বারাসত, 17 ফেব্রুয়ারি: মেয়াদ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশের পর এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের 'অবস্থানের পরিবর্তন' নিয়ে কটাক্ষের সুর শোনা গেল তৃণমূলের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর গলায় (MLA Chiranjeet Chakraborty)। তাঁর মতে, "ধনকড় গেমস ইজ স্টার্টেড! অর্থাৎ, ধনকড়-খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। উনি (সিভি আনন্দ বোস) ধনকড়ের পথেই যাচ্ছেন। ধনকড়ের পথে গেলে ওঁকে আর সরানো হবে না। রাজ্যপালের পদেই থেকে যাবেন।"
কিছুদিন আগেই নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বারাসতে এক সরকারি কর্মসূচিতে এসে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন শাসকদলের এই তারকা বিধায়ক। ওইদিন চিরঞ্জিৎ বলেন, "এই রাজ্যপাল একজন পারফেক্ট নিরপেক্ষ লোক। তিনি যেভাবে সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছেন তাতে রাজ্যপালের মেয়াদ কমিয়ে আনা হতে পারে। বেশিদিন রাজ্যপাল হিসেবে এখানে তাঁকে টিকতে দেবে না কেন্দ্র।" এমনকী, বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাঁর পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবেন কি না, তা নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী।
তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্যের এক সপ্তাহ কাটতে না-কাটতেই এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিয়ে কটাক্ষ ধেয়ে এল সেই চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর থেকেই। তাও এমন একটা সময়ে যখন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের অবস্থানের পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। যা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পরিবেশও তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যে। বৃহস্পতিবার রাতে বারাসতের জগদিঘাটা কাজীপাড়ায় এক ফুটবল টুর্নামেন্টে অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী।
সেখান থেকে বেরনোর সময় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিয়ে তাঁর করা মন্তব্যের ব্যাখা দিতে গিয়ে চিরঞ্জিৎ বলেন, "আমি বলেছিলাম, কেন্দ্রের কথা না-শুনে উনি যদি সরকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলেন তাহলে রাজ্যপাল তাঁর পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবেন না। সরে যেতে হবে ।কিন্তু, এখন তো থাকবেন। কোনও সমস্যা নেই। কারণ, উনি তো ওদের কথা মেনে নিচ্ছেন। নন্দিনী চক্রবর্তীকে সরিয়ে দিলেন রাজভবন থেকে। অর্থাৎ আমার কথায় হুবহু মিলে গেল!" এদিকে, রাজ্যপালের এই পট পরিবর্তনকে শাসক শিবির যে ভালোভাবে মেনে নিচ্ছে না, তা স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূলের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর কথাতেই।
আরও পড়ুন: জটুদা তৃণমূলে থাকলে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিতেন, কল্যাণের বিতর্কিত মন্তব্যের নিন্দা বিজেপির
তিনি বলেন, "একজন সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষ যেভাবে সংবিধান মেনে রাজ্যপালের কাজ করতে চাইছিলেন সেখানে কোথাও যেন বাঁধা দেওয়া হল! এটা মনে হয়েছে আমার।" অন্যদিকে, তৃণমূলের পাঁচ বারের বিধায়ক তথা অধুনা বিজেপি নেতা জটু লাহিড়ীর প্রয়াণে যেন বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না-কিছুতেই। সেই বিতর্ক আরও বাড়িয়েছেন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী নিজেই। তিনি বলেন, "রাজনীতিতে দলবদল তো চলবেই। থাকবেই এটা। কিছু করার নেই। তাঁর চলে যাওয়াটা বড় কষ্টের। দল পরিবর্তন করলেন ঠিকই। তবে, আমাদের দলে থাকলেই মনে হয় ভালো হত।" এরপরই ডোমজুড়ের দলীয় বিধায়কের মন্তব্যকে সমর্থন করে চিরঞ্জিৎ বলেন, "হয়তো সেটাই। আমারও তো সেটাই মনে হচ্ছে। সেটাই হওয়ার কথা। আমার সঙ্গে দলবদল নিয়ে বাবলু সুপ্রিয়'র কথা হচ্ছিল। বাবলুও বলছিল, ও বিজেপির থেকে বেশি সন্মান পাচ্ছে তৃণমূল দলে এসেই। ওখানে কেউ সন্মান পাবে না ঠিকমতো।"