বসিরহাট, 11 ডিসেম্বর: জয়নগর, ভাটপাড়ার পর এবার শ্যুট আউট বসিরহাটে। রবিবার রাত সাড়ে 9টা নাগাদ মিষ্টির দোকানে চলল গুলি । গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নবীন কুমার দাস নামে বছর 45-এর এক ক্রেতা। সেই সময় মিষ্টি কিনতে গিয়েছিলেন তিনি । তখনই দুষ্কৃতীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন । রক্তাক্ত অবস্থায় প্রাণ বাঁচাতে মিষ্টির দোকানের ভিতরে আশ্রয় নিয়েছিলেন । এরপর দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গেলে তাঁকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে । পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় উত্তর কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে । হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর কোমরের উপর দিকে গুলি লেগেছে । অপর একটি গুলি তাঁর পা-ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছে । ফলে, তাঁর শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট সঙ্কটজনক । ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বচসার সূত্রপাত মিষ্টির স্বাদ না পাওয়াকে কেন্দ্র করে । প্রথমে মিষ্টির দোকানের মালিক তাপস মণ্ডলকে মারধর করে চারজন । বাধা দিতে গেলে আক্রান্ত হন দোকানের কর্মচারীরা । তারপর সেখান থেকে ওই চারজন বেরিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ বাদেই ফের ওই চার দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এসে চড়াও হয় বলে অভিযোগ । তখনই মালিককে না পেয়ে দোকান লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা । তাতেই গুলিবিদ্ধ হন নবীন কুমার দাস নামে মিষ্টি কিনতে আসা ওই ব্যক্তি ।
জানা গিয়েছে, বসিরহাটের টাকি রোডের ধারে কলেজপাড়ায় মিষ্টির দোকান রয়েছে তাপস মণ্ডলের । প্রতিদিনের মতো রবিবার রাতেও বেশ ভিড় ছিল এলাকা. । স্বভাবতই গুলি চালানোর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় ।আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানপাটও বন্ধ করে দেন । খবর পেয়ে বসিরহাট জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা তড়িঘড়ি ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে ।
এই বিষয়ে দোকান মালিক তাপস মণ্ডল বলেন, "ওরা চারজন দোকানে এলেও একজনই টেবিলে বসেছিল মিষ্টি খেতে । এরপর সে রসগোল্লার অর্ডার দেয় । অর্ডার মতো এক কর্মচারী তা খেতেও দেয় তাঁকে । কিন্তু মুখে দিতেই সে বলতে থাকে এটা কি রসগোল্লা ! তোমরা লোক ঠকিয়ে ব্যবসা করছ ? এই নিয়ে ঝামেলা বেঁধে যায় । তখন আমি শুধু বলেছি, দাদা একটু আসতে কথা বলুন । এরপর কোনও কথা না বলেই মারতে শুরু করে আমাকে । কর্মচারীরা ঠেকাতে এলে ওদেরও মারধর করে ৷ এরপর চলেও যায় তারা । কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবার বন্দুক নিয়ে এসে গুলি চালায় । সবমিলিয়ে চার থেকে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে ৷"
এদিকে, এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি নবীন কুমার দাস হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে বলেন, "ওষুধ কেনার পর মিষ্টি কিনতে ঢুকেছিলাম দোকানে । তখন ওরা হঠাৎ করে বলতে থাকে সেই লোকটা না ! আমি কাউকে চিনিও না । কিছু বোঝার আগেই গুলি চালাল । কারও সঙ্গে আমার কোনও ঝামেলাও হয়নি । হঠাৎ পিস্তল বের করে গুলি চালিয়ে দিল । 2 বার গুলি চালিয়েছে । আমি এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত । কী কারণে গুলি চালানো হল, তা বুঝে উঠতে পারছি না ।"
অন্যদিকে, মিষ্টির দোকানের সিসিটিভি ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা হার্ডডিস্ক নিয়ে যাওয়ায় তদন্তে নেমে রীতিমতো হোঁচট খেতে হচ্ছে বসিরহাট থানার পুলিশকে । তবে, এর সঙ্গে ভোলা নামে স্থানীয় এক কুখ্যাত দুষ্কৃতীর নাম উঠে আসায় তাঁর খোঁজেও শুরু হয়েছে তল্লাশি । যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
আরও পড়ুন :
1 পানীয় জল নিয়ে বিবাদ, ভাটপাড়ায় দাদার হাতে খুন ভাই
2 15 দিন পরেও হদিশ নেই তৃণমূল কর্মী খুনে সার্প শ্যুটারদের, প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা
3 ভিকি যাদব খুন নিয়ে নাম না করে অর্জুনকে নিশানা তৃণমূল বিধায়কের, পালটা জবাব সাংসদ-শিবিরের