ঠাকুরনগর, 1 জানুয়ারি : কবি বিনয় মজুমদারের সাহিত্য অ্যাকাডেমি স্মারক চুরিতে ক্ষুব্ধ সাহিত্য জগৎ । মঙ্গলবার সকাল থেকে কবির বাড়ির সামনে ভিড় করেন স্থানীয় কবি, সাহিত্যিকরা । মধ্যমগ্রামে বইমেলাতেও শোনা গেল ক্ষোভের সুর । অন্যদিকে, গতকাল সকালে কবির বাড়ির অদূরে মিলেছে সাহিত্য অ্যাকাডেমি স্মারকের বাক্সটি । তবে এখনও স্মারকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি ৷
সোমবার রাতে কবি বিনয় মজুমদারের ঠাকুরনগরের বাড়ির লাইব্রেরি থেকে চুরি যায় সাহিত্য অ্যাকাডেমি স্মারকটি । ওইদিন সন্ধের পরে লাইব্রেরি খুলতে গিয়ে ঘরের ছিটকানি ও আলমারির তালা ভাঙা অবস্থায় দেখেন স্মৃতিরক্ষা কমিটির সদস্যরা । অ্যাকাডেমির স্মারকটি চুরি হলেও অন্যান্য জিনিস অবশ্য অক্ষতই ছিল । রাত পোহাতেই স্মারক চুরির খবর ছড়িয়ে পড়ে । কবির বাড়ির সামনে ভিড় করেন বিনয় অনুরাগীরা । স্থানীয় কবি, সাহিত্যিকরাও জড়ো হন ।
কবির সাহিত্য অ্যাকাডেমি স্মারক চুরিতে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন । কবি তীর্থঙ্কর মৈত্র বলেন, "অ্যাকাডেমির স্মারকের বাক্সটি কবির বাড়ির সবেদা গাছের গায়ে আঘাত করে ভাঙা হয়েছে । কারা এমন নিকৃষ্ট কাজ করতে পারেন আমি জানি না । পুলিশ তদন্ত করুক।" ঠাকুরনগরের বাসিন্দা বিনয় অনুরাগী বৈদ্যনাথ দত্ত বলেন, "আমরা ভীষণ লজ্জিত বিনয় মজুমদারের সাহিত্য অ্যাকাডেমি স্মারকটা চুরি হয়ে গেল ।"
এই সংক্রান্ত খবর : চুরি গেল কবি বিনয় মজুমদারের সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার
মধ্যমগ্রাম বইমেলায় হাজির ছিলেন সাহিত্যিক অশোককুমার চক্রবর্তী । তিনি বিনয় মজুমদারের স্মারক চুরিতে স্তম্ভিত । বলেন, "কবিগুরুর নোবেল আমরা রক্ষা করতে পারিনি । কবি বিনয় মজুমদারের অ্যাকাডেমি স্মারকটাও চুরি হয়ে গেল । এটা কী সংস্কৃতি চলছে বাংলায়! কবি, সাহিত্যিকদের সম্মান আর রইল কোথায়?" সাহিত্যপ্রেমী সুমন সাহা বলেন, "কবি বিনয় মজুমদারের স্মারক চুরি হয়ে গেল । ভাবতেই কেমন লাগে । সত্যিই আমরা কোন সংস্কৃতির মধ্যে বাস করছি । রবি ঠাকুরের নোবেলটা আজও পাওয়া যায়নি । জানি না কবি বিনয় মজুমদারের স্মারকটাও আর পাওয়া যাবে কি না । কবি-সাহিত্যিকদের সম্মানের মানদণ্ড কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ।"
মধ্যমগ্রাম বইমেলা কমিটির সভাপতি অজয় পাল বলেন, "আমরা আজ স্তম্ভিত হয়ে যাচ্ছি । বিনয় মজুমদারের সাহিত্য অ্যাকাডেমি স্মারকটাও দুষ্কৃতীরা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে । এ কোন দেশে আমরা বাস করছি ।" বিনয় মজুমদারের অ্যাকাডেমি স্মারক চুরিতে ক্ষোভ দেখা গেল জেলাজুড়েই । কবির বাড়ির লাইব্রেরিতে রয়েছে রবীন্দ্র পুরস্কারের স্মারকও । রয়েছে কবির হাতের লেখা পাণ্ডুলিপিও । প্রশ্ন উঠছে, সেগুলোও রক্ষা করা যাবে তো?