিলারা খুবই উপকৃত হবেন ৷" 24 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মনোজকুমার পাল আবার করোনাবিধি ভঙ্গ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ৷ তিনি বলেন, "যে ভাবে সকলে কাছাকাছি লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাতে যথেষ্ট আতঙ্কিত আমরা । তা সত্ত্বেও দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে এসেছি প্রকল্পের সুবিধা নিতে । একসঙ্গে চারটি ওয়ার্ড না করে, যদি ওয়ার্ড ধরে আলাদাভাবে ক্যাম্প করা যায় তাতে সকলেরই সুবিধা হবে ৷"
বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার 23 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর এবং প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য প্রকাশ রাহা বলেন, "দুয়ারে সরকার কর্মসূচির প্রথম পর্যায় সফলভাবে শেষ হয়েছিল । বিধানসভা নির্বাচনের আচরণবিধির জন্য দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর কাজ আটকে ছিল । এ দিন সেই কাজ শুরু হয়েছে । তবে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধা নিতে আগ্রহ একটু বেশি । ভিড় হলেও ক্যাম্পে কোনওরকম বিশৃঙ্খলা হয়নি । মানুষ একটু অধৈর্য হয়ে পড়েছিল । সুষ্ঠুভাবেই এ দিন দুয়ারে সরকার কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৷"