বারাসত, 10 নভেম্বর: কলেজ ইউনিয়ন রুমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ছবির সামনে বসে মদ্যপান ৷ প্রতিবাদী ছাত্রনেতাকে মারধরের ঘটনার 12 দিন পরও অধরা অভিযুক্ত টিএমসির সদস্যরা। ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে পথে নেমে সরব হলেন সিপিএমের ছাত্র-যুবরা (CPM)।
বৃহস্পতিবার হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বারাসত থানার সামনে (Barasat Police Station) বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। চলে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে স্লোগানও। তুমুল বিক্ষোভ এবং অহরহ স্লোগানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কার্যত সরগরম হয়ে ওঠে থানা চত্বর। পরে, এই ইস্যুতে বারাসত থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেয় ছাত্র-যুবর এক প্রতিনিধি দল।
প্রসঙ্গত, ভাইফোঁটার রাতে বারাসত কলেজের উলটো দিকে 34 নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন টিএমসিপির (TMCP) প্রাক্তন ছাত্রনেতা নবকিশোর মণ্ডল। তখনই টিএমসিপির পরিচিত কয়েকজন তাঁকে কলেজ ইউনিয়ন রুমে নিয়ে যেতে জোরাজুরি করেন। তখন তিনি তাঁদের সঙ্গে না-গেলেও পরে ইউনিয়ন রুমে প্রবেশ করতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে ওঠে ওই ছাত্রনেতার। দেখেন, ইউনিয়ন রুমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির সামনে বহিরাগতদের এনে মদের আসর বসিয়েছে টিএমসিপির কয়েকজন। সেই দৃশ্য দেখে তিনি পকেট থেকে মোবাইল বের করতে গেলে বাধা দেন মদ্যপকারীরা।
আরও পড়ুন: সভাতে মহিলা কম আসায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধের নিদান তৃণমূল নেতার
তাঁদের সন্দেহ হয় ওই ছাত্রনেতা হয়তো ঘটনাটি মোবাইলবন্দি করার চেষ্টা করছেন। সেই সন্দেহের বশে তাঁর ওপর আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে মারধরের পাশাপাশি চোখ নষ্টের চেষ্টারও অভিযোগ উঠেছে দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। রক্তাক্ত অবস্থায় আক্রান্ত ওই ছাত্রনেতা টিএমসিপির স্থানীয় নেতৃত্বের সহযোগিতা চাইলেও তিনি তা পাননি বলে অভিযোগ নবকিশোরের। অগত্যা অভিযুক্ত টিএমসিপি সদস্যদের বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। অভিযোগ দায়ের হয় বারাসত থানায়।
অভিযোগ দায়েরের পর 12 দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ। অভিযুক্তরা শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণেই কি পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না? নাকি বিষয়টি দলীয় কোন্দল বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ? এমনই সব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে অভিযুক্তরা এখনও ধরা না পড়ায়।
পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধেই এবার পথে নেমে সোচ্চার হয়েছেন সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা। এই বিষয়ে এসএফআইয়ের (SFI) রাজ্য কমিটির সদস্য বিশাল দাস বলেন, "অভিযুক্তরা টিএমসিপির সদস্যরা কেন এখনও গ্রেফতার হল না, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন! আমরা চাই রাজ্যের স্কুল-কলেজগুলিতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসুক। সেই সঙ্গে বহিরাগতরাও যাতে শিক্ষাঙ্গণে প্রবেশ করতে না-পারে তারও উদ্যোগ নেওয়া হোক। বিষয়টি অবগত করা হবে বারাসত কলেজের অধ্যক্ষকে-ও"। অন্যদিকে, ইউনিয়ন রুমে মদকাণ্ডের ঘটনায় দোষীরা দ্রুত গ্রেফতার না হলে আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সিপিএমের ছাত্র-যুবরা।
আরও পড়ুন: টি শার্ট-হাওয়াই চটি পরে বৈঠকে, পার্শ্ব শিক্ষককে বের করে দিলেন বিডিও !