গোপালনগর, 13 নভেম্বর : তৃণমূলের কোনও নেতা যদি গুন্ডামি বা দাদাগিরি করতে আসে, তাহলে তার হাত-পা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে আমার কাছে আসবেন। মামলা হলে আমি দেখে নেব। প্রকাশ্য জনসভায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের এমনই নিদান দিলেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। পাশাপাশি তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আলোরানি সরকারকে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, "তোমার ওই শরীর নিয়ে তুমি তোমার এলাকায় ফিরে যেতে পারবে না।" পাল্টা স্বপন মজুমদারকে হুমকি দিয়ে আলোরানি সরকার জানালেন, আসুক মারধর করতে। আমরা দেখে নেব ।
কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রল-ডিজেলের দাম কমালেও রাজ্য সরকার কেন কমাচ্ছে না? প্রতিবাদে শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপালনগর থানার নহাটা বাজারে এক প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেই প্রতিবাদ মঞ্চকেই রাজনৈতিক হিংসা চরিতার্থ করার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিলেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক ৷ স্বপন মজুমদার এদিন বলেন, "করোনা পরিস্থিতিতে আমরা সঙ্ঘবদ্ধ হতে পারিনি। নইলে দেখিয়ে দিতাম এখানে কোনও দাদাগিরি-মস্তানি চলবে না।" এরপর দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, "যদি কোনও তৃণমূল নেতা দাদাগিরি-মস্তানি করতে আসে তাহলে তার হাত-পা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে আমার আছে আসবেন। কেস হলে আমি ছাড়িয়ে আনব।"
পাশাপাশি তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আলোরানি সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "বাংলাদেশ থেকে ওনার (আলোরানি) স্বামী ওনাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ভারতে আসার পরে যেখানে ছিলেন সেখানে লাথি খেয়ে বনগাঁয় এসেছেন। এখানে এসে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে এবং এলাকার মানুষের মধ্যে বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসের বাতাবরণ ছড়াচ্ছেন। হাত-পা ভেঙে নেব বলছেন।" এরপর আলোরানিকে হুমকির সুরে তিনি বলেন, "আলোরানি তোমার এত শক্তি কোথা থেকে আসে। তোমাকে আমি সাবধান করে দিতে চাই। আমার একজন কার্যকর্তার গায়ে যদি আর একবার হাত পড়ে বা মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা কর তবে তোমার ওই শরীর আস্ত নিয়ে তুমি তোমার এলাকায় যেতে পারবে না।"
আরও পড়ুন : আর ফিল্মস্টার নয়, পৌরভোটে একনিষ্ঠ কর্মীদেরই প্রার্থী চান দিলীপ
প্রত্যুত্তরে আলোরানি সরকার বলেন, "এটা একটা হাসির ব্যাপার। বিজেপিতে আর কোনও কর্মী আছে বলে আমার মনে হয় না। সামান্য কিছু থাকলেও থাকতে পারে। বিগত দিনে হাজার-হাজার বিজেপি কর্মী আমদের দলে যোগদান করেছে। ছিটেফোঁটা যা আছে আমরা নেব না।" স্বপন মজুমদারকে পাল্টা দিয়ে তিনি বলেন, "কে কাকে মারধোর করবে, আসুক মারধোর করতে। সেটা আমরা দেখে নিতে পারব। আইন আছে, আদালত আছে। শেষ কথা সেখানে হবে। উনি গায়ের জোরে মস্তানি করে অনেক কথা বলতে পারেন। কারণ উনি এমন একজন আসামী ৷ সোনা পাচার করে গুয়াহাটিতে ধরা পড়েছিলেন। এমন মানুষের মুখে এর থেকে ভাল কথা আর কী হতে পারে।"
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাখির চোখ মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ। বলা যায় বনগাঁ পুনরুদ্ধারে নেমেছে শাসকদল। একের পর এক বিজেপি কর্মী-সমর্থক ও নেতাদের নিজেদের দলে যোগদান করিয়েছে তারা। এমতাবস্থায় কিছুটা দ্বিধাবিভক্ত বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তাদের বাড়তি অক্সিজেন যোগাতেই এমন বেলাগাম মন্তব্য করছেন বিজেপি বিধায়ক, মত রাজনৈতিক মহলের।