বসিরহাট, 13 মে : উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য সেফ হোম চালু হল বসিরহাটে । বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে বসিরহাটের ভ্যাবলা পলিটেকনিক কলেজে চালু হয় 60 শয্যার সেফ হোম । উদ্বোধন করেন বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক ও বিশিষ্ট চিকিৎসক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় । হাজির ছিলেন বসিরহাটের এসডিও মৌসম মুখোপাধ্যায়, স্থানীয় পৌরসভার প্রশাসক তপন সরকার, বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিক ও চিকিৎসক শ্যামলকুমার বিশ্বাস-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ । বসিরহাট ছাড়াও এদিন হাড়োয়া এবং মিনাখাঁতে-ও সেফ হোম চালু করা হয় প্রশাসনের তরফে ।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঁচ এসে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গেও । প্রতিদিনই এই রাজ্যে বাড়ছে সংক্রমণ । ক্রমশ লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর তালিকাও । সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে কলকাতা এবং উত্তর 24 পরগনা জেলা সবথেকে মাথাব্যথার কারণ প্রশাসনের কাছে । তবে বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার ছবিটাও একেবারে আশাব্যঞ্জক নয় । এই মুহূর্তে সেখানে করোনার অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজারের কাছাকাছি । প্রতিদিনই শতাধিক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন । এই সমস্ত রোগীদের অধিকাংশই উপসর্গহীন ।
করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি করার সময় যেহেতু হাসপাতালে ঠিকমতো বেড মিলছে না, সেহেতু উপসর্গহীন রোগীদের হোম আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে । কিন্তু অনেকের বাড়িতে ঘরের অপ্রতুলতা থাকায় তা নিয়ে তৈরী হচ্ছে সমস্যা । সেই সমস্যা মেটাতে এবং সংক্রমণ ঠেকাতে জেলায় জেলায় সেফ হোম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন । যা এদিন দেখা গেল বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার ক্ষেত্রেও ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার উদ্যোগে এদিন মোট পাঁচটি সেফ হোম চালু করা হয়েছে । যার মধ্যে বসিরহাটের শহর ও গ্রামে তিনটি, হাড়োয়া এবং মিনাখাঁয় একটি করে সেফ হোম তৈরি করা হয়েছে । পাঁচটি সেফ হোমে সবমিলিয়ে 180 টি শয্যা থাকছে । এছাড়া পর্যাপ্ত অক্সিজেন, খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্সের সুবন্দোবস্ত থাকছে প্রতিটি সেফ হোমে ।
এই বিষয়ে বসিরহাট জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামলকুমার বিশ্বাস বলেন, "উপসর্গহীন যে সমস্ত রোগীদের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করার অসুবিধে রয়েছে, তাঁদের সুবিধার জন্যই এই পাঁচটি সেফ হোম চালু হয়েছে ৷" আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে আগামিদিনে সেফ হোমের শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্টের উপর ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিত নয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
এদিকে, বসিরহাটের বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকেও যাতে সেফ হোম হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে । এবিষয়ে প্রশাসনকে সবরকমভাবে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের সংখ্যালঘু নেতা বাকিবিল্লা মোল্লা । সেই সঙ্গে সরকারি নির্দেশ মেনে পবিত্র ঈদের নামাজ পড়ারও আবেদন জানিয়েছেন তিনি ।