বারাসত, 16 জুন: তৃণমূলের মনোনয়ন দাখিলের প্রক্রিয়া নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলে শাসক দলকে নিশানা করলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী । সেই সঙ্গে তদন্তের দাবি করে এই নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগও করেছেন তিনি ।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, "সঠিক তদন্ত হলে চাকরি দুর্নীতির মতো তৃণমূলের মনোনয়নেও ওএমআর শিট কেলেঙ্কারি বেরিয়ে আসবে । তাই, এই নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন ৷" শাসকদলের মনোনয়ন দাখিলের প্রক্রিয়া নিয়ে যখন বিরোধী দলের তরফে নানা অভিযোগ করা হচ্ছে । তখন সিপিএমের এই নেতার এমন বিস্ফোরক দাবি এক নতুন মাত্রা যোগ করল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ।
শুক্রবার বিকেলে উত্তর 24 পরগনার বারাসতে সিপিএমের জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী । সেখানেই মনোনয়ন দাখিলের প্রক্রিয়া নিয়ে শাসকদলের দিকে একাধিক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি । সুজনের মতে, "প্রথম দিকে তৃণমূলের কোনও মনোনয়ন জমা পড়েনি । কারণ, প্রার্থী ঘোষিত হয়নি । পরে প্রার্থী ঘোষণা হতেই মনোনয়নের শেষ দু'দিনে 73 হাজার আসনের চেয়ে আরও 10 হাজার বেশি মনোনয়ন জমা পড়ল ৷"
আর এতেই খটকা লেগেছে সিপিএমের এই নেতার মনে । তিনি বলেন, "মনোনয়ন যদি জমাই পড়ে থাকে, তাহলে লাইন কোথায় ছিল তৃণমূলের ? কেউ দেখতে পেল না ? প্রার্থীরা কি সবাই মনোনয়ন দাখিল করতে ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন ? গিয়েছিলেন রিটার্নিং অফিসারের কাছে ? সিসিটিভি ফুটেজে কি ছবি পাওয়া যাবে ? নাকি সবটাই গোপনে, চুপিসারে হয়েছে তৃণমূলের মনোনয়ন দাখিল ?" সুজনের কথায়, "লাইনে কেউ দাঁড়াল না । সিসিটিভি ফুটেজে ছবি নেই । অথচ, মনোনয়ন দাখিল হয়ে গেল । এর পিছনে অবশ্যই কোনও গোলযোগ রয়েছে ৷"
আরও পড়ুন: অভিষেকের নির্দেশের পরও বিক্ষুব্ধদের মনোনয়ন জমা, উত্তর 24 পরগনায় অস্বস্তিতে তৃণমূল
এই প্রেক্ষিতে প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী । তিনি বলেন, "উত্তর 24 পরগনা জেলায় গতকালের সরকারি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনা হয়নি । জেলায় কত মনোনয়ন জমা পড়ল, তাও তুলে ধরেনি প্রশাসন । এরকম আরও অনেক জেলা রয়েছে । যেখানে মনোনয়ন দাখিল নিয়ে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি । ফলে, হিসাব কষতে হচ্ছে ! তাই মানুষকে কি আবডালে রেখেই এই মনোনয়ন জমা পড়ল ? সেটি কি আইনি ? বেআইনি এই ব্যবস্থা কে করলেন ? সঠিক তদন্ত হলেই সব বেরিয়ে আসবে ৷"
এদিকে, রাজ্যপালের ভাঙড় সফর প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "একজন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে উনি ভাঙড়ে যেতেই পারেন । সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে বার্তা দেবেন, এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয় রাজ্যপাল যখন ভাঙড়ে গেলেন রাস্তাঘাট শুনশান ! পথেঘাটে বোমা, বোমার সুতলি পড়ে রয়েছে । অথচ পুলিশ দেখতে পেল না । সেই বোমা নাকি উদ্ধার করছে রাজ্যপালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় জওয়ানরা । রাজ্যের মানসম্মান কোথায় যাচ্ছে ! পুলিশের কর্তারাই পুলিশকে অযোগ্য প্রমাণ করার চেষ্টা করছে ৷"
অন্যদিকে, রাজ্যপালের মুখে তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার নাম উঠে আসায় তাঁকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি সিপিএমের এই কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ।
আরও পড়ুন: মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার পথে আইএসএফের উপর হামলা, কাঠগড়ায় তৃণমূল