নানুর, 14 নভেম্বর : নানুর থানার অন্তর্গত বঙ্গছত্র গ্রাম। ওই গ্রামে একটিই মাত্র কালীপুজো হয়। 500 বছরের প্রাচীন সেই পুজো। বঙ্গছত্র গ্রামে একটি কালীপুজো হওয়ার কারণ হিসেবে লোকমুখে প্রচলিত যে ওই গ্রামে অন্য কোনও কালীপুজো করলে তার ফল শুভ হয় না। বঙ্গছত্র গ্রামের আশপাশে আরও অনেক গ্রাম রয়েছে । তার মধ্যে রয়েছে, কুলে, নওদা, জলুদি, পালুন্দি, নওনগর, হাটসেরান্দি, রামকৃষ্ণপুর সহ প্রভৃতি গ্রাম। তবে সবকটি গ্রামের বেশির ভাগটাই মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। তান্ত্রিক মতে এক ঘণ্টার মধ্য়ে পুজো সম্পন্ন করেন পুরোহিত।
কথিত রয়েছে এই কালীপুজো প্রথম করেন চন্দ্রামুখী দেবী। দীর্ঘ সাধনার পর তিনি এই পুজো প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর থেকে প্রথা মেনে চলে আসছে এই পুজো। আজও তালপাতার পুঁথিতে লেখা মন্ত্র উচ্চারণ করে কালীর আরাধনা করা হয় এই মন্দিরে। তবে এই পুজোর নির্দষ্ট কিছু নিয়ম আছে। এই পুজোতে আরোতি করা হয় না। হয় না আবাহন, ঘট ভরা, যজ্ঞ, স্তোত্রপাঠ। মাটির প্রতিমায় রং পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুজো শুরু হয়।এক ঘণ্টা ধরে চলে পুজো। তারপর ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয় প্রসাদ। এই পুজো জাগ্রত বলেই গ্রামবাসীদের একাংশের ধারনা।
অমাবস্যা তিথিতে কালীপুজোর দিন পুজো দেখতে ভিড় জমান আশপাশের সমস্ত গ্রামের মানুষ। মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও প্রথা মেনে কালীর পুজো দেন। মনস্কামনা পূরণের জন্য মানত করেন নানুরের বঙ্গছত্র গ্রামের কালী মন্দিরে। সম্প্রীতির এক অনবদ্য নজির বলে মনে করেন এলাকার মানুষজন। মানতকারীদের অনেকেই সাধ্য মতো প্রতিমাকে সোনা, রুপার গহনা চড়ান।
পুজোর প্রধান পুরোহিত সাধনকুমার ঠাকুর বলেন, "মায়ের পুজোর গরিমা রয়েছে। সকল ধর্মের মানুষ কালীর আরাধনা করেন। মায়ের পুজোয় কোনও ভেদাভেদ নেই।" মন্দিরের আরেক পুরোহিত প্রভাস অধিকারী বলেন, “তান্ত্রিক মতে এক ঘণ্টায় শেষ হয় এই পুজো। তারপর হয় প্রসাদ বিতরণ। আশেপাশের গ্রামের সকল মানুষ এখানে পুজো দেন। জাত ধর্ম নিয়ে মায়ের মন্দিরে কোনও ভেদাভেদ নেই। সকল ধর্মের মানুষ এখানে পুজো দেন।”