বারাসত, 4 মে: দীর্ঘদিন ধরে ময়লা, আবর্জনা, মাটি ফেলার ফলে পুকুরের অধিকাংশই বুজে গিয়েছে ৷ উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসতের একটি পুকুর এইভাবে ভরাট হয়েছে। অথচ পুকুর পুনরুদ্ধারের কোনও উদ্যোগ পৌরসভা কিংবা প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ । উপরন্তু জমির মালিক ও পৌরসভা একে অপরের উপর দায় চাপিয়ে রেহাই পেতে চাইছে ৷
বারাসত পৌরসভার 31 নম্বর ওয়ার্ডের হৃদয়পুর স্টেশন রোড । রাস্তার পাশেই 84 শতক এলাকাজুড়ে বিশাল একটি পুকুর ছিল একসময় । সেই পুকুরেই এলাকার লোকজন একসময় স্নান করতেন । বৃষ্টি হলেই এলাকার জমা জল সহজেই গিয়ে মিশত পুকুরের সঙ্গে । ফলে, জল যন্ত্রণার হাত থেকেও মিলত রেহাই । পুকুর-সহ জমির 84 শতক অংশের মধ্যে 28 শতক জমি, কয়েক বছর আগে কিনেছিলেন ব্যবসায়ী সঞ্জীব দত্ত । সেই 28 শতক জমি (প্রায় 18 কাঠা)-র পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে পড়ে ছিল অবহেলিত অবস্থায় । সেখানেই নোংরা ও আবর্জনা ফেলতে ফেলতে ভরাট হয়ে যায় বলে অভিযোগ । বর্তমানে পুকুরের কোনও অস্তিত্বই নেই । বুজিয়ে ফেলা পুকুরের অংশের মধ্যেই বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে এমনভাবে ঘিরে দেওয়া হয়েছে । ঘটনায় রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী ।
এই বিষয়ে ভাস্কর চক্রবর্তী নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "গোটাটাই পুকুর ছিল এখানে । সেই পুকুরে আমরাও একসময় স্নান করতাম । সাঁতার কাটতাম । সেই পুকুর ভরাট হতে দেখে খারাপ লাগছে । এটা দেখা উচিত ছিল প্রশাসনের । রাজনৈতিক ভয়ে সেভাবে এতদিন মুখ খুলতে পারেনি আমরা । এখন মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছি । পুকুর বাঁচাতে চেষ্টা হয়েছিল ঠিকই । কিন্তু তা আর করা যায়নি ।"
এদিকে, যার বিরুদ্ধে পুকুর বুজিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে সেই জমির মালিক সঞ্জীব দত্ত বলেন, "এটা পুকুর নয় । গোটাটাই বাস্তু জমি । তার রেকর্ড এবং তথ্য রয়েছে আমাদের কাছে । প্রশাসন দেখতে চাইলে দেখিয়ে দেব । আর পুকুর ভরাট করার চেষ্টা কখনও করিনি ।"
যদিও,জমির মালিকের অভিযোগ উড়িয়ে পৌরসভার পৌর পারিষদ সৌমেন আচার্য বলেন,"সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা । পৌরসভা কখনও অন্যের জায়গায় গিয়ে নোংরা,আবর্জনা ফেলে না । কারণ,পৌরসভার নিজস্ব ডাম্পিং গ্রাউন্ড রয়েছে । তা নিয়ে সাময়িক জটিলতা তৈরি হলেও আপাতত তার সমস্যা মিটে গিয়েছে । এটা ভালো বলতে পারবে স্থানীয় কাউন্সিলর ।"
আরও পড়ুন: বেআইনিভাবে পুকুর ভরাট করে সেই জায়গায় চলছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবসা
অপরদিকে, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাম কাউন্সিলর শুক্লা ঘোষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনিও জমির মালিকের উপর দোষ চাপিয়েছেন ।তাঁর কথায়,"পৌরসভা কেন ওখানে নোংরা, আবর্জনা ফেলতে যাবে! উনিই বেআইনি কাজ করে পৌরসভার ঘাড়ে দায় ঠেলতে চাইছেন । বিষয়টি নজরে আসার পরই পৌরসভার চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি । তবে,এখনও কোনও সদুত্তর মেলেনি । পুকুর ভরাট রুখতে বদ্ধপরিকর আমরা ।"