ETV Bharat / state

Barrackpore Police: বাবা-মায়ের বকুনি বা প্রেমে প্রত্যাখ্যান, কিশোর-কিশোরীদের মনের কথা শুনবে 'পুলিশ দিদি'

আত্মহত্যার প্রবণতা রুখতে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের নয়া উদ্যোগ ৷ এবার পড়ুয়াদের মনের কথা শুনবে পুলিশ দিদি ৷ বিস্তারিত জানতে পড়ুন প্রতিবেদন ৷

Etv Bharat
মনের কথা পুলিশ দিদির সঙ্গে
author img

By

Published : May 16, 2023, 9:29 PM IST

মনের কথা পুলিশ দিদির সঙ্গে এই প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন পুলিশ কমিশনার

ব্যারাকপুর, 16 মে: বর্তমানে কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার সংখ্যা অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে ৷ কারণ হিসেবে দেখা গিয়েছে বাবা-মায়ের বকুনি, প্রেমে আঘাত, স্কুল বা প্রাইভেট মাস্টারের শাসন, পরিচিত কারওর কাছে যৌন হেনস্তা ইত্যাদি বিষয়গুলি উঠে এসেছে ৷ কাউকে না বলতে পারায় ভিতরে ভিতরে গুমরে থাকতে থাকতে একসময় চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে তারা ৷ কিন্তু এতে কোনও সমস্যার সমাধান তা হয়ই না বরং বাবা-মায়ের কোল খালি হয়ে যায় ৷ পরিবার হারিয়ে ফেলে তাদের প্রিয়জনকে ৷

এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে এবার নয়া উদ্যোগ নিল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ৷ মঙ্গলবার উদ্বোধন হল তাদের নয়া প্রকল্প 'মনের কথা পুলিশ দিদির সাথে' ৷ এই প্রকল্পে কিশোর-কিশোরীরা তাদের মনে কথা বলতে পারবে পুলিশ দিদি অর্থাৎ মহিলা পুলিশের সঙ্গে ৷ তার জন্য দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট ফোন নম্বরও ৷ সেটি হল 9147890326 ৷ প্রয়োজনে হোয়াটস অ্যাপও করা যেতে পারে ৷ সেই নম্বরটি হল 9147889554 ৷ এখানে যোগাযোগ করে নিজেদের সমস্যা যা তারা বাড়িতে বা কাউকে বলতে পারছে না সেগুলি বলতে পারবে ৷ সে অভিমানই হোক বা অন্য কোনও কারণ ৷

কারওর সঙ্গে নিজেদের দুঃখ-কষ্ট শেয়ার করলে মন অনেকখানি হালকা হয় ৷ মাথা হয় কিছুটা চাপমুক্ত ৷ এই বিষয়টা আমরা সবাই জানি ৷ তাই এহেন উদ্যোগের মাধ্যমে ছোটখাটো কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে বলেই মনে করছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ৷

এই প্রকল্পের এক পুলিশ দিদির কথায়, কিছুদিন আগে সোদপুরের সুখচরে বেশি মোবাইল দেখার জন্য মা বকাবকি করেছিলেন মেয়েকে । অভিমানে সেই ছাত্রী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে । অপর একটি ঘটনায় মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেছিল এক স্কুল ছাত্র । পরিবারের লোকজন রাজি হননি । আর সেই অভিমানে ওই স্কুল ছাত্র আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় । দু'টি ঘটনাই ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকার । এগুলি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় ৷ এই শিল্পাঞ্চলে এই ধরনের ঘটনা আকছার ঘটছে ।

নিজের পছন্দমতো কোনও কিছু না পেলেই অভিমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে ভবিষ্যতের কারিগররা । কমিশনারেট এলাকায় একাধিক থানায় এহেন আত্মহত্যার ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হচ্ছে । ফলে দেশের ভবিষ্য়তদের অকালে ঝরে যাওয়া থেকে বাঁচাতেই তাদের মনের কথা শুনবে পুলিশ ৷ সেই জন্যই এই উদ্যোগ ।

এই প্রকল্প ব্যাখা করতে গিয়ে পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন,"নির্দিষ্ট একটি হোয়াটস অ্যাপ নম্বর চালু করা হয়েছে । সেই নম্বর পুলিশ প্রশাসনের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেবে । সেখানে ফোন করে তারা নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারবে । একজন মহিলা পুলিশ অফিসারকে এই কাজের জন্য নিয়োগ করা হবে ।

আরও পড়ুন : 'মাকে কোনও দিন সুখ দিতে পারলাম না !' সুইসাইড নোট লিখে 'আত্মঘাতী' যুবক

বন্ধুর সঙ্গে মনোমালিন্য, প্রেমে ব্যর্থ, শিক্ষকের শাসন, বাবা-মায়ের বকাঝকা, নিজের অত্যন্ত পরিচিত কারওর দ্বারা যৌন হেনস্তা বা শ্লীলতাহানির শিকার হওয়া ইত্যাদি সমস্ত কিছুতেই সাহায্য চাইলে পুলিশ দিদির সঙ্গে কথা বলতে পারবে । পুলিশ দিদিও প্রয়োজন মতো তার সঙ্গে কথা বলবে ৷ প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করবে । এমনকী পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন হলে সেটাও নেওয়া হবে । মূলত, কী বিষয় নিয়ে তারা অভিমানে বা সমস্যায় রয়েছে তা জেনে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হবে কমিশনারেটের কর্তারা ।"

ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া আরও বলেন, "এই উদ্যোগের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া যাবে । অনেক সময় তাদের ঠিকমতো কাউন্সেলিং না করার জন্য তারা না বুঝে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে । সেটা রুখতেই আমাদের এই পদক্ষেপ । এর আগে 'পুলিশ বন্ধু'র মত কর্মসূচি নিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার । সেই কর্মসূচিতেও ভালই সাড়া পাওয়া গিয়েছে । এবার নতুন কর্মসূচি, 'মনের কথা পুলিশ দিদির সাথে'। এতেও সাফল্য আসবে বলেই বিশ্বাস আমাদের ৷"

আরও পড়ুন : ‘আত্মহত্যা নয়’, বার্তা দিতে বাইক নিয়ে দেশভ্রমণ অন্ধ্রের যুবকের

মনের কথা পুলিশ দিদির সঙ্গে এই প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন পুলিশ কমিশনার

ব্যারাকপুর, 16 মে: বর্তমানে কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যার সংখ্যা অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে ৷ কারণ হিসেবে দেখা গিয়েছে বাবা-মায়ের বকুনি, প্রেমে আঘাত, স্কুল বা প্রাইভেট মাস্টারের শাসন, পরিচিত কারওর কাছে যৌন হেনস্তা ইত্যাদি বিষয়গুলি উঠে এসেছে ৷ কাউকে না বলতে পারায় ভিতরে ভিতরে গুমরে থাকতে থাকতে একসময় চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে তারা ৷ কিন্তু এতে কোনও সমস্যার সমাধান তা হয়ই না বরং বাবা-মায়ের কোল খালি হয়ে যায় ৷ পরিবার হারিয়ে ফেলে তাদের প্রিয়জনকে ৷

এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে এবার নয়া উদ্যোগ নিল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ৷ মঙ্গলবার উদ্বোধন হল তাদের নয়া প্রকল্প 'মনের কথা পুলিশ দিদির সাথে' ৷ এই প্রকল্পে কিশোর-কিশোরীরা তাদের মনে কথা বলতে পারবে পুলিশ দিদি অর্থাৎ মহিলা পুলিশের সঙ্গে ৷ তার জন্য দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট ফোন নম্বরও ৷ সেটি হল 9147890326 ৷ প্রয়োজনে হোয়াটস অ্যাপও করা যেতে পারে ৷ সেই নম্বরটি হল 9147889554 ৷ এখানে যোগাযোগ করে নিজেদের সমস্যা যা তারা বাড়িতে বা কাউকে বলতে পারছে না সেগুলি বলতে পারবে ৷ সে অভিমানই হোক বা অন্য কোনও কারণ ৷

কারওর সঙ্গে নিজেদের দুঃখ-কষ্ট শেয়ার করলে মন অনেকখানি হালকা হয় ৷ মাথা হয় কিছুটা চাপমুক্ত ৷ এই বিষয়টা আমরা সবাই জানি ৷ তাই এহেন উদ্যোগের মাধ্যমে ছোটখাটো কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে বলেই মনে করছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ৷

এই প্রকল্পের এক পুলিশ দিদির কথায়, কিছুদিন আগে সোদপুরের সুখচরে বেশি মোবাইল দেখার জন্য মা বকাবকি করেছিলেন মেয়েকে । অভিমানে সেই ছাত্রী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে । অপর একটি ঘটনায় মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেছিল এক স্কুল ছাত্র । পরিবারের লোকজন রাজি হননি । আর সেই অভিমানে ওই স্কুল ছাত্র আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় । দু'টি ঘটনাই ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকার । এগুলি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় ৷ এই শিল্পাঞ্চলে এই ধরনের ঘটনা আকছার ঘটছে ।

নিজের পছন্দমতো কোনও কিছু না পেলেই অভিমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে ভবিষ্যতের কারিগররা । কমিশনারেট এলাকায় একাধিক থানায় এহেন আত্মহত্যার ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হচ্ছে । ফলে দেশের ভবিষ্য়তদের অকালে ঝরে যাওয়া থেকে বাঁচাতেই তাদের মনের কথা শুনবে পুলিশ ৷ সেই জন্যই এই উদ্যোগ ।

এই প্রকল্প ব্যাখা করতে গিয়ে পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া বলেন,"নির্দিষ্ট একটি হোয়াটস অ্যাপ নম্বর চালু করা হয়েছে । সেই নম্বর পুলিশ প্রশাসনের নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেবে । সেখানে ফোন করে তারা নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারবে । একজন মহিলা পুলিশ অফিসারকে এই কাজের জন্য নিয়োগ করা হবে ।

আরও পড়ুন : 'মাকে কোনও দিন সুখ দিতে পারলাম না !' সুইসাইড নোট লিখে 'আত্মঘাতী' যুবক

বন্ধুর সঙ্গে মনোমালিন্য, প্রেমে ব্যর্থ, শিক্ষকের শাসন, বাবা-মায়ের বকাঝকা, নিজের অত্যন্ত পরিচিত কারওর দ্বারা যৌন হেনস্তা বা শ্লীলতাহানির শিকার হওয়া ইত্যাদি সমস্ত কিছুতেই সাহায্য চাইলে পুলিশ দিদির সঙ্গে কথা বলতে পারবে । পুলিশ দিদিও প্রয়োজন মতো তার সঙ্গে কথা বলবে ৷ প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করবে । এমনকী পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন হলে সেটাও নেওয়া হবে । মূলত, কী বিষয় নিয়ে তারা অভিমানে বা সমস্যায় রয়েছে তা জেনে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হবে কমিশনারেটের কর্তারা ।"

ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া আরও বলেন, "এই উদ্যোগের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া যাবে । অনেক সময় তাদের ঠিকমতো কাউন্সেলিং না করার জন্য তারা না বুঝে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে । সেটা রুখতেই আমাদের এই পদক্ষেপ । এর আগে 'পুলিশ বন্ধু'র মত কর্মসূচি নিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার । সেই কর্মসূচিতেও ভালই সাড়া পাওয়া গিয়েছে । এবার নতুন কর্মসূচি, 'মনের কথা পুলিশ দিদির সাথে'। এতেও সাফল্য আসবে বলেই বিশ্বাস আমাদের ৷"

আরও পড়ুন : ‘আত্মহত্যা নয়’, বার্তা দিতে বাইক নিয়ে দেশভ্রমণ অন্ধ্রের যুবকের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.