কলকাতা, 25 অগাস্ট : প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিল নিতান্তই অনুপ্রবেশকারী । বাংলাদেশে ফিরতে গিয়ে ধরা পড়েছে BSF-এর হাতে । কিন্তু ধৃতের আচরণ সন্দেহজনক । সেই সূত্রে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেওয়া হয় । আর সেই সূত্র ধরে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মেয়েদের মুম্বইয়ের কানাগলিতে হারিয়ে যাওয়ার এক বড়সড় চক্রের পর্দা ফাঁস হল । নারী পাচার চক্রের কিংপিন মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । খোঁজ চলছে এই চক্রে জড়িতদের । সূত্রের খবর, এই চক্রে জড়িত রয়েছে বাংলাদেশেরও বেশ কয়েকজন ৷ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে ৷
সীমান্তরক্ষী বাহিনী সূত্রের খবর, গত রবিবার সীমান্ত লাগোয়া হাকিমপুর থেকে সন্দেহজনক এক মহিলাকে হেপাজতে নেয় BSF । ধৃতের নাম জাহানারা খাতুন (29) । ওই যুবতি আদতে বাংলাদেশের গাজিপুর জেলার বাসিন্দা । প্রাথমিকভাবে ওই যুবতি জানায়, 8 মাস আগে স্বামী প্রান্ত মণ্ডলের সঙ্গে সে এদেশে আসে । প্রান্ত মুম্বইয়ের কল্যাণে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। সেখানে মমতাজ নামে এক মহিলার বাড়িতে ভাড়া থাকে তারা । প্রান্ত ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে চলে গেছে । আজ ওই যুবতির বাংলাদেশ পালানোর পরিকল্পনা ছিল । প্রাথমিকভাবে ধৃত মহিলা এমনটাই জানায় BSF কর্তৃপক্ষকে ৷ কিন্তু, পুরো বিষয়টি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সিনিয়র জওয়ানদের সন্দেহজনক বলে মনে হয় । তাঁরা নারী পাচার বিরোধী এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বিশেষজ্ঞদের পুরো বিষয়টি জানান । এরপরই ওই সংগঠনের বিশেষজ্ঞরা যুবতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ৷ এরপরেই বেরিয়ে আসে নারী পাচার চক্রের কাহিনী ৷
জানা গিয়েছে, এদেশে ওই যুবতি পিঙ্কি মণ্ডল নামে পরিচিত । ওই নামে প্যান কার্ড থেকে শুরু করে ভোটার কার্ড পর্যন্ত করে ফেলেছে সে । 8 মাস আগে নয়, 2009 সাল থেকে ভারতে বসবাস করছে জাহানারা । সেই সময়ে অবৈধভাবে ভারতে ঢুকে মুম্বই যায় । সেখানে শুরু করে দেহ ব্যবসা । সেই সূত্রেই আলাপ হয় আর এক বাংলাদেশি প্রান্ত মণ্ডলের সঙ্গে । প্রান্তকে বিয়ে করে জাহানারা । অভিযোগ, বিয়ের পর দুজনে মিলে নারী পাচার চক্রের ব্যবসা শুরু করে ৷ বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া কিশোরী-যুবতিদের নিয়ে ভারতে ব্যবসা শুরু করে বলেও অভিযোগ ওঠে ৷ মাঝেমধ্যে কলকাতা কিংবা উত্তর 24 পরগনায় আসত সে ৷ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া কিশোরী-যুবতিদের নিয়ে পাড়ি দিত মুম্বই ৷ বেশকিছু ভারতীয় ও বাংলাদেশি নাগরিকরা এই পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বলেও জানা গিয়েছে ৷ সূত্রের খবর, পাচারচক্রের সঙ্গে আমজাদ নামে এক বাংলাদেশি যুবক জড়িত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ এই পাচার চক্রের সঙ্গে উত্তর 24 পরগনার গোবরার শাহিন নামে এক ব্যক্তির নামও জানা গিয়েছে ৷ অপরদিকে, ধৃত ওই মহিলাকে স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৷