বারাসত, 10 জুলাই: বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের পর এবার তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর গলাতেও আক্ষেপের সুর । পঞ্চায়েত ভোটে বাংলায় মৃত্যু মিছিল নিয়ে বাঙালি হিসাবে লজ্জিত বলে জানালেন বিধায়ক চিরঞ্জিত। রিগিং, ছাপ্পা ভোট করে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না, স্পষ্টবার্তা শাসকদলের এই তারকা বিধায়কের। এ প্রসঙ্গে বামশাসনের কথা তুলে ধরেন তৃণমূল বিধায়ক ৷
সোমবার বিকালে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বারাসতে এক ফুটবল টুর্নামেন্টের পুরষ্কার বিতরণি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন চিরঞ্জিত। সেই কর্মসূচি শেষে ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবিরের বিস্ফোরক মন্তব্য প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তৃণমূলের তারকা বিধায়ক বলেন, "বাঙালি হিসেবে কে লজ্জিত নন, বলুন তো ! সকলেই লজ্জিত। আমি নিজেও লজ্জিত । এরকম তো হওয়ার কথা নয় ৷ হওয়া উচিত নয় ৷ মৃত্যু কেন হবে ? এটা যেমন বাস্তব। তেমনই এর সঙ্গে আমাদের পার্টির কী সম্পর্ক রয়েছে? এটা হয়েছে সকলের মিলিত যোগে। আমাকেও বিদেশে যেতে হয়। সেখানে সবাই যখন একথা বলবে, তখন আমারও শুনতে ভালো লাগবে না।"
তিনি আরও বলেন, "ভোটে হিংসা, মৃত্যু, বঙ্গ রাজনীতিতে ট্র্যাডিশন হয়ে গিয়েছে। আজকের নয়। এটা অনেক বছর ধরে হয়ে আসছে। নতুন কিছু নয়। তবে, আমি যেটা উপলব্ধি করেছি, 34 বছর ধরে রাজত্ব করার পরও এরকমই শাসকদল বুঝতে পেরেছিল, ইচ্ছে করলেই ভোটে জেতা যায় না। কারণ, 235 আসন পেয়েও বামেদের হারতে হয়েছিল পরের ভোটে। এটাই বাস্তবতা। তাই, মানুষ যখন সত্যি সত্যি ঘুরে যাবে, কাউকে প্রত্যাখ্যান করবে, তখন কিন্তু এভাবেও (রিগিং, ছাপ্পা ভোট) ভোটে জিততে পারবে না। যেটা বামফ্রন্ট করেও একসময় জিততে পারেনি।"
তবে, এখন যেটা চলছে সেই পরিস্থিতির বিচার করার ভার চিরঞ্জিত ছেড়ে দিয়েছেন মানুষের ওপরই। তাঁর কথায়, "বিজেপি কাকে মারল, তৃণমূল কাকে মারল, তা দিয়ে কিছু হবে না। রেজাল্ট যা হওয়ার তা ভোটেই হবে। সিপিএম আমলে বিরোধীরা ওদের মেরেছে, খুন করেছে এমন কোনও রেকর্ড নেই। যেটা এখন ওরা করছে। তৃণমূলের এত লোক মারা গেল, যা সংখ্যায় অনেক। এটা খুবই দুঃখের। যত মৃত্যু হয়েছে তা বুথ শতাংশের নিরিখে নেহাতই কম।"
আরও পড়ুন: 'বাঙালি হিসেবে লজ্জিত', ভোটে মৃত্যু দেখে ক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির
অন্যদিকে, রাজ্যপালের দিল্লি সফরকে কটাক্ষ করে চিরঞ্জিত বলেন, "যেখানে চাকরি করছেন, যে বাড়িতে থাকছেন সেখানে সতেজ হাওয়া তিনি পাচ্ছেন না! সতেজ হাওয়া খেতে ওনাকে দিল্লি যেতে হবে। এটা যেমন দুঃখের তেমন লজ্জার।আমার অনুরোধ, রাজ্যপাল যেন দিল্লিতেই থাকেন। এখানে আসার দরকার নেই।"