বারাসত, 26 নভেম্বর : বারাসতে কোরোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির দায় মানুষের ঘাড়েই ঠেললেন পৌরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়।দায়ী করলেন সাধারণ মানুষের অসচেতনতাকে।পুজো কাটতে না কাটতে বারাসতে সংক্রমণের হার অনেকটাই বেড়েছে । পুজোর আগে যেখানে গড়ে প্রতিদিন 20 থেকে 25 জন কোরোনায় আক্রান্ত হতেন, সেখানে পুজোর পর সংখ্যাটা বেড়ে গড়ে 30 থেকে 35 জন । সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ার পিছনে এক শ্রেণির মানুষের অসতর্কতাকে-ই দায়ী করেছেন পৌরসভার প্রশাসক।
হোম আইসোলেশনে থাকা সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবার রূপরেখা ঠিক করতে আজ দুপুরে এক বৈঠক আয়োজন করা হয় বারাসত পৌরসভায়। সেই বৈঠকে IMA-এর চিকিৎসক,পৌরসভার প্রশাসক ছাড়াও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হাজির ছিলেন। বৈঠক শেষে বারাসতের সংক্রমণ বাড়ার বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,"এর কারণ মূলত মানুষের অসচেতনভাবে চলাফেরা। আমরা কোরোনা স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম ঠিকভাবে মেনে চলছি না। হোম আইসোলেশনে থাকা সংক্রমিত রোগী বাড়িতে না থেকে বাজার,ঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন । আবার বেশ কিছু মানুষের মুখে মাস্ক থাকার পরিবর্তে কানের তলায় ঝুলছে ।" প্রশাসকের কথায়, "গতকাল বারাসতের একটি বাজারে রক্তদান শিবিরে উপস্থিত হয়ে দোকানদারদের অনুরোধ করেছি,যাঁদের মুখে মাস্ক থাকবে না,তাঁদের যেন জিনিসপত্র বিক্রি করা না হয়। কারণ,মানুষ সচেতন না হলে এই রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার আর কোনও উপায় নেই। কোরোনার প্রতিষেধক যেহেতু এখনও হাতে আসেনি,সেহেতু এই রোগের একমাত্র প্রতিষেধক মাস্ক,হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা।" সাধারণ মানুষকে এই সমস্ত নিয়মবিধি মেনে চলার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। কিছু বেসরকারি ল্যাব কোরোনা পরীক্ষার পরিসংখ্যান ঠিক মতো দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন পৌরসভার প্রশাসক। এই নিয়ে উষ্মা প্রকাশও করেছেন তিনি ।
এদিকে, জেলার কোরোনা গ্রাফ আগের থেকে অনেকটাই নিম্নমুখী হবে দাবি করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়। তিনি বলেন,"কোরোনা টেস্টের সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেড়েছে । ফলে,সংক্রমিত রোগীকে খুঁজে বের করতে সুবিধা হচ্ছে । আমাদের লক্ষ্যই হল টেস্টের সংখ্যা বাড়িয়ে সংক্রমণে লাগাম টানা।সেই কাজে আমরা অনেকটাই সফল হতে পেরেছি।তবে,কোরোনা সংক্রমণ রুখতে সাধারণ মানুষকেও নিয়মবিধি মেনে চলতে হবে।না হলে কোরোনা যুদ্ধে জয়ী হতে পারব না ।" হোম আইসোলেশনে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন,"সংক্রমিত রোগীদের অনেকেই সেফ হোমে থাকতে চাইছেন না। সেই কারণে সরকার হোম আইসোলেশন থাকা রোগীদের জন্য টেলি পরিষেবার মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে । তবে সাধারণ মানুষকে আমরা বলব, সেভ হোমে থেকেই চিকিৎসা করাতে। কারণ, জেলার ২৭ টি সেভ হোমই উন্নত মানের।সেখানে সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে"।
প্রসঙ্গত, কোরোনায় মৃত্যু হার কমাতে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের জন্য চিকিৎসা পরিষেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে IMA-এর চিকিৎসকদের নিয়ে আলোচনা চলছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে। আজকের বৈঠক তারই অঙ্গ ।