বসিরহাট, 28 অগস্ট : বিস্ফোরক দিয়ে চেন্নাইয়ের (Chennai) মন্দির উড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্তের অভিযোগে এক সন্দেহভাজন জঙ্গিকে পাকড়াও করল বিএসএফ (BSF) । উত্তর 24 পরগনার বসিরহাটের (Bashirhat) ঘোজাডাঙা সীমান্ত থেকে শুক্রবার আটক করা হয় জাহাঙ্গির বিশ্বাস নামে ওই সন্দেহভাজন জঙ্গিকে । পরে বসিরহাট থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হলে গ্রেফতার করা হয় তাকে ।
সূত্রের খবর, চেন্নাই থেকে পালিয়ে বাংলাদেশি ওই যুবক গা ঢাকা দিয়েছিল বসিরহাটের সীমান্তবর্তী এলাকায় । সেখান থেকে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালানোর ছক ছিল তার । কিন্তু এনআইএ-র (NIA) চেন্নাই ইউনিটের কাছ থেকে আগাম সেই খবর পৌঁছে যায় বিএসএফের 153 নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানদের কাছে । ফলে আগে থেকেই এই বিষয়ে সতর্ক ছিলেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা । এরপরই ঘোজাডাঙা সীমান্তে ওই বাংলাদেশির গতিবিধি দেখে সন্দেহ হওয়ায় পাকড়াও করা হয় তাকে ।
আরও পড়ুন : Haroa Robbery : ডাকাতির ছক বানচাল, হাড়োয়া পুলিশের জালে 4 দুষ্কৃতী
জানা গিয়েছে যে বছর ছাব্বিশের জাহাঙ্গিরের বাড়ি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার নওগাঁ পূর্বপাড়ায় । প্রায় আট বছর আগে চোরাপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল সে । এরপর তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে আত্মগোপন করে থাকছিল ওই বাংলাদেশি যুবক ।
সম্প্রতি চেন্নাই শহরের একটি মন্দির উড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্তের তথ্য পেয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠেন এনআইএ-র আধিকারিকরা । তাঁরা জানতে পারেন, মন্দির ওড়ানোর চক্রান্তে চেন্নাইয়ের হিজবুত তাহিরের স্থানীয় কয়েকজন জঙ্গির সঙ্গে একদল বাংলাদেশিকে নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন : House Wife Death : বধূ হত্যায় অভিযুক্ত বিএসএফে কর্মরত স্বামী-সহ চার, গ্রেফতার শ্বশুর, শাশুড়ি
সেই তথ্য হাতে আসতেই টিমের দুই বাংলাদেশি সদস্যকে গ্রেফতার করেন এনআইএ-র চেন্নাই ইউনিটের আধিকারিকরা । তাদের জেরা করেই উঠে আসে জাহাঙ্গিরের নাম । এরপরই তাকে গ্রেফতার করতে উঠেপড়ে লাগে এনআইএ । কিন্তু তার আগেই চেন্নাই থেকে পালিয়ে সীমান্ত শহর বসিরহাটে গা ঢাকা দেয় ওই বাংলাদেশি যুবক । সেখান থেকে ঘোজাডাঙা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালানোর ছক কষেছিল সে । সেই খবর জানানো হয় বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে ।
এনআইএ-র কাছ থেকে আগাম সেই খবর পেয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা ওত পেতে বসেছিলেন জাহাঙ্গিরকে হাতেনাতে ধরতে । সেই মতো এদিন সন্ধ্যায় প্রথমে ওই যুবককে আটক, পরে গ্রেফতার করা হয় তাকে । রাতেই ধৃত জাহাঙ্গিরকে জেরা করতে কলকাতা ইউনিটের এনআইএ-র একটি দল বসিরহাট থানায় যায় বলে খবর সূত্রের ।
আরও পড়ুন : Afghanistan : আফগানিস্তান থেকে বাড়ি ফিরলেন গোপালনগরের তিন যুবক, খুশির হাওয়া পরিবারে
এদিকে এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত যুবক আইএস মতাদর্শে বিশ্বাসী জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহিরের হয়ে কাজ করলেও আদতে জাহাঙ্গির জেএমবি-র সঙ্গে যুক্ত । সম্প্রতি চেন্নাইকে ঘিরে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন প্রান্তে আল কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট (একিউআইএস), হিজবুত তাহির এমনকি জেএমবি-র মতো জঙ্গিরা বিস্তার শুরু করেছে । বিভিন্ন নাশকতার ছক রূপায়ণের চেষ্টাও করছে তারা । সেই তথ্য পেয়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করে এনআইএ-র চেন্নাই ইউনিট । সোশ্যাল মিডিয়ায় হিংসাত্মক জেহাদি বীজ বপন করার কারিগরদের একে একে গ্রেফতার করা হয় । তখনই জানতে পারা যায় যে মন্দির ওড়ানোর চক্রান্তের কথা । আর তাতেই নাম উঠে আসে জাহাঙ্গিরের ।
আরও পড়ুন : Haroa Robbery : ডাকাতির ছক বানচাল, হাড়োয়া পুলিশের জালে 4 দুষ্কৃতী
অন্যদিকে, পুলিশ হেফাজতে থাকা ওই সন্দেহভাজন জঙ্গিকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিজেদের হেফাজতে নিতে কলকাতায় আসছে এনআইএ-র চেন্নাই ইউনিটের একটি দল । সূত্র মারফত এমনই জানা গিয়েছে ।