বসিরহাট, 1 অগস্ট: দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার ঘাটতি হলেও দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৷ রাজ্যের বেশকিছু জেলায় ইতিমধ্যেই চোখ রাঙাতে শুরু করেছে মশাবাহিত এই রোগ। সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি আমডাঙা ব্লক এবং বসিরহাটে। এই দুই জায়গায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের কপালে।
এক রোগীর আত্মীয় মিনা বিবি বলেন," আমার শ্বাশুড়ি কয়েকদিন ধরেই অজানা জ্বরে আক্রান্ত ৷ ওষুধ খেলে সাময়িকভাবে জ্বর কমলে আবার বাড়ছে ৷ রক্ত পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে ৷" একই কথা বলেছেন ঊষা মণ্ডা ৷ তাঁর ছেলে কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছেন৷ কিছুতেই কমছে না ৷ ফলে তিনিও আতঙ্কে আছেন বলে জানিয়েছেন ৷
বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, "এখন প্রায় 20-21 জন জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন ৷ তাঁদের মধ্যে একজনের রক্তে ডেঙ্গু ধরা পড়েছে ৷ বাকিদের রক্তের নমুনাও পাঠানো হয়েছে ৷ রিপোর্ট আসলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে ৷ পাশাপাশি ডেঙ্গি প্রতিরোধে একাধিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ আলাদা করে জ্বর আক্রান্তদের জন্য ওয়ার্ড খোলা হয়েছে ৷ স্বাস্থ্যকর্মীদের ডেঙ্গি সংক্রান্ত ট্রেনিংও দেওয়া হয়েছে ৷"
উল্লেখ্য, বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি, রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, হাড়োয়া, আমডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর লম্বা লাইন। প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে এই সমস্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগে। পুরুষ, মহিলা এমনকী, শিশুরাও মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত উত্তর 24পরগনা জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছশো'র ওপর। এর মধ্যে রয়েছে বারাসত, বনগাঁ ও ব্যারাকপুর।
আরও পড়ুন: এক বছর গ্রামের একমাত্র পানীয় জলের কল অকেজো, 3 সপ্তাহের মধ্যে সমাধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
এই তিন মহকুমা মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় পাঁচশো-র কাছাকাছি। বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড়শো। ব্যারাকপুর মহকুমার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আমডাঙাতে। সেখানে ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দু'শোর ওপর। আক্রান্তের মধ্যে দু-একজনের মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে। তবে, প্রশাসন ডেঙ্গিতে কোনও মৃত্যুর কথা স্বীকার করেনি। বরং দাবি করা হয়েছে, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। কয়েকজনের চিকিৎসা চলছে আমডাঙা ও বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।
গত 24 ঘন্টায় নতুন করে বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলায় 13 জন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের রক্তের নমুনা এবং লালা সংগ্রহ করে কলকাতার ট্রপিক্যাল ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, ডেঙ্গি প্রতিরোধে বেশ কিছু জায়গায় ছড়ানো হয়েছে ব্লিচিং পাউডার ৷ দেওয়া হয়েছে মশা মারার তেলও ৷