বিধাননগর, 20 জানুয়ারি: কল সেন্টারের আড়ালে আর্থিক প্রতারণা ও হাওয়ালা কারবার চালানোর অভিযোগে 21 জনকে গ্রেফতার করা হল (Arrest in Hawala Case) ৷ ধৃতদের মধ্য়ে ছ'জন মহিলা ৷ বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার (Bidhannagar Cyber Crime Police Station) পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে ৷ সেইসঙ্গে, একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে লক্ষাধিক টাকা এবং বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেছে তারা ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের ইপি ব্লকের গ্লবসিন ক্রিস্টাল টাওয়ার বিল্ডিংয়ের ছ'তলায় 'রেনেসাঁ ইনফো ওয়েব প্রাইভেট লিমিটেড' নামে একটি ভুয়ো কল সেন্টার চালু করেছিলেন ইকো পার্ক এলাকার বাসিন্দা পরাগ কুণ্ডু ৷ সেই ভুয়ো কল সেন্টার থেকে আমেরিকার বাসিন্দাদের ফোন করা হত ৷ নিজেদের সংশ্লিষ্ট মার্কিন টেলিকম সংস্থার কর্মী হিসাবে পরিচয় দিতেন রেনেসাঁ ইনফো ওয়েবের কর্মীরা ৷ তারপর মার্কিন ক্লায়েন্টদের ইন্টারনেটের স্পিড বাড়ানো এবং ম্যালওয়্যার অ্যাটাক থেকে তাঁদের ডিভাইস সুরক্ষিত রাখার টোপ দিতেন তাঁরা ৷ বলা হত, নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে ওই মার্কিন ক্লায়েন্টদের অ্যান্টিভাইরাস সাপোর্ট দেওয়া হবে ৷ এই ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বহু বিদেশি ৷ পরিষেবার ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের বিদেশি মুদ্রা পারিশ্রমিক হিসাবে আদায় করতেন রেনেসাঁ ইনফো ওয়েবের কর্মীরা ৷
আরও পড়ুন: অভিনব প্রতারণার ফাঁদ ! গ্রেফতার 3 যুবক, উদ্ধার শতাধিক প্যান-এটিএম কার্ড
বিষয়টি নিয়ে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানানো হয় ৷ ঘটনার তদন্তে নেমে নির্দিষ্ট কিছু সূত্র হাতে পায় পুলিশ ৷ সেই সূত্র ধরেই বৃহস্পতিবার রাতে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে অভিযান চালানো হয় ৷ সেখানকার সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে সংস্থার দুই ডিরেক্টর পরাগ কুণ্ডু এবং সঞ্জয়চন্দ্র দাস-সহ মোট 21 জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই চক্রটি বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করার সময় তাঁদের আমেরিকারই একটি ব্য়াংক অ্য়াকাউন্টে পরিষেবার খরচ জমা দিতে বলত ৷ পরবর্তীতে সেই টাকা হাওয়ালা মাধ্যমে দিল্লির এক ব্যবসায়ীর কাছে পৌঁছত ৷ সেখান থেকে কলকাতার এক ব্যবসায়ীর হাত ঘুরে সেই টাকা এসে পৌঁছত পরাগের কাছে ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় সেক্টর ফাইভের অফিস থেকে 2 লক্ষ 15 হাজার টাকা এবং পরাগের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আরও 3 লক্ষ 67 হাজার টাকা নগদে উদ্ধার করা হয়েছে ৷ এছাড়াও, 42টি কম্পিউটার, 23টি স্মার্ট ফোন, 26টি ডেবিট কার্ড, তিনটি হার্ড ডিস্ক, 16টি চেক বুক, চারটি ব্যাংকের পাসবুক, চারটি প্যান কার্ড, দু'টি রাউটার-সহ বিপুল তথ্যভাণ্ডার উদ্ধার করা হয়েছে ৷ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বাকিদের সন্ধান পেতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ ৷