বারসত, 30 অক্টোবর : দাদা বাড়ি ফিরলেও, ফেরা হয়নি বোনের ৷ কাঁটাতারের বেড়া এবার তাদের ভাইফোঁটায় বাধ সাধল । দাদা যখন পদ্মাপারে ভাইফোঁটা পাওয়ার অপেক্ষায় । তখন পুরো দিন হোমেই কাটল বোনের ।
বাড়ি বাংলাদেশের ফরিদপুরে । কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে 2008 সালে এদেশে ঢুকে পড়েছিল বাংলাদেশের দুই ভাই-বোন পল্লব বালা (14) ও প্রিয়া বালা (১২)৷ বৈধ কাগজপত্র না থাকায় বনগাঁ থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় তারা । নাবালক দুজনকেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় সরকারি হোমে । তবে এক জায়গায় নয় । পল্লবের আশ্রয় হয় বারাসত কিশলয় হোমে । আর প্রিয়াকে রাখা হয় বিধাননগরের সুকন্যা হোমে । ভিন্ন সরকারি হোমেও থাকলে গতবছর একই রাজ্যে ভাই-বোন ।
কিশলয় হোমে এসে নিজের ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিতে পেরেছিল প্রিয়া । এবছর ষষ্ঠীর দিন দাদা পল্লব বালাকে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয় বারাসতের কিশলয় হোম কর্তৃপক্ষ । পল্লব বাবা মায়ের কাছে ফিরলেও, থেকে যায় বোন । প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরী না হওয়ায় প্রিয়া এখনও সুকন্যা হোমেই আছে ।
দাদা চলে যাওয়ার দুঃখ থাকলেও গতকাল বারাসতের কিশলয় হোমে এসেছিল প্রিয়া । অনেকের সঙ্গে সেও কিশলয় হোমের আবাসিক ভাইদের কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়েছে । দুপুরে এলাহি আয়োজনের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল কিশলয় হোমে । মেনুতে ছিল সাদা ভাত, মাছের মাথা দিয়ে মুগের ডাল, বাঁধাকপি, কাতলা মাছের কালিয়া, চিকেন কষা, চাটনি, পাঁপড় ও দই-মিষ্টি । এই বিষয়ে, বারাসত কিশলয় হোমের সুপার মলয় চ্যাটার্জি বলেন, "দাদাকে ফোঁটা দিতে না পারলেও ছোট্ট প্রিয়া হোমের অন্য আবাসিকদের ভাইফোঁটা দিয়েছে । এভাবেই বাঙালির এই ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার সংস্কৃতি এগিয়ে যাক ।"
এই বিষয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চায়নি সুকন্যা হোম কর্তৃপক্ষ । তবুও সবকিছুর মাঝে ভাইফোঁটার দিন দাদাকে না দেখার একটা আক্ষেপ যেন থেকেই গেল প্রিয়ার মনে ।