ETV Bharat / state

SSC Illegal Recruitment: আপার-প্রাইমারির বেআইনি চাকরি প্রাপকদের তালিকায় বারাসতের তৃণমূল নেতার ছেলে

author img

By

Published : Dec 26, 2022, 8:19 PM IST

Updated : Dec 26, 2022, 9:08 PM IST

এসএসসি আপার প্রাইমারির 952 জন বেআইনি চাকরি প্রাপকদের তালিকায় বারাসত 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ঈশা হক সর্দারের ছেলে মহম্মদ নাজিবুল্লাহর নাম ৷ যদিও, পুরোটাই ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছেন ঈশা হক সর্দার (TMC Leader Son Named in SSC Illegal Upper Primary Job Recipients list) ৷

SSC Illegal Upper Primary Job Recipients list ETV BHARAT
বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া তৃণমূল নেতার ছেলে
আপার-প্রাইমারির বেআইনি চাকরি

বারাসত, 26 ডিসেম্বর: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার নাম জড়াল উত্তর 24 পরগনার দত্তপুকুরের এক তৃণমূল নেতার ছেলের । এসএসসি আপার প্রাইমারিতে বেআইনি চাকরি প্রাপকদের তালিকায় নাম রয়েছে, তৃণমূল পরিচালিত বারাসত 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ঈশা হক সর্দারের ছেলে মহম্মদ নাজিবুল্লাহর (TMC Leader Son Named in SSC Illegal Upper Primary Job Recipients list) ৷ সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন যে 952 জন বেআইনি চাকরি প্রাপকদের তালিকা প্রকাশ করেছেন ৷ সেই তালিকার একেবারে নিচের দিকে 908 নম্বরে নাম রয়েছে ওই তৃণমূল নেতার ছেলের ৷

অভিযোগ তৃণমূল নেতা ঈশা হক সরদার নিজের প্রভাব খাটিয়ে বেআইনিভাবে ছেলেকে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন ৷ যদিও, অন‍্যান‍্য চাকরি প্রাপক মতো মহম্মদ নাজিবুল্লাহর চাকরিও শেষ পর্যন্ত খোয়া যেতে বসেছে হাইকোর্টের নির্দেশে ৷ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে বারাসত 1 নম্বর ব্লক এলাকায় ৷ আর এই বিতর্কে লেগেছে রাজনীতির রং ৷ এই ইস্যুতে শাসকদলকে নিশানা করতেও ছাড়েনি বিরোধী শিবির ৷ তবে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পালটা চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেতা ঈশা হক সর্দার ৷

দীর্ঘদিন ধরেই বারাসত 1 নম্বর ব্লকে শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত ঈশা হক সর্দার ৷ আগে দত্তপুকুরের তৃণমূল পরিচালিত কোটরা পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন তিনি ৷ বর্তমানে বারাসত 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা ৷ তাঁর বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, দুই ছেলে এবং এক মেয়ে । দত্তপুকুরের পানশিলা এলাকায় বাড়ি ঈশা হক সর্দারের ৷ একতলার ছিমছাম, সাজানো গোছানো বাড়ি ৷ মহম্মদ নাজিবুল্লাহ হলেন ঈশা হকের বড় ছেলে ৷

জানা গিয়েছে, 2016 সালের আপার প্রাইমারির টেট পরীক্ষায় বসেছিলেন নাজিবুল্লাহ ৷ এসএসসি-র প্রকাশিত ওএমআর শিটে একদিকে যেমন তাঁর পরীক্ষার রোল নম্বর, ভেন্যু কোড উল্লেখ রয়েছে ৷ অন‍্যদিকে, তেমনই তিনি আপার প্রাইমারির টেট পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছেন, সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে ৷ অভিযোগ, সেই পরীক্ষায় তিনি অনুত্তীর্ণ হলেও ওএমআর শিট বিকৃত করে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতার ছেলে মহম্মদ নাজিমুল্লাকে ৷

আরও পড়ুন: কল্যাণময়ের জামিন মামলার শুনানিতে সিবিআইয়ের উপর ক্ষোভ প্রকাশ হাইকোর্টের

নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পর তিনি দক্ষিণ 24 পরগনার সোনারপুরের একটি উচ্চ-প্রাথমিক স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক পদে যোগদানও করেন ৷ 2020 সালের শেষের দিকে স্কুলের চাকরিতে যোগ দেন ৷ প্রায় 2 বছরের বেশি সময় ধরে সেই স্কুলেই কর্মরত নাজিবুল্লাহ ৷ তবে, আদালতের রায়ে শেষে চাকরি যেতে বসেছে তাঁর ৷

এই বিষয়ে নাজিবুল্লাহর কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও, তাঁর বাবা বারাসত 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশের ব্যাপারে কিছু বলব না ৷ তবে, এটুকু বলতে পারি আমার ছেলের চাকরিতে কোনও প্রভাব খাটানোর বিষয় নেই ৷ বরং ও পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ায় আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আরটিআই করে নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছিলাম ৷ সেই নিয়োগপত্র নিয়েই ছেলে যোগ দিয়েছিল স্কুলের চাকরিতে ৷ যেহেতু সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন ৷ তাই বিরোধীরা একজোট হয়ে আমার পরিবারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে ৷ এসব নিয়ে এতটুকু বিচলিত নই আমি ৷ আইনি প্রক্রিয়ায় এর মোকাবিলা করব ৷’’

তবে, তৃণমূল নেতা যে দাবি করুন না কেন, বিরোধীরা তাঁকে আক্রমণ করতে ছাড়ছে না ৷ এই বিষয়ে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্র বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে রসাতলে পাঠিয়েছে ৷ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ৷ আমি যতদূর জেনেছি ওই তৃণমূল নেতার ছেলের শিক্ষক পদে চাকরি পাওয়ার কোনও যোগ্যতা নেই ৷ তা সত্ত্বেও স্থানীয় সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে তৃণমূল নেতার ছেলের চাকরি করে দিয়েছেন ৷ আমরা চাই ওই তৃণমূল নেতার ছেলে যতদিন শিক্ষকের চাকরি করেছেন, তাঁর সমস্ত বেতন ফেরতের ব্যবস্থা করা হোক ৷ সেই সঙ্গে তদন্ত করে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ও সাংসদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নিক প্রশাসন ৷’’

আপার-প্রাইমারির বেআইনি চাকরি

বারাসত, 26 ডিসেম্বর: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার নাম জড়াল উত্তর 24 পরগনার দত্তপুকুরের এক তৃণমূল নেতার ছেলের । এসএসসি আপার প্রাইমারিতে বেআইনি চাকরি প্রাপকদের তালিকায় নাম রয়েছে, তৃণমূল পরিচালিত বারাসত 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ঈশা হক সর্দারের ছেলে মহম্মদ নাজিবুল্লাহর (TMC Leader Son Named in SSC Illegal Upper Primary Job Recipients list) ৷ সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন যে 952 জন বেআইনি চাকরি প্রাপকদের তালিকা প্রকাশ করেছেন ৷ সেই তালিকার একেবারে নিচের দিকে 908 নম্বরে নাম রয়েছে ওই তৃণমূল নেতার ছেলের ৷

অভিযোগ তৃণমূল নেতা ঈশা হক সরদার নিজের প্রভাব খাটিয়ে বেআইনিভাবে ছেলেকে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন ৷ যদিও, অন‍্যান‍্য চাকরি প্রাপক মতো মহম্মদ নাজিবুল্লাহর চাকরিও শেষ পর্যন্ত খোয়া যেতে বসেছে হাইকোর্টের নির্দেশে ৷ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে বারাসত 1 নম্বর ব্লক এলাকায় ৷ আর এই বিতর্কে লেগেছে রাজনীতির রং ৷ এই ইস্যুতে শাসকদলকে নিশানা করতেও ছাড়েনি বিরোধী শিবির ৷ তবে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পালটা চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেতা ঈশা হক সর্দার ৷

দীর্ঘদিন ধরেই বারাসত 1 নম্বর ব্লকে শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত ঈশা হক সর্দার ৷ আগে দত্তপুকুরের তৃণমূল পরিচালিত কোটরা পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন তিনি ৷ বর্তমানে বারাসত 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা ৷ তাঁর বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, দুই ছেলে এবং এক মেয়ে । দত্তপুকুরের পানশিলা এলাকায় বাড়ি ঈশা হক সর্দারের ৷ একতলার ছিমছাম, সাজানো গোছানো বাড়ি ৷ মহম্মদ নাজিবুল্লাহ হলেন ঈশা হকের বড় ছেলে ৷

জানা গিয়েছে, 2016 সালের আপার প্রাইমারির টেট পরীক্ষায় বসেছিলেন নাজিবুল্লাহ ৷ এসএসসি-র প্রকাশিত ওএমআর শিটে একদিকে যেমন তাঁর পরীক্ষার রোল নম্বর, ভেন্যু কোড উল্লেখ রয়েছে ৷ অন‍্যদিকে, তেমনই তিনি আপার প্রাইমারির টেট পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছেন, সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে ৷ অভিযোগ, সেই পরীক্ষায় তিনি অনুত্তীর্ণ হলেও ওএমআর শিট বিকৃত করে বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল নেতার ছেলে মহম্মদ নাজিমুল্লাকে ৷

আরও পড়ুন: কল্যাণময়ের জামিন মামলার শুনানিতে সিবিআইয়ের উপর ক্ষোভ প্রকাশ হাইকোর্টের

নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পর তিনি দক্ষিণ 24 পরগনার সোনারপুরের একটি উচ্চ-প্রাথমিক স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক পদে যোগদানও করেন ৷ 2020 সালের শেষের দিকে স্কুলের চাকরিতে যোগ দেন ৷ প্রায় 2 বছরের বেশি সময় ধরে সেই স্কুলেই কর্মরত নাজিবুল্লাহ ৷ তবে, আদালতের রায়ে শেষে চাকরি যেতে বসেছে তাঁর ৷

এই বিষয়ে নাজিবুল্লাহর কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও, তাঁর বাবা বারাসত 1 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশের ব্যাপারে কিছু বলব না ৷ তবে, এটুকু বলতে পারি আমার ছেলের চাকরিতে কোনও প্রভাব খাটানোর বিষয় নেই ৷ বরং ও পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ায় আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আরটিআই করে নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছিলাম ৷ সেই নিয়োগপত্র নিয়েই ছেলে যোগ দিয়েছিল স্কুলের চাকরিতে ৷ যেহেতু সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন ৷ তাই বিরোধীরা একজোট হয়ে আমার পরিবারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে ৷ এসব নিয়ে এতটুকু বিচলিত নই আমি ৷ আইনি প্রক্রিয়ায় এর মোকাবিলা করব ৷’’

তবে, তৃণমূল নেতা যে দাবি করুন না কেন, বিরোধীরা তাঁকে আক্রমণ করতে ছাড়ছে না ৷ এই বিষয়ে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মিত্র বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে রসাতলে পাঠিয়েছে ৷ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ৷ আমি যতদূর জেনেছি ওই তৃণমূল নেতার ছেলের শিক্ষক পদে চাকরি পাওয়ার কোনও যোগ্যতা নেই ৷ তা সত্ত্বেও স্থানীয় সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে তৃণমূল নেতার ছেলের চাকরি করে দিয়েছেন ৷ আমরা চাই ওই তৃণমূল নেতার ছেলে যতদিন শিক্ষকের চাকরি করেছেন, তাঁর সমস্ত বেতন ফেরতের ব্যবস্থা করা হোক ৷ সেই সঙ্গে তদন্ত করে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ও সাংসদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নিক প্রশাসন ৷’’

Last Updated : Dec 26, 2022, 9:08 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.