দত্তপুকুর, 27 অগস্ট: দত্তপুকুরে বাজি কারখানার বিস্ফোরণস্থল থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরেই সন্ধান মিলল বোমা তৈরির ল্যাব ! অভিযোগ, বোমা থেকে বাজি তৈরির প্যাকেজিং, সবই চলত এখানে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিত্যক্ত একটি ইট ভাটাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল বে-আইনি এই কাজের জন্য । যাতে কারও সন্দেহ না হয়।
ইট ভাটা চত্বরের আশপাশে বোমার ল্যাবের জন্য বেশ কয়েকটি ঘরও তৈরি করা হয়েছিল বলে দাবি স্থানীয়দের। যেখানে বাজি অথবা বোমা জাতীয় বিস্ফোরক তৈরির মশলা এবং আরও নানা ধরনের সরঞ্জাম মজুত করে তা ল্যাবে পরীক্ষা করা হত বলে অভিযোগ। ঘটনার পরপরই বোমা তৈরির ওই ল্যাবে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন স্থানীয়রা। ছাড় পায়নি মারুতি ভ্যানও। যেটি বেআইনি ওই বোমা ল্যাবের মালিকের বলে দাবি করছে এলাকাবাসী ৷
ঠিক যেন এগড়া কাণ্ডের অ্যাকশন রিপ্লে দত্তপুকুরে! দত্তপুকুর বিস্ফোরণে ইতিমধ্যেই সাত জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। ছেলে-সহ নিহত বেআইনি বাজির কারবারি কেরামত আলিও। এগড়া কাণ্ডের পর রাজ্যজুড়ে পুলিশি তল্লাশিতে গ্রেফতার হয়েছিলে দত্তপুকুরের এই কেরামত আলিও। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরও ফের বেআইনি বাজির কারবার চালাচ্ছিল কেরামত আলি ৷ স্বভাবতই পুলিশি নজরদারি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
সূত্রের খবর, এগড়া কাণ্ডের পর রাজ্যজুড়ে ধরপাকড় শুরু হয়। বেরুনান পুকুরিয়া এলাকায় ব্যবসা করছিল কেরামত। এখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু কেন? কারণ, 2021 সালের পর থেকে এই কেরামত আলি বেআইনিভাবে কারখানা চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। 2021 সালের পর তার লাইসেন্স রিনিউ পর্যন্ত হয়নি। গ্রেফতারির পর জামিনে ছাড়াও পেয়ে যায় কেরামত। জামিন পাওয়ার পর ওই এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বেআইনি কারবার শুরু করেছিল সে। জনবহুল এলাকায় বাজি কারখানা করে বাজি মজুত শুরু করে। যার জেরে আজ একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, পুলিশি নজরদারি নিয়ে।
আরও পড়ুন: সস্তার চাইনিজ মশলা ও তা ব্যবহারে অজ্ঞতার কারণেই হচ্ছে বিস্ফোরণ, মত গোয়েন্দাদের
এদিকে, বোমা তৈরির ল্যাব হোক কিংবা মোচপোল এলাকায় বে-আইনি বাজি কারখানা। সবেতেই স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের ইন্ধনেই বেআইনি এই বাজি কারখানার রমরমা বলেও অভিযোগ এলাকার লোকজনের। ভয়ে প্রতিবাদ করার কেউ সাহস পেতেন না, জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে, বাজি বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক টিমের সদস্যরা।