বারাসত, 4 নভেম্বর: একদিকে হাতজোড় করে রোগীর পরিবারের একজন তৃণমূল সাংসদের সামনে হাসপাতালে মশার উৎপাত কমানোর কাতর আবেদন করছেন । অন্যদিকে সাংসদ সেদিকে না-তাকিয়ে ফের সুপারের ঘরের দিকে হাঁটা দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রোগীর পরিজনেরা । বৃহস্পতিবার বিকেলে এমনই দুটি ভিন্ন ঘটনায় কার্যত সরগরম হয়ে ওঠে বারাসত হাসপাতাল চত্বর (Anger over Dengue Among Hospital Patients) ।
তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার (Kakoli Ghosh Dastidar) এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এতটাই চরমে ওঠে যে একসময় বিষয়টির হস্তক্ষেপ করতে আসরে নামতে দেখা যায় বারাসত থানার আইসি দীপঙ্কর ভট্টাচার্যকে। যদিও তাতেও রোগীর পরিজনের ক্ষোভ এতটুকু কমেনি । শেষে মশার উৎপাত এবং ডেঙ্গির পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে একপ্রকার সাধারণ মানুষের ঘাড়েই দায় চাপিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কাকলি ঘোষ দস্তিদার ।
জানা গিয়েছে, মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো এবং পঠন-পাঠন নিয়ে এদিন বিকেলে রোগী কল্যাণ সমিতির এক বৈঠক আয়োজিত হয় বারাসত হাসপাতালে সুপারের ঘরে । সেই বৈঠকেই হাজির ছিলেন তৃণমূলের চিকিৎসক সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার । এছাড়াও বৈঠকে সামিল হয়েছিলেন হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডল, পৌরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রশাসনের আধিকারিকরা । বৈঠক শেষে সুপারকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল সাংসদ হাসপাতাল চত্বরেই পরিকাঠামোর কাজ খতিয়ে দেখছিলেন । সেই সময় সাংসদকে কাছে পেয়ে আচমকাই হাসপাতাল চত্বরে মশার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় হরিপদ মাইতি নামে এক রোগীর পরিজনকে । রীতিমতো সাংসদের দিকে হাত জোড় করে তাঁকে বলতে দেখা যায়, "দিদি হাসপাতাল চত্বরে মশার উৎপাত দিনদিন বাড়ছে । কিছু একটা করুন । নইলে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে আমাদেরকেই না হাসপাতালে ভরতি হতে হয় ৷"
আরও পড়ুন: চলতি বছরে রেকর্ড ডেঙ্গি সংক্রমণ, ভয় ধরাচ্ছে কলকাতার পরিসংখ্যান
হরিপদবাবুর এই অনুরোধের সঙ্গে তাল মেলাতে দেখা যায় অন্যান্য রোগীর পরিজনদেরও । স্বভাবতই যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে যান রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান । যদিও সেসব কথার কোনও পাত্তা না-দিয়ে হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে আলোচনা করতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে । একসময় সুপারের ঘরের দিকে তিনি হাঁটা দেন বলে অভিযোগ । এই ঘটনায় দৃশ্যতই ক্ষোভ উগড়ে রোগীর পরিজনদের মধ্যে ।
এই নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে ক্ষোভও উগরে দেন তাঁরা । জানান, উনি সাধারণ মানুষের জনপ্রতিনিধি । মানুষের অভাব অভিযোগের কথা শোনা ওনার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে । তা সত্ত্বেও উনি কোনও কথা না-শুনে চলে গেলেন । আপনারই দেখে আসুন হাসপাতালের ড্রেনগুলি কীভাবে অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে । এমন পরিবেশে মশাবাহিত রোগের বাড়বাড়ন্ত তো বাড়বেই ৷"