বারাসত, 16 অক্টোবর: "সবাই রাজ হতে চাইছেন। কিছু মানুষ দলের নীতি অনুশাসন মানতে চাইছেন না। তাঁদের জন্য দলকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।" দলীয় কোন্দল নিয়ে এবার মুখ খুললেন বারাসতের তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) তথা অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী (Chiranjeet Chakraborty)। রবিবার উত্তর 24 পরগনার বামনগাছিতে দলের বিজয়ী সম্মিলনী কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি। সেখানেই এমন বিস্ফোরক মন্তব্য তারকা বিধায়কের গলায় ৷
এদিন বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে চিরঞ্জিৎ বলেন, "কয়েকজন জন্য বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হচ্ছে দলকে। সবাই রাজা হতে চাইছেন। কেউ নীতি মানতে চাইছেন না। এটাই হচ্ছে সমস্যা। যারা নীতি মানতে চাইছেন না তাঁদের মধ্যেই এগুলো (দুর্নীতি) হচ্ছে। ইডি তাঁদের পিছনেই দৌড়বে। রাজা যে হতে চাইছে না, যেমন আমি। ইডি আর সিবিআইয়ের সঙ্গে কালকে আমি ফোনে কথা বলতে পারি। ডাকতে পারি। বলতে পারি আমার বাড়িতে তাঁরা যেন আসুক। বাড়িতে এলে মিষ্টি খাওয়াব তাঁদের। তারপরও যে ইডি, সিবিআই আসবে না, সেই বিষয়ে আমি নিশ্চিত।"
তৃণমূলের একটা বড় অংশই যে দুর্নীতির মধ্যে নেই তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলের এই তারকা বিধায়ক। এই বিষয়ে দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়ে চিরঞ্জিৎ বলেন, "অযথা কোনও সমস্যায় যুক্ত হবেন না। একটু ভালো থাকলেই কোনও অসুবিধায় পড়তে হবে না। এতে সমস্যাও এড়ানো যাবে।" শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের সূত্র ধরে শনিবারই বারাসতের বাসিন্দা তাপস মণ্ডলের বাড়িতে ম্যারাথন তল্লাশি চালিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। সে বিষয়েও এদিন মুখ খুলেছেন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক।
আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষকে দু'টাকার গুন্ডা বলে কটাক্ষ সোহমের
চিরঞ্জিতের কথায়, "ইডি শিকড়ের খোঁজে বারাসতে এসেছিল। কিন্তু আমার বারাসতে কোনও কলঙ্ক নেই।" তাপস মণ্ডলের বাড়িতে ইডির হানা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "ইডি তো তার কাজ করবেই। এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে, ইডি বারাসতের জন্য আসেনি। এসেছিল একটা কানেকশনে। যার জন্য এসেছিল তার কিছু সম্পত্তি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।"
দুর্নীতি প্রসঙ্গে চিরঞ্জিৎ বলেন, "চালে দু-চারটে কাঁকড় এমনিতেই থাকে। তা বলে চালটা খাওয়া ছেড় দেব, তা তো হয় না। চাল তো খেতেই হবে। সেদ্ধ করে।" কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে এদিন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক বলেন, "ওদের হাতে দু'টো রিভলবার রয়েছে। যার নাম ইডি এবং সিবিআই। আমাদের হাতে একটা লাঠি আছে। যার নাম সিআইডি। তাই, লাঠি দিয়ে ওদের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব নয়।"
অন্যদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড হোক কিংবা কয়লা, গরুপাচার-কাণ্ড। তার কোনও প্রভাব আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়বে না বলে এদিন দাবি করেছেন তিনি। চিরঞ্জিতের মতে, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কাজের প্রতি আবারও আস্থা রাখবে বাংলার মানুষ।" কোনটা সাদা এবং কোনটা কালো। তা নিয়েও দলীয় নেতৃত্ব নজর রাখছেন বলে বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক ।
আরও পড়ুন: বাড়িতে তল্লাশি অভিযান ! মণীশ সিসোদিয়াকে তলব সিবিআইয়ের