বেলঘরিয়া, 26 এপ্রিল : নেশামুক্তি কেন্দ্রে যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। যার জেরে তাণ্ডব, ভাঙচুর, বিক্ষোভে তপ্ত বেলঘরিয়া (a youth is beaten to death at a drug rehabilitation center) । পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে নামল র্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্স।
মৃত যুবকের নাম সুমন সর্দার (22) ৷ তাঁর বাড়ি বাগুইআটির কেষ্টপুরে। নেশার কারণে অস্বাভাবিক আচরণ করতেন তিনি। কয়েকদিন আগে তাই পরিবারের লোকেরা বেলঘরিয়ার ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে তাঁকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছিলেন ৷ জানা গিয়েছে, পাঁচ নম্বর যতীনদাস নগরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলত এই নেশামুক্তি কেন্দ্রটি। একদিকে রাখা হত ছেলেদের। অন্যদিকে রাখা হত মহিলাদের। অভিযোগ, নেশামুক্তি কেন্দ্রের আড়ালে বেআইনি কাজকর্ম চলছিল সেখানে। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে ঘটেছে বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। ফলে, আগে থেকেই নেশামুক্তি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ ছিল স্থানীয়দের।
সেই ক্ষোভেই ঘৃতাহুতি হয় যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায়। ঘটনা ঘিরে এদিন রীতিমতো ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় যতীনদাস নগর এলাকায়। নেশামুক্তি কেন্দ্রে তালা ঝোলানো দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মৃত যুবকের পরিবার ও এলাকার লোকজন।
আরও পড়ুন : Khardaha Bomb Blast : খড়দায় বোমা ফেটে আহত 1, উদ্ধার 6টি বোমা
বড় হাতুড়ি নিয়ে এসে তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে রীতিমতো তাণ্ডব চালানো হয় সেখানে। ভিতরের সমস্ত কিছু তছনছ করেই শুধু ক্ষান্ত হননি হামলাকারীরা। নেশামুক্তি কেন্দ্রের সামনে দাঁড় করানো একের পর এক গাড়ির কাচ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ এলে তাঁদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবারের লোকজন। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তা বুঝতে পেরে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স। শেষে,পুলিশের উপস্থিতিতে নেশামুক্তি কেন্দ্রের ভিতরে আটকে থাকা রোগীদের বের করে আনা হয় একে একে। এরপরই ধীরে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ হয় পুলিশের বিশাল বাহিনী।
এই বিষয়ে নিহত যুবকের মা রিঙ্কু রায় (সর্দার) বলেন,"গত শুক্রবার রাতে ছেলেকে বেলঘরিয়ার ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছিলাম। সেন্টারের তরফে বলা হয়েছিল 45 দিন ওকে রাখতে হবে সেখানে। এই সময়কালে ওর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে না, এমনও নিদান দেওয়া হয়েছিল নেশামুক্তি কেন্দ্রের তরফে। তা সত্ত্বেও মাঝে মধ্যে ফোন করে ছেলের খোঁজখবর নিতাম। বলা হত সে সুস্থ রয়েছে। আজ ভোরের দিকে ফোন করে বলা হয়, ছেলে অস্বাভাবিক আচরণ করছে। তাড়াতাড়ি চলে আসুন। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে যাওয়া হলে বলা হয় ছেলে মারা গিয়েছে। কীভাবে এটা সম্ভব? আমাদের ধারণা, ওকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই" ৷
আরও পড়ুন : MP mine collapse : মধ্যপ্রদেশে খনিতে ধস, মৃত্যু 2 মহিলার
বেলঘরিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় নেশামুক্তি কেন্দ্রের বাড়ির মালিককে আটক করা হয়েছে। পলাতকদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। এটি খুন না দুর্ঘটনা,তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই পরিষ্কার হবে। ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।