বারাসত, 25 জুন : "জমি মালিকরা স্বেচ্ছায় যদি জমি দিতে চান, তাহলে টাটা বা যে কোন শিল্পগোষ্ঠী সেখানে কারখানা করুক । আমরা তাদের স্বাগত জানাব ।" সিঙ্গুর প্রসঙ্গে আজ এই মন্তব্য করলেন সেখানকার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ।
2006 সালে বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য । শুরু হয়েছিল জমি অধিগ্রহণের কাজ । কিন্তু, শুরু থেকেই অধিগ্রহণ নিয়ে শুরু হয় সমস্যা । অনেকেই জমি দিতে অস্বীকার করেন । অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে তৎকালীন বিরোধীনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শুরু হয় জমি আন্দোলন । রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জোর করে জমি অধিগ্রহণের অভিযোগ তুলে ধরনায় বসেন তৃণমূলনেত্রী । ধারাবাহিক আন্দোলনের জেরে সিঙ্গুর থেকে প্রকল্প তুলে গুজরাতে নিয়ে যায় টাটা গোষ্ঠী । প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী 2011 সালে ক্ষমতায় এসে কৃষকদের জমি ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ।
আজ বারাসতের বিশেষ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে আসেন সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য । সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিঙ্গুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "জমি মালিকরা স্বেচ্ছায় যদি জমি দিতে চান থাকেন, তাহলে টাটা বা যে কোন শিল্পগোষ্ঠী সেখানে (সিঙ্গুর) কারখানা করুক । আমরা তাদের স্বাগত জানাব ।" পাশাপাশি, দলের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি বলেন, "জোর করে জমি অধিগ্রহণ চলবে না । বাম আমলে সিঙ্গুরে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, তাই আমরা আন্দোলনে নেমেছিলাম । তৎকালীন রাজ্যপাল গোপাল কৃষ্ণ গান্ধির নেতৃত্বে চুক্তি হয়েছিল । কিন্তু, বাম সরকার তা অগ্রাহ্য করে চুক্তি করেছিল ।"
আপনারা কি সেই চুক্তি প্রকাশ্যে আনার দাবি জানাচ্ছেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, "চুক্তি প্রকাশ্যে আনাটা কোনও ব্যাপার নয়। সুপ্রিম কোর্ট তো সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণকে অবৈধ বলেই দিয়েছে । তাই, এখন চুক্তি প্রকাশ্যে আনার কোনও বিষয় থাকতে পারে না । আমাদের সরকার ইচ্ছুক, অনিচ্ছুক প্রত্যেকের জমি ফিরিয়ে দিয়েছে । শিল্প স্থাপন হোক । তবে, তা জোর করে নয় ।"
জমি ফিরিয়ে দিলেও এখনও সিঙ্গুরের জমি চাষযোগ্য হয়নি বলে কৃষকদের অভিযোগ । সাংবাদিকদের এ কথার উত্তরে রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, "কে বলল আপনাকে যে ফেরত দেওয়া জমি চাষের উপযোগী হয়নি ! আপনারা গিয়ে কি দেখে এসেছেন ? ওই জমিতে তো দিব্যি কৃষকরা চাষ করছেন ।"