বারাসত, 19 নভেম্বর : হোর্ডিং, ব্যানারে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দিয়ে আগেই পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন বারাসতের "দাদার অনুগামীরা"। এবার "দাদার" পাশে দাঁড়িয়ে রামনগরের সভায় যোগ দিতে একেবারে বারাসত থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের দিকে রওনা হলেন শুভেন্দু-র অনুগামী নেতা ও কর্মীরা। বারাসত শহরের চারটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকে প্রায় 50 জন গেলেন রামনগরে দাদার "মেগা শো"-তে হাজির হতে। এজন্য চারটি স্করপিও গাড়িও ভাড়া করা হয়েছে । সেই গাড়ি করেই সকাল সকাল রামনগরের উদ্দেশ্যে রওনা হন বারাসতের "দাদার অনুগতরা"। এনিয়ে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে জল্পনা। বাড়ছে বিতর্কও। যদিও বিষয়টিকে একেবারেই আমল দিচ্ছেন না স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে অধিকারী পরিবারের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত বিধায়ক অখিল গিরি ৷ এই অখিল গিরির খাসতালুক রামনগরে আজ এই "মেগা শো"-র ডাক দিয়েছেন পরিবহনমন্ত্রী ও তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সমবায় আন্দোলনকে সামনে রেখেই এই সভার আয়োজন হতে চলেছে। এর আগে তমলুক, এগরা, নন্দীগ্রামসহ জেলার একাধিক প্রান্তে অরাজনৈতিক ব্যানারে সভা করেছেন শুভেন্দু । সেই সমস্ত সভা থেকে কখনও দলকে খোঁচা আবার কখনও সরাসরি নিশানা করেছেন তিনি। পালটা তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রী ও সাংসদ আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারীকে। এর জেরে দলের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বেড়েছে শুভেন্দুর। তৃণমূল দলে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়লেও জেলায় জেলায় তাঁর সমর্থনে পোস্টার, হোর্ডিং, ব্যানার পড়তে দেরি হয়নি। এসবের মধ্যেই শুভেন্দু-র মান ভাঙাতে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বলে খবর। দুজন বরিষ্ঠ সাংসদ তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে রফা সূত্র খোঁজার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারই মধ্যে আজ রামনগরে শুভেন্দু-র "মেগা শো"-র দিকে নজর সকলের। সেখানে তিনি নতুন কোনও বার্তা দেন কি না সেটাই দেখার বিষয়।
এদিকে দাদার পাশে দাঁড়াতে বারাসত থেকে চারটি গাড়িতে করে রামনগরের সভার উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন শুভেন্দু-র অনুগত নেতা ও কর্মীরা। যার নেতৃত্বে ছিলেন বারাসত শহর যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি সুভাষ মিত্র। এই বিষয়ে তিনি বলেন, "দাদা আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা। তিনি যেভাবে পথ দেখাবেন, আমরা সেভাবেই চলব। দাদা(শুভেন্দু অধিকারী)-কে দলের কিছু দুষ্টচক্র কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। তাঁর অনুগত সৈনিক হিসেবে সেটা আমরা কখনই মেনে নেব না। আমরা দাদার সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব । সেই কারণেই আজ রামনগরে দাদার ডাকা সভায় যোগ দিতে যাচ্ছি। এর মধ্যে বিতর্ক, জল্পনার কোনও অবকাশ নেই।"
তবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এই বিষয়ে বারাসত শহর তৃণমূলের সভাপতি ও পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য অশনি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "শুভেন্দু এখনও আমাদের দলের নেতা ও মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। উনি দলের সঙ্গেই রয়েছেন। আর যাঁরা তাঁর ডাকা সভায় বারাসত থেকে যাচ্ছেন তাঁরাও তো তৃণমূলেরই কর্মী-সমর্থক। ফলে, একে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার কী আছে ? আমাদের একজনই সর্বময় জননেত্রী। তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে বাদ দিয়ে কেউ কিছু করার চেষ্টা করে তাতে খুব একটু সুবিধা হবে না।"