বনগাঁ, 9 জানুয়ারি: নিচে পানায় বুজে যাওয়া যমুনা নদী ৷ তার উপরে একটি বাঁশ দিয়ে তৈরি সাঁকো ৷ যেখান দিয়ে পারাপার করা, আর সাকার্সে ব্যালান্সের খেলা দেখানো দুই সমান ৷ বাজার, স্কুল কলেজ-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে পাঁচ থেকে ছয়টি গ্রামের বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা এই সাঁকো ৷ রাতে, দিনে গ্রামের মহিলা-পুরুষ সকলেই জীবন হাতে নিয়ে নদী পারাপার করছেন ৷ ফলে মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। এমনই ছবি উঠে এল উত্তর 24 পরগনার বনগাঁ ব্লকের মাঠ নিমতলা এলাকায় ৷ স্বাধীনতার 77তম বর্ষেও যেখানে তৈরি হয়নি পাকা সেতু ৷
চৌবেড়িয়া 1 ও চৌবেড়িয়া 2 গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে যমুনা নদী ৷ যার বর্তমান নাম পার্বতী খাল ৷ যমুনা নদীর উপর এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম একটি বাঁশের সাঁকো ৷ সেই বাঁশের সাঁকোটিও একটিমাত্র বাঁশ দিয়ে তৈরি ৷ তার উপর দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন দুই পঞ্চায়েত এলাকার 6টি গ্রামের বাসিন্দা ৷
স্থানীয়দের অভিযোগ, চৌবেড়িয়া 2 পঞ্চায়েতের অধিকাংশ গ্রামের বাসিন্দাদের স্কুল, হাসপাতাল ও বাজার-সহ অন্যান্য কাজের জন্য চৌবেড়িয়া 1 পঞ্চায়েতে আসতে হয় ৷ আর তাঁদের চলাচলের একমাত্র ভরসা নাকি, এই বাঁশের তৈরি সাঁকো ৷ আর দিনের ব্যস্ত সময়ে লোকজনের ভিড়ে প্রায় বুজে যাওয়া পার্বতী খালে ঝুঁকে পড়ে বাঁশের সাঁকোটি ৷ প্রতিনিয়ত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে করতে হয় পারাপার ৷ তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন সরকারি অফিসে বহুবার পাকা সেতু তৈরির দাবি জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি ৷ অভিযোগ পাকা সেতু তৈরির কোনও উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা ৷
প্রায়শই সেখানে কোনও না কোনও দুর্ঘটনা ঘটে ৷ তবুও, প্রয়োজনের তাগিদে একটি বাঁশের উপর পা রেখে পার্বতী খালের উপর দিয়ে চলাচল করতে হয় গ্রামবাসীদের ৷ তাদের অভিযোগ, বছর পাঁচেক আগে এই নদীর উপর পাকা সেতু তৈরির শিলান্যাস হয়েছিল ৷ গ্রামবাসীদের মিষ্টি মুখও করানো হয়েছিল ৷ কিন্তু, সেই সেতু আর হয়নি ৷
এই বিষয়ে চৌবেড়িয়া 1 গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তপন হাজরা বলেন, "সত্যিই ওই এলাকার সাধারণ মানুষের সমস্যা হচ্ছে ৷ আমরা জেলা পরিষদে চিঠি করেছি ব্রিজটি নির্মাণ জন্য ৷" যদিও তাঁর দাবি, "ব্রিজের জন্য কোনও শিলান্যাস হয়নি ৷ রাস্তার জন্য হয়েছিল ৷ গ্রামবাসীরা হয়তো ভুল বুঝেছেন।"
বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত চাইলে বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকা দিয়ে সাঁকো তৈরির কাজ করাবেন তিনি ৷ যদিও, তিনি অভিযোগ করেছেন, বিজেপি বিধায়কদের তহবিলের টাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে জেলা তৃণমূলের তরফে ৷ তাঁর পরামর্শ, এই ধরনের নোংরা রাজনীতি বন্ধ করে, সাধারণ মানুষের উন্নয়নের কাজে এগিয়ে আসুক শাসকদল ৷
আরও পড়ুন: