কলকাতা, 16 জানুয়ারি : ফের রাজ্যপালকে আক্রমণ করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় । রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, "আচার্য হিসেবে রাজ্যপালের যা ভূমিকা তা আমরা এই রাজ্যে কখনও দেখিনি । আর এরকম একটা ধ্বংসাত্মক আচরণও আগে দেখা যায়নি ।"
13 জানুয়ারি উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন রাজ্যপাল । সেই বৈঠকে একজন উপাচার্যও যোগ দেননি । কিন্তু, ওই দিনই তৃণমূলের একটি অনুষ্ঠানে এক উপাচার্যকে দেখা যায় । শুরু হয় জল্পনা । এই নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, "তৃণমূলের অনুষ্ঠান ছিল এটা একেবারেই ভুল । এটা স্টোরি তৈরি করার জন্য ভালো । আপনি যদি দেখেন, ওই অনুষ্ঠানে ধরনা মঞ্চের পুরোটায় দর্শক ছিল । ওটা একটা প্রতিবাদের সভা । লেখা ছিল নো NRC, নো CAA, নো NPR । এই যে সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন বিশিষ্ট লোক বলছেন, কাগজ দেখাব না । তাহলে কী ওঁরাও কোনও দলের হয়ে বলছেন? তা তো না । সকলে BJP-র বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে লড়ছেন । কয়েকজন এসেছিলেন, একটা পর্ষদ না কি পরিষদ গঠিত হয়েছে উপাচার্যদের । তাঁরা আমার কাছে এসেছিলেন দেখা করতে চায় বলে । আমি বলেছিলাম না, আমি এখানে বসে আছি । আমি এটা করতে পারব না । এতে তো কোনও অন্যায় নেই । আমি রাজ্যপালের সমর্থক না পার্থ চ্যাটার্জির সমর্থক এটা এই লড়াই নয় । রাজ্যপালের যা ভূমিকা আচার্য হিসেবে, তা আমরা এই রাজ্যে কোনওদিন দেখিনি । এমন একটা ধ্বংসাত্মক আচরণ আমরা কোনওদিন দেখিনি ।"
ডিসেম্বরে পাশ হওয়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যপাল কোনওভাবেই উপাচার্যদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন না । ফলে 13 জানুয়ারি রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত না থাকার কারণ হিসেবে এই আইনকেই দেখিয়েছেন উপাচার্যরা । এক্ষেত্রে রাজ্যপালরা আইন ভেঙেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে । এবিষয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমরা শুধু সরকারের আইন অনুযায়ী চলব । দরকারে আরও কঠোর হব রাজ্যপালের ব্যাপারে । রাজ্যপালের ভূমিকা এখানে ভিজ়িটরের মতো । জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে গেলে ব্যবস্থা নেওয়াই হবে ।"
প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে বা সরকারি কোনও অনুষ্ঠানে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া অসাংবিধানিক । পার্থবাবু বলেন, "এক উপাচার্য একটা অনুষ্ঠানে গেছেন, সেটা নিয়ে অভিযোগ করছেন । কিন্তু কত অসাংবিধানিক কাজ হয়, তা তো দেখেন না । রাজ্যপাল জনসংযোগের জন্য এখানে এসেছেন মাত্র । আপনারা তো কোনওদিন প্রশ্নই করলেন না কোনও প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে বা সরকারি মিটিংয়ে অন্য একজন থাকবে কেন । আমি ব্যক্তিগতভাবে দু'জনের প্রতিই শ্রদ্ধাশীল । কিন্তু স্ত্রীকে নিয়ে সরকারি মিটিংয়ে যাওয়া তো অসাংবিধানিক । এমন কখনও পূর্বের কোনও রাজ্যপালকেই করতে দেখিনি ।"
উনি একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তরের উপর । এই অভিযোগ তুলে পার্থবাবু আরও বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে বাদ দিয়ে উনি শিক্ষাদপ্তরের আচার্য হবেন সেটা কী হয় ? এর আগেও কেশরিনাথ ত্রিপাঠী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বসেছিলেন । কিন্তু সেই বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন । শিক্ষা দপ্তরের প্রতিনিধিরা ছিলেন । আমরা তো সেদিন না বলিনি । উনি তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটা শিখণ্ডি হচ্ছেন । উনি কী বুঝতে পারছেন না? আর ওঁকে একটু বাংলা শিখতে হবে । বাংলায় আসবেন, হিন্দি-ইংরেজিতে কথা বলবেন তা তো হয় না । উদ্ভট কথা যদি রাজ্যপাল বলেন, তাহলে তো লোকে হাসবে । নিজেকে হাস্যকর বানাচ্ছেন কেন ?"