বারাসত, 18 এপ্রিল: অনুমতি ছিল না, তবুও দলের ধৃত 10 বাম ছাত্র-যুব কর্মীর মুক্তির দাবিতে পুলিশের নাকের ডগায় মিছিল করেছে জেলা সিপিএম। অবাক করার বিষয়, অনুমতিহীন সেই মিছিল থানার সামনে থেকে গেলেও তা আটকানোর চেষ্টা করেনি পুলিশ। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসতে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, অনুমতি না-থাকার পরও কেন পুলিশ সিপিএমের মিছিলে বাঁধা দিল না ? তাহলে কি জেলা পরিষদ অশান্তি কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি এড়াতেই পুলিশ 'ধীরে চলো'-নীতি নিয়েছে? মঙ্গলবারের মিছিলের পর এমনই প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
দুর্নীতি-সহ একাধিক ইস্যুতে 11 এপ্রিল বাম ছাত্র-যুব সংগঠনের উত্তর 24 পরগনা জেলা পরিষদ অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বারাসতে। হামলা, ভাঙচুর, ধস্তাধস্তিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল এলাকায় ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতেও দেখা গিয়েছে ৷ সেই সময় পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছিল, আন্দোলনকারীদের হামলায় ওইদিন বেশ কয়েকজন তাঁদের কর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে আবার হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয়েছে। অন্য়দিকে পুলিশের দাবি নস্যাৎ করে পালটা তাঁদের ওপরে লাঠিচার্জের অভিযোগ এনেছিলেন আন্দোলনকারীরা ৷ কয়েকজন মারাত্মক জখন হয়েছেন বলে দাবি করেন বাম নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ আনেন তাঁরা। অশান্তির ঘটনায় সেদিনই পুলিশ 10 বাম ছাত্র-যুব কর্মীকে গ্রেফতার করে ৷ ধৃতদের মধ্যে সাতজন এখনও জেল হেফাজতে রয়েছেন। বাকি তিনজনকে অবশ্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এসবের মধ্যেই মঙ্গলবার বিকেলে ধৃত ওই 10 জনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে পথে নামে জেলা সিপিএমের প্রথম সারির নেতারা।
আরও পড়ুন: গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতাদের মুখোশ পরে দুর্গাপুরে সিপিএমের বিক্ষোভ
দলীয় উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছিল মিছিল এবং প্রতিবাদ সভাও। হেলাবটতলা মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়ে, কলোনি মোড়, চাঁপাডালি মোড় হয়ে, থানার সামনে দিয়ে মিছিল গিয়ে শেষ হয় হরিতলা মোড়ে। মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায়, দলের জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী, জেলা নেতা আহমেদ আলি খান, পলাশ দাস প্রমুখ। মিছিল শেষে হরিতলা মোড়ে আয়োজন করা হয়েছিল প্রতিবাদ সভারও।সেখানে দাঁড়িয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সিপিএমের জেলা নেতারা। সূত্রের খবর,এদিনের কর্মসূচির জন্য পুলিশের কাছে সিপিএমের তরফে আবেদন করা হলেও পুলিশ সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি। অর্থাৎ, অনুমতি ছাড়াই কর্মসূচি সংগঠিত করেন সিপিএম নেতৃত্ব।
এই নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক ও জেলা নেতা মানস মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "নিয়ম মেনেই আবেদন করা হয়েছিল পুলিশের কাছে। যতদূর জানি রাজ্যের কোথাও এখন 144 ধারা চলছে না কিংবা বিধিনিষেধ নেই। তা সত্ত্বেও অনুমতি দেওয়া হয়নি।পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে। আমরা আমাদের মতো করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেমে এর জবাব দিয়েছি। নিরীহ ওই 10 ছাত্র-যুব কর্মীকে মুক্তি দিতেই হবে। নইলে আন্দোলন চলবে।"